চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশ : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২২:২৮ পিএম
রপ্তানি চালান শুল্কায়নের সময় কাস্টম কর্মকর্তারা বেশ কয়েকটি কার্টন খুলে তাতে ১০ কেজি চাষি ব্র্যান্ডের সুগন্ধি চাল, সাত প্যাকেট বনফুল সেমাই ও ছয় প্যাকেট রাধুনী গুঁড়া মসলা পান। প্রবা ফটো
নমুনার কোড দিয়ে অর্থ পাচারের পর এবার রপ্তানি পোশাকের কার্টনে চাল, সেমাই ও গুঁড়া মসলা পাওয়া গেছে। শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রপ্তানি চালান শুল্কায়নের সময় কাস্টম কর্মকর্তারা বেশ কয়েকটি কার্টন খুলে তাতে ১০ কেজি চাষি ব্র্যান্ডের সুগন্ধি চাল, সাত প্যাকেট বনফুল সেমাই ও ছয় প্যাকেট রাধুনী গুঁড়া মসলা পান। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উপকমিশনার বদরুজ্জামান মুন্সি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রতিদিনের বাংলাদেশকে তিনি বলেন, ‘ওসিএল ডিপোতে তৈরি পোশাক ঘোষণার একটি রপ্তানি চালান শুল্কায়ন করার সময় দৈবচয়নের ভিত্তিতে যাছাই-বাছাইকালে একটি কার্টন খুলে তাতে চাল পাওয়া যায়। পরে সবগুলো কার্টন খুলে তাতে চাল, সেমাই ও গুঁড়া মসলা পাওয়া গেছে। তৈরি পোশাকের চালানে কেন চাল, সেমাই ও গুঁড়া মসলা রাখা হয়েছে, সেটি আমরা খতিয়ে দেখছি।’
বদরুজ্জামান জানান, রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান চালানটিতে ৩ হাজার ২০৩টি টি-শাট ও প্যান্ট থাকার ঘোষণা দিলেও ইনভেন্ট্রি করে তাতে ৩ হাজার ৮৯৩টি তৈরি পোশাক পাওয়া গেছে।
এর আগে নমুনা ঘোষণা দিয়ে তৈরি পোশাক রপ্তানির আড়ালে অর্থ পাচারের সন্ধান পান কাস্টম শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত কর্মকর্তারা। সংস্থাটির তদন্তে উঠে এসেছে নমুনার কোড ব্যবহার করে বেশ কয়েকটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বিদেশে অর্থ পাচার করে আসছে। সর্বশেষ ১০টি চালানে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা পাচারের প্রমাণ পেয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। সংস্থাটি জানিয়েছে, রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো বিল অব এক্সপোর্ট জালিয়াতিপূর্বক অন্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের ইএক্সপি ব্যবহার করে পণ্য রপ্তানি করেছে এবং বিল অব এক্সপোর্টের ২৪ নম্বর কলামে নমুনার কোড ২০ ব্যবহার করে এসব টাকা বিদেশে পাচার করে। ওই ঘটনার পর এখন রপ্তানি পোশাকের চালানে চাল, সেমাই ও গুঁড়া মসলা পাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। কী কারণে এই পণ্যগুলো তৈরি পোশাকের চালানে রাখা হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
কাস্টম কর্মকর্তারা জানান, তৈরি পোশাকের এই চালানটির রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান হচ্ছে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকার জাহানারা ট্রেডিং করপোরেশন। প্রতিষ্ঠানটি ঘোষণা দিয়েছিল, রপ্তানি চালানে ২ হাজার ১০০টি টি-শার্ট ও ১ হাজার ১০৩টি প্যান্ট আছে। কিন্তু ইনভেন্ট্রি করে কাস্টম কর্মকর্তারা রপ্তানি পণ্যের এই চালানে ২২ কার্টনে ১ হাজার ৩৪৮টি টি-শার্ট, ৩৯২ পিস পায়জামা, ১ হাজার ৩৬২ পিস প্যান্ট, ৪৯৬ পিস গালর্স ট্যাংক টপ, ৫১ পিস গাউন, ২৪ পিস ছেলেদের হাফ প্যান্ট, ১১০ পিস ব্রাসহ মোট ৩ হাজার ৮৯৩ পিস তৈরি পোশাক ছিল। এর বাইরে ২২টি কার্টনের মধ্যে ৫ থেকে ৬টিতে ১ কেজি ওজনের ১০ কেজি সুগন্ধি চাল (চাষি ব্র্যান্ড), ২০০ গ্রাম ওজনের ৭ প্যাকেট বনফুল সেমাই, ৪০ গ্রাম ওজনের ৬ প্যাকেট রাধুনী গুঁড়া মসলা এবং ৩০০ গ্রাম পাঁচফোড়ন পাওয়া যায়। এর বাইরে একই চালানে ঘোষণার অতিরিক্ত তৈরি পোশাকও ছিল।