× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বেকারত্ব ঘুচেছে চুইঝালে

তরিকুল ইসলাম মিঠু, যশোর

প্রকাশ : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৯:১৬ এএম

আপডেট : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১০:৫৯ এএম

যশোরের মনিরামপুর উপজেলায় খানপুর চুইঝাল প্রজেক্টে কাজ করছেন এক উদ্যোক্তা। প্রবা ফটো

যশোরের মনিরামপুর উপজেলায় খানপুর চুইঝাল প্রজেক্টে কাজ করছেন এক উদ্যোক্তা। প্রবা ফটো

তখন করোনাকাল। কর্মসংস্থান হারিয়ে অনেকেই ঘরে বসে আছেন। ডিপ্লোমা কৃষিবিদ মাসুদুর রহমান সবুজের হাতেও বলতে গেলে তেমন কোনো কাজ নেই। এরই মধ্যে তিনি খেয়াল করলেন, গোড়া ও শিকড় রেখে চুইঝাল গাছের লতাপাতা সব ফেলে দিচ্ছেন তার বাবা চুইঝাল ব্যবসায়ী হাজী আনসার মোড়ল। তা দেখতে দেখতে হঠাৎ করেই সবুজের মাথায় চুইঝাল চাষের চিন্তা আসে। আর এই চিন্তাকে বাস্তব করে তুলতেই জীবন পাল্টে গেছে পাঁচটি গ্রামের ৭০০-এর মতো বেকার যুবকের। 

এ ঘটনা ঘটেছে যশোরের মনিরামপুর উপজেলার খানপুর, মুন্সি খানপুর, শ্যামকুড়, তেঘরি ও ধলিগাতি নামের পাঁচটি গ্রামে। ‘খানপুর চুইঝাল প্রজেক্ট’ নামের এই উদ্যোগ সাড়া জাগিয়েছে পুরো উপজেলায়। উচ্চশিক্ষিত, অথচ কাজ নেইÑবিশেষত এমন তরুণরাই সম্পৃক্ত এ প্রকল্পে। এ প্রসঙ্গে উদ্যোক্তা মাসুদুর রহমান সবুজ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘বাবার ফেলে দেওয়া ৩০ থেকে ৪০টির মতো চুইঝালের লতা লাগিয়ে প্রজেক্টটি শুরু করেছিলাম। লতা যাতে বেড়ে উঠতে পারে, সেজন্য বিভিন্নজনের আম, সুপারি, কাঁঠাল আর জামগাছ কাজে লাগানোর চুক্তিও করি। এভাবেই এখানে চুইঝালের চাষবাস শুরু হয়।

প্রসঙ্গত দেশের অভ্যন্তরে ও আন্তর্জাতিক বাজারে চুইঝালের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এর দামও অনেক। খুলনা বিভাগসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে এই গুল্মজাতীয় পরগাছাটি একটা জনপ্রিয় মসলা। গরু এবং খাসির মাংস ছাড়াও সব ধরনের রান্না সুস্বাদু করতে এটি ব্যবহার করা হয়।

যেভাবে চলছে প্রকল্প

সবুজ বলেন, তার দেখাদেখি আশপাশের কয়েকটি গ্রামের ৫০ জনের মতো যুবকও চুইঝালের চাষাবাদে এগিয়ে আসেন। এভাবেই শুরু হয় ‘খানপুর চুইঝাল প্রজেক্ট’। সর্বসম্মতভাবে চুক্তির ভিত্তিতে চাষাবাদ করেন তারা। এই চুক্তি অনুযায়ী, চুই বিক্রির লভ্যাংশের ৩০ শতাংশ পাবেন বাগানের প্রায় পাঁচ হাজার বিভিন্ন ধরনের গাছের মালিক, আরও ৩০ শতাংশ পাবেন রক্ষণাবেক্ষণকারীরা, ১০ শতাংশ জমা হবে প্রজেক্ট পরিচালনা ফান্ডে। বাকি ৩০ শতাংশ সমভাবে বণ্টন করে নেবেন প্রজেক্টের সদস্যরা। বর্তমানে এ প্রজেক্টে চুইঝাল গাছের সংখ্যা প্রায় ১৭ হাজার। প্রকল্প দেখাশোনার জন্য রয়েছে ১৩ সদস্যের কমিটি। পর্যায়ক্রমে পুরো উপজেলায় প্রকল্পটি ছড়িয়ে দেওয়ার স্বপ্ন দেখেন তারা।

সংশ্লিষ্টদের অভিমত

চুইঝাল প্রজেক্টের প্রজেক্ট পরিদর্শক মনজুরুল সুমন বলেন, ‘আমরা শিক্ষিত হয়েও চুইঝালের চাষ করছি, এটা নিয়ে অনেকে প্রথমে হাসাহাসি করতেন। কিন্তু এখন সবাই বাহবাই দিচ্ছেন।’

চুইঝাল প্রজেক্টের সদস্য সোহাগ বলেন, ‘চুইঝালের প্রজেক্ট করে আমরা স্বনির্ভর হয়েছি। তবে সরকারি সাহায্য-সহযোগিতা পেলে এ প্রকল্প আরও অনেক দূর এগিয়ে নেওয়া যাবে। কারণ আমরা পুঁজির অভাবে বড় পরিসরে এর চাষ করতে পারছি না। ব্যাংক থেকে সহজ শর্তে লোন পেলে প্রকল্পটি দ্রুত সম্প্রসারণ করা যাবে।’

যশোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার তরফদার বলেন, ‘বাজারে চুইঝালের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। মসলা হিসেবে সুপরিচিত এ কৃষিপণ্যের অর্থনৈতিক সম্ভাবনাও অনেক।’ মনিরামপুরের তরুণরা এ প্রজেক্টের জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতা চাইলে তা করা হবে বলে জানান তিনি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা