রংপুর অফিস
প্রকাশ : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৫:৪৭ পিএম
আপডেট : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৬:৪১ পিএম
রংপুর নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টার মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের নতাকর্মীরা। প্রবা ফটো
তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি না হওয়ায় নদী ভাঙনে
উত্তরের পাঁচ জেলায় বছরে এক লাখ কোটি টাকার সম্পদ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বলে দাবি করেছে
তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ।
আন্তঃদেশীয় ব্যবস্থাপনায় তিস্তা চুক্তি সইসহ অববাহিকাভিত্তিক তিস্তা নদী
ব্যবস্থাপনা গড়ে না তোলা এবং দেশীয় ব্যবস্থাপনায় তিস্তা নদীর মূল প্রবাহে ব্যাপক খনন,
ভাঙন রোধে কার্যকর পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন না হওয়ায় বাংলাদেশ অংশের ১১৫ কিলোমিটার
ব্যাপী তিস্তা নদীর অববাহিকার দুই কোটি মানুষের জীবনে নেমে এসেছে মহাদুর্যোগ।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকার একটি কমিউনিটি সেন্টার মিলনায়তনে
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানী এসব তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি জানান, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ৫৪টি অভিন্ন নদীর মধ্যে রংপুর বিভাগে
রয়েছে ১৮টি। তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে ২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
সঙ্গে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের একটি ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি স্বাক্ষরিত
হয়। কিন্তু ভারতের কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকারের অনৈক্যের কারণে তিস্তা পানিবন্টন
চুক্তি আর আলোর মুখ দেখেনি। এতে শুস্ক মৌসুমে পানির অভাবে তিস্তা নদী মরে মরুভূমিতে
পরিণত হচ্ছে। আর বর্ষায় তিস্তার তীব্র ভাঙনে সরকারি-বেসরকারি সম্পদক, ফসলি জমি, ঘরবাড়ি
সবকিছু নদীর পেটে চলে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরে তিস্তার পানি
চুক্তি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন
কেন জরুরি সে বিষয়টিও তুলে ধরবেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে নজরুল ইসলাম হক্কানী বলেন, শুস্ক মৌসুমে তিস্তার পানি
প্রত্যাহারে তিস্তার শাখা-প্রশাখা ও উপ-নদীগুলো ভরাট, দখল ও তিস্তার সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন
হয়ে পড়ে। ফলে ভূগর্ভস্থ পানির চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় টান পড়েছে ভূগর্ভস্থ পানিতে। নদীর
পানির চাপ না থাকায় সাগরের লোনা পানি দক্ষিণাঞ্চলে ঢুকে পড়ে সেখানকার মৎস চাষ, ফসল
আবাদ ও জীব-বৈচিত্র হুমকির মুখে ফেলেছে। তিস্তা নদীর ভাঙন রোধে আগামী দ্বাদশ জাতীয়
সংসদ নির্বাচনের আগে ধাপে ধাপে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের নেতৃবৃন্দরা
তিস্তা মহাপরিকল্পনা কাজের উদ্বোধনসহ ছয় দফা দাবিতে গোটা সেপ্টেম্বর মাসব্যাপী তিস্তা
তীরের ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা শহরে প্রচারপত্র বিলি, হাট সভা, পথসভা ও সমাবেশের
কর্মসূচী ঘোষণা করেছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শফিয়ার রহমান, জাসদ নেতা সাখাওয়াত হোসেন রাঙ্গা, রংপুর জেলা ওয়াকার্স পাটি সাধারণ সম্পাদক অশোক সরকার, তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সদস্য বখতিয়ার হোসেন শিশির, আকতারুজ্জামানসহ অন্যরা।