সদরপুর-চরভদ্রাসন (ফরিদপুর) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১১:৩৫ এএম
ফরিদপুরের সদরপুর দিয়ারা নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়নে পদ্মা নদীর বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি। ছবি: সংগৃহীত
ফরিদপুরের সদরপুরের দিয়ারা নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়নে গত এক সপ্তাহে পদ্মায় নদী ভাঙনে প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দুই শতাধিক ঘরবাড়ি বিলীন হয়েছে। উজানের পাহাড়ি ঢল ও প্রবল বর্ষণে ঝুঁকিতে রয়েছে পদ্মা পাড়ের কয়েকশ ঘর, ফসলি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা। সব হারিয়ে ভাঙনকবলিতরা আশ্রয় নিয়েছে স্থানীয় স্কুলঘর ও খোলা মাঠে। সেই সঙ্গে খাদ্য, চিকিৎসা, বিদ্যুৎসহ রয়েছে বিভিন্ন সংকটে।
সরেজমিনে এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ইউনিয়নটির নন্দলাপুর, নুরুদ্দিন সরদারের কান্দি, জহুরুল হক বেপারীর কান্দি ও কুদ্দুস মোল্যার কান্দি গ্রামের প্রায় শতাধিক মানুষ নদী ভাঙনের কবলে পড়েছে। ভাঙন শঙ্কায় পদ্মার পাড় থেকে সরে যাচ্ছে কয়েক হাজার মানুষ।
নন্দলাপুর গ্রামের বাসিন্দা শেখ বেলাল বলেন, ‘গত ২৮ আগস্ট রাত ৯টার দিকে আমাদের গ্রামে প্রথম নদী ভাঙন দেখা দেয়। মুহূর্তেই আমার ও আমার প্রতিবেশীদের বাড়ি ভাঙা শুরু হয়। কোনোরকমে ছেলেমেয়ে, গরু-ছাগল ও ঘরের মালামাল নিয়ে বেরিয়ে আসি। এখন পরিবার নিয়ে খোলা মাঠে আশ্রয় নিয়েছি।’
নুরুদ্দিন সরদার কান্দি গ্রামের ইলিয়াস আলী বলেন, ‘নদীতে আমাদের সব নিয়ে গেছে। এখন কোনো কর্ম না থাকায় পরিবার নিয়ে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছি। এভাবে চলতে থাকলে পরিবার নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে।’
কুদ্দুস মোল্যার কান্দি গ্রামের রহিমা খাতুন জানান, রাতে সন্তানদের নিয়ে ঘুমানোর প্রস্তুতি নেওয়ার সময় এলাকাবাসীর ডাক-চিৎকার শুনে বাইরে এসে দেখি নদীতে সবকিছু বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ঘরের মালামাল সরিয়ে নিতে নিতেই সব শেষ।
নারিকেলবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন বলেন, ইউনিয়নে প্রায় আড়াই শতাধিক মানুষ ভাঙনকবলিত রয়েছে। তাদের নামের তালিকা করে বিভিন্ন সাহায্যের প্রস্তুতি নিয়েছি। ভাঙন রোধে টেকসই বাঁধ নির্মাণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছেও আবেদন করেছি।
সদরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসান মাহমুদ রাসেল বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের নামের তালিকা প্রস্তুতের কাজ চলমান রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দ্রুত ভাঙন প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।