শেরপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১১:৫৯ এএম
আপডেট : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১২:০৪ পিএম
পাহাড়ি ঢলে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। প্রবা ফটো
পাহাড়ি ঢলে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ, বকশীগঞ্জ, ইসলামপুর, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ ও সরিষাবাড়ী উপজেলার যমুনার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে দেওয়ানগঞ্জ ও ইসলামপুর উপজেলার ৪০ হাজার মানুষ। তলিয়ে গেছে প্রায় ২ হাজার ৫০০ হেক্টর ফসলি জমি। এ ছাড়াও জেলার বিভিন্ন এলাকায় নদীভাঙনে মানবেতর জীবনযাপন করছে অনেক পরিবার।
সরেজমিনে দেওয়ানগঞ্জে দেখা যায়, উপজেলার চিকাজানী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বড়খাল এলাকায় আবার তীব্র নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। বড়খাল গ্রামের কৃষক তোতা মিয়ার দুটি ঘর গত বৃহস্পতিবার নদীগর্ভে চলে গেছে। তাই তিনি বাকি ঘরটি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। একই গ্রামের সাদিকুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন থেকে যমুনার ভাঙনে অনেক বাড়িঘর নদীতে চলে গেছে। তবু কার্যকর স্থায়ী কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
মাঝিপাড়ার কুদ্দুস আলীর ২০ বিঘা ফসলি জমি যমুনা নদী ভেঙে নিয়ে গেছে। শেষ সম্বল ছিল বাড়ি-ভিটে, সেটাও হুমকির মুখে। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘জিও ব্যাগ দিয়ে সান্ত্বনা নয়, স্থায়ী সমাধান চাই। এদিকে ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে প্রাচীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দেলোয়ার হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়।’
ইসলামপুর উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, যমুনার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে প্লাবিত হয়েছে। এতে আমন ধানের খেত, সবজির আবাদ পানিতে তলিয়ে গেছে। যমুনা নদীর তীরবর্তী মানুষের ঘরে পানি প্রবেশ করেছে। এসব এলাকার অনেক রাস্তাঘাট বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়াও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেতরে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের সংকট।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক আব্দুল মান্নান শনিবার রাতে জানান, শনিবার বিকালে যমুনা নদীর পানি বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। আর এতে জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ ও ইসলামপুর উপজেলার যমুনার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল নতুন করে প্লাবিত না হলেও বেড়েছে পানিবন্দির সংখ্যা।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম জানান, যমুনা নদীর পানি আর বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে দুই-এক দিন স্থিতিশীল থেকে এরপর আবার পানি কমতে শুরু করবে।
জেলা প্রশাসক ইমরান আহমেদ জানান, পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ মজুদ রয়েছে। যেকোনো প্রয়োজনে সরকার জনগণের পাশে থাকবে। এর মধ্যে শুধু ইসলামপুরের জন্য ২৫ মেট্রিক টন চাল, ২ লাখ টাকা এবং গবাদিপশু ও শিশুখাদ্যের জন্য ২ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।