× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

নগর

১৭ খাল বুঝিয়ে দিতে চায় সিডিএ, চসিকের অনীহা

সুবল বড়ুয়া, চট্টগ্রাম

প্রকাশ : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১২:১৮ পিএম

সিডিএর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রাম মহানগরীর চাক্তাই খালের মুখে বসানো হয়েছে অত্যাধুনিক স্লুইসগেট। এর মাধ্যমে কর্ণফুলীর জোয়ার-ভাটার পানি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ছবি : নিপুন কুমার দে

সিডিএর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রাম মহানগরীর চাক্তাই খালের মুখে বসানো হয়েছে অত্যাধুনিক স্লুইসগেট। এর মাধ্যমে কর্ণফুলীর জোয়ার-ভাটার পানি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ছবি : নিপুন কুমার দে

চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান মেগা প্রকল্পের আওতাভুক্ত ৩৬টি খালের মধ্যে ১৭টির সংস্কারকাজ শেষ করেছে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড। আগামী সপ্তাহ থেকে খালগুলো চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (সিডিএ) বুঝিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা সেনাবাহিনী। সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুতসহ যাবতীয় প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। পরে সিডিএ খালগুলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে (চসিক) বুঝিয়ে দেবে। তবে প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি শেষ হওয়ার আগে দায়িত্ব নিতে অনীহা প্রকাশ করছে চসিক।

জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. শাহ্ আলী জানান, মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের অধীনে থাকা ৩৬টি খালের মধ্যে ১৭টি খাল পরিষ্কার, সম্প্রসারণ ও খনন করে গভীরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এসব খালে ৩১ হাজার ৫৩৩ মিটার রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। পাশাপাশি ৩৬টি খাল থেকে প্রায় ২০ লাখ ঘনমিটার মাটি উত্তোলন করা হয়েছে।

তিনি জানান, ১৭টি খালের সংস্কারকাজ শেষ। এখন খালগুলো সিডিএর মাধ্যমে সিটি করপোরেশনকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। বুঝিয়ে দেওয়ার সময় খালগুলোর ড্রইং, ডিজাইন ও ম্যাপসহ নানা প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস দিতে হবে। সেগুলো প্রসিডিউর করা হচ্ছে। পাঁচটি করে পর্যায়ক্রমে এসব খাল বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

আগামী সপ্তাহেই এই কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা জানিয়ে প্রকল্প পরিচালক বলেন, ৩৬টি খালের পাড়ে মোট ৮৫ দশমিক ৬৮ কিলোমিটারের মধ্যে ১৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ, ৪৮টি ব্রিজের মধ্যে ৩৫টি ব্রিজের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। এ ছাড়া ৪৬টি কালভার্ট এবং ৫টি স্লুইসগেট নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের মোট ৭৬ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে।

এদিকে চসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পটি এখনও শেষ হয়নি। প্রকল্পের মাঝপথে বা পিসিআর (প্রকল্প সমাপ্ত প্রতিবেদন) না হওয়া পর্যন্ত খাল বুঝে নেওয়ার সুযোগ নেই। প্রকল্পের অধীনে থাকা ৩৬টি খালের কাজ পুরোপুরি শেষ হলে তখনই প্রকল্পটি বুঝিয়ে নেওয়া হবে।’ 

এ প্রসঙ্গে সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, ‘প্রকল্পের অধীনে থাকা ৩৬টি খালের মধ্যে ১৭টি খালের সংস্কারকাজ সম্পূর্ণ শেষ। আরও তিনটি খালের সংস্কারকাজও শেষ পর্যায়ে। এসব খাল রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পর্যায়ক্রমে চসিককে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।’ ১৭টি খালের দায়িত্ব নেওয়া হবে নাÑ চসিকের এমন বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার। চসিক যদি দায়িত্ব না নেয়, তাহলে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প নিয়ে গঠিত টেকনিক্যাল কমিটি যে সিদ্ধান্ত দেবে, তাই হবে।’

প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের তথ্যানুযায়ী, ১৭টি খালের মধ্যে ১৫নং ঘাট খালে ১ হাজার ৩৫০ মিটার রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। বাকি খালগুলোর মধ্যে নয়ারহাট খালে ৮২৭ দশমিক ৮০ মিটার, ফিরিঙ্গি বাজার খালে ১ হাজার ৮২৬ মিটার, টেকপাড়া খালে ১ হাজার ৬৯৪ মিটার, সদরঘাট-১ খালে ৬২৯ মিটার, সদরঘাট-২ খালে ৬২১ মিটার, মোগলটুলী খালে ৬১৪ মিটার, উত্তরা খালে ২ হাজার ৪৮০ মিটার, রাজাখালী খাল-২-এ ২ হাজার ৭৯৩ মিটার, রাজাখালী খাল-৩-এ ২ হাজার ৬০০ মিটার, মরিয়ম বিবি খালে ১ হাজার ৭০৮ মিটার, কলাবাগিচা খালে ৬২৯ মিটার, রামপুর খালে ১ হাজার ৪৭৭ মিটার, আজব বাহার খালে ১ হাজার ৩৪৮ মিটার, গুপ্তখালে ৩ হাজার ৮৭০ মিটার, রুবি সিমেন্ট খালে ৮০৬ দশমিক ৩০ মিটার এবং ডোমখালী খালে ৬ হাজার ২৬০ মিটার দীর্ঘ রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণকাজ করা হয়েছে।

সিডিএ সূত্রে জানা যায়, ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সিডিএর নেওয়া ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিয়ন্ত্রণে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ প্রকল্পটি ২০১৬ সালের ৯ আগস্ট শর্ত সাপেক্ষে একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সিডিএর সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়। পরে একই বছরের ২৮ এপ্রিল থেকে সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কাজ শুরু করে। প্রকল্পটি শুরুতে ২০২০ সালের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কোভিড পরিস্থিতিসহ নানা কারণে তা শেষ হয়নি। পরে দুই দফা মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। জমি অধিগ্রহণে তিনগুণ ব্যয় বৃদ্ধিসহ নানা কারণে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা থেকে ব্যয় বেড়ে ঠেকেছে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকায়।

প্রকল্পের অধীনে ৩৬টি খালের মাটি অপসারণ, ৬ হাজার ৫১৬ কাঠা ভূমি অধিগ্রহণ, নতুন ৮৫ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ, ১৭৬ কিলোমিটার আরসিসি রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ, ৪৮টি পিসি গার্ডার ব্রিজ প্রতিস্থাপন, বন্যার পানি সংরক্ষণে তিনটি জলাধার, ছয়টি আরসিসি কালভার্ট প্রতিস্থাপন, পাঁচটি টাইডাল রেগুলেটর, ৪২টি সিল্টট্রেপ স্থাপন, ২০০টি ক্রস ড্রেন কালভার্ট নির্মাণের কথা রয়েছে। এ ছাড়া ১৫ দশমিক ৫০ কিলোমিটার রোড সাইড ড্রেনের সম্প্রসারণ, ৮৮০টি স্ট্রিট লাইট স্থাপন এবং ৯২টি ইউটিলিটি লাইন স্থানান্তর ও ২ হাজার বৈদ্যুতিক পুল স্থানান্তর করা হবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা