× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

করমজল বন্য প্রাণী প্রজননকেন্দ্র

জুলিয়েট-পিলপিলের বয়স হয়েছে, প্রজননে শঙ্কা

আবুল হাসান, মোংলা (বাগেরহাট)

প্রকাশ : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৬:৩১ পিএম

আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৮:৫২ পিএম

বাগরেহাটের মোংলায় করমজল বন্য প্রাণী প্রজননকেন্দ্রের কুমির। প্রবা ফটো

বাগরেহাটের মোংলায় করমজল বন্য প্রাণী প্রজননকেন্দ্রের কুমির। প্রবা ফটো

সুন্দরবনের নোনা পানির কুমির রক্ষায় ২০০২ সালে গড়ে তোলা হয় করমজল কুমির প্রজননকেন্দ্র। অথচ গত চার বছর ধরে সেখানে কুমির উৎপাদন বন্ধ। এ অবস্থায় অনেকেই কুমির প্রজননকেন্দ্রটি বিলুপ্তির আশঙ্কা করছেন। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুটি মা কুমির জুলিয়েট ও পিলপিল এবং পুরুষ কুমির রোমিওকে নিয়ে যাত্রা শুরু করে কেন্দ্রটি। ডিম থেকে বাচ্চা এবং তা লালন-পালন করে কিছুটা বড় হলে ছেড়ে দেওয়া হয় নদীতে। তবে রোমিও, জুলিয়েট আর পিলপিলের এখন বয়স হয়েছে। কমে গেছে প্রজননক্ষমতা। এতে প্রভাব পড়েছে উৎপাদনেও। বনবিভাগ বলছে, কেন্দ্রের অপ্রাপ্ত কুমিরে প্রজননক্ষমতা হতে ১২ বছর লাগবে। তখন ডিম পাড়া শুরু করলে কুমিরের বাচ্চা পাওয়া যাবে।

পূর্ব সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজননকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, ‘গত চার বছরে এখানে কুমির থেকে কোনো ডিম আসেনি। যে কারণে বাচ্চাও হয়নি। সম্ভবত কুমিরের বয়স হয়ে যাওয়ায় এই অবস্থা হয়েছে। তবে কুমিরের প্রজনন ধারাবাহিক রক্ষা করতে করমজলের ভেতরে আরেকটি পুকুরে আরও ছয়টি নতুন কুমির ছাড়া হয়েছে, যার বয়স সাত থেকে আট বছর হয়েছে। এই ছয়টির মধ্যে দুটি পুরুষ এবং চারটি নারী কুমির রয়েছে। এগুলো ১৪/১৫ বছর হয়ে গেলে ডিম পাওয়া যাবে। তারপর বাচ্চা। বর্তমানে করমজলে ১০০টি কুমিরের বাচ্চা রয়েছে।’

বনবিভাগ সুত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় সিডরে ভেসে গেছিল ৭৫টি কুমির। এ ছাড়া বনের চিতা বিড়াল মেরে ফেলেছে ৬২টি বাচ্চা। খাদ্যে পর্যাপ্ত বরাদ্দ ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। তবে প্রজনন বাড়াতে পারলে করমজল থেকে কুমির রপ্তানির সম্ভাবনা বাড়তে পারে। সুত্র আরও জানায়, সুন্দরবনের দুবলারচরে ১৯৯৭ সালে লবণ পানি প্রজাতির কুমির ধরা পড়ার পর স্বপ্ন দেখা শুরু করে সুন্দরবন বিভাগ। তারা তখন কুমিরের বংশ বৃদ্ধির প্রাথমিক কাজ শুরু করে। এরপর ২০০২ সালে চাঁদপাই রেঞ্জের করমজলে আট একর বনাঞ্চলে কুমির প্রজননকেন্দ্র চালু করে। বন বিভাগের তত্ত্বাবধায়নে পরিচালিত এই প্রজনন কেন্দ্রের জন্য সেসময় ব্যয় ধরা হয় ২৩ লাখ টাকা।

বন কর্মকর্তা আজাদ কবির বলেন, ২০০২ সালে প্রজনন কেন্দ্রটি আনুষ্ঠানিক যাত্র শুরু করলেও বাচ্চা দেয় তিন বছর পর ২০০৫ সালে। ২০০৭ সালে ১৫ নভেম্বর সুপার সাইক্লোন সিডরে এই কেন্দ্রের ৭৫টি কুমিরকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। এরই মধ্যে ২০৬টি বড় কুমিরের বাচ্চা সুন্দরবনে অবমুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দুই রাতে এই প্রজনন কেন্দ্রের শেডের নেট ভেঙে একটি চিতা বিড়াল ৬২টি কুমিরের বাচ্চা মেরে ফেলে ও খেয়ে ফেলে। এরপরের বছর করমজল কেন্দ্রের দুটি মা কুমির জুলিয়েট ও পিলপিল ৯১টি ডিম পাড়লেও তা থেকে একটিও বাচ্চা ফোটেনি।

সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘সুন্দরবনে প্রাকৃতিকভাবে কুমির বাড়ানোর জন্য আমাদের কিছু উঁচু টিলা তৈরি করতে হবে। যেখানে কুমির এসে ডিম পারতে পারে এবং কুমিরের ডিম যেন অন্য প্রাণী না খেতে পারে; সেগুলো যেন সুন্দরভাবে বাচ্চা ফুটাতে পারে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ছাড়া কুমির বিশেষজ্ঞ ও প্রয়োজনীয় খাদ্যে বরাদ্দ বাড়ালে করমজল প্রজননকেন্দ্র থেকে কুমির রপ্তানি সম্ভব।’

বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার এমপি জানান, সুন্দরবনের করমজলে কুমির প্রজনন বাড়াতে এবং কুমিরের বিলুপ্ত ঠেকাতে কাজ করছে তার মন্ত্রণালয়। এজন্য পর্যাপ্ত ওষুধ, খাদ্যের বরাদ্দ বাড়ানোসহ দক্ষ জনবল ও সরকারিভাবে প্রশিক্ষিত কুমির বিশেষজ্ঞ ও বন্যপ্রাণী চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হবে। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা