খুলনা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২১:০৩ পিএম
আপডেট : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২১:৪১ পিএম
ফাইল ফটো
খুলনা জেলা প্রশাসকের স্বাক্ষর জাল করে ৪০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন রাজস্ব বিভাগের
চতুর্থ শ্রেণির কমর্চারী সোহেল আরমান। জেলা প্রশাসন পরিচালিত সৈয়দপুর ট্রাস্ট এস্টেটের
ব্যাংক হিসাব থেকে ১১টি চেকে ২০২২ সালের ৭ এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর পযর্ন্ত
এ পরিমাণ টাকা তুলে নেওয়া হয়। গত ৪ সেপ্টেম্বর ব্যাংক হিসাব পরীক্ষণের সময় অসংগতি
ধরা পড়ে। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খুলনা সদর থানায় তিনটি জিডি করা হয়। বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুকুল কুমার মৈত্র এসব তথ্য জানিয়েছেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুকুল কুমার মৈত্র জানান, খুলনায় দানবীর হাজী
মুহাম্মদ মুহসীনের সব সম্পদ সরকারের কাছে হস্তান্তর করে সৈয়দপুর ট্রাস্ট নামে একটি
ট্রাস্ট গঠন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক পদাধিকার বলে এ ট্রাস্টের প্রধান। জেলা প্রশাসকের
দপ্তরের রাজস্ব বিভাগ ট্রাস্টের সম্পদ দেখাশোনা ও ইজারা দেওয়া এবং হিসাব-নিকাশ রক্ষণাবেক্ষণ
করে থাকে। ট্রাস্টের সম্পত্তির ইজারা থেকে আদায়কৃত অর্থ দিয়ে গরিব শিক্ষার্থীদের বৃত্তি,
দুঃস্থদের সহযোগিতাসহ সেবামূলক কাজ করা হয়। ট্রাস্টের তহবিল পরিচালনার জন্য নগরীর
এনআরবিসি ও ইসলামী ব্যাংকে দুটি হিসাব রয়েছে। চলতি বছরের ৪ সেপ্টেম্বর ট্রাস্টের ব্যাংক
হিসাব পরীক্ষণের সময় ব্যাপক অসংগতি ধরা পড়ে। এ সময় হিসাব ও তহবিল যাচাইয়ের পর দেখা
যায়, জেলা প্রশাসকের স্বাক্ষর জাল করে রাজস্ব বিভাগের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সোহেল
আরমান দুটি ব্যাংক থেকে প্রায় ৪০ লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন। ২০২২ সালের ৭ এপ্রিল থেকে
চলতি বছরের ৪ সেপ্টেম্বর পযর্ন্ত ১১টি চেকের মাধ্যমে তিনি এ টাকা তুলে নিয়েছেন। এরপর
এ টাকার বিষয়ে জানতে সোহেল আরমানকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। তিনি অফিস থেকে পালিয়ে গেছেন।
তিনি আরও জানান, টাকা আত্নসাতের ঘটনায় ৫, ৯ ও ১১ সেপ্টেম্বর খুলনা সদর থানায়
তিনটি জিডি করা হয়েছে। একই সঙ্গে তদন্তে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ইউসুফ আলীকে
প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন
দিতে বলা হয়েছে।
খুলনা সদর থানার ওসি হাসান আল মামুন বলেন, ’জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরকারি
অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় তিনটি জিডি করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের অভিযোগ জিডি হিসেবে গ্রহণ
করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দুদকে পাঠানো হয়েছে।’
খুলনা জেলা দুদকের কর্মকর্তা জানান, মামলা নেওয়ার জন্য প্রধান কার্যালয়ের অনুমতির
প্রয়োজন হয়। যত দ্রুত সম্ভব কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মামলার অনুমতি চেয়ে চিঠি পাঠানো হবে।
জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসিন আরেফীন জানান, ট্রাস্টের ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা আত্মসাতের জন্য তার এবং আগের জেলা প্রশাসকেরও স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে এ ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত, তা বেরিয়ে আসবে। যাদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।