× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বর্জ্যে হার মেনেছে মডেল মসজিদের সৌন্দর্য

শরীফুজ্জামান ফাহিম, সাভার (ঢাকা)

প্রকাশ : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১০:২০ এএম

আপডেট : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১১:০৩ এএম

সাভার মডেল মসজিদের সামনে প্রতিদিন শতাধিক ভ্যানে করে ফেলা হয় পৌরসভার ময়লা। প্রবা ফটো

সাভার মডেল মসজিদের সামনে প্রতিদিন শতাধিক ভ্যানে করে ফেলা হয় পৌরসভার ময়লা। প্রবা ফটো

নামাজ আদায়ের পাশাপাশি, ইসলামি গবেষণা, সংস্কৃতি ও জ্ঞানচর্চার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গড়ে তুলতে দেশের প্রত্যেক উপজেলায় মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই ধারাবাহিকতায় দৃষ্টিনন্দন নকশা ও অপূর্ব নির্মাণশৈলীতে সাভারেও নির্মাণ করা হয়েছে মডেল মসজিদ। কিন্তু মসজিদঘেঁষেই পৌরসভার ময়লার ভাগাড় থাকায় মলিন হচ্ছে মসজিদের মর্যাদা ও সৌন্দর্য। অস্বস্তিকর ও দুর্গন্ধময় পরিবেশে তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরতে হচ্ছে মুসল্লিসহ স্থানীয় জনসাধারণকে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ঢাকা আরিচা মহাসড়কের সাভার বাসস্ট্যান্ডের পাশে রাজালাখ ফার্ম এলাকায় কয়েক একর জায়গা নিয়ে দৃষ্টিনন্দন এ (বি) ক্যাটাগরির তিনতলা বিশিষ্ট মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে। মসজিদঘেঁষে থাকা উপজেলা ভূমি অফিসের ফাঁকা স্থানটি এখন ময়লা-আবর্জনার বিশাল স্তূপ। প্রতিদিন শতাধিক ভ্যান দিয়ে পৌরসভার অপসারিত ময়লা আবর্জনা এনে ফেলা হচ্ছে এই স্থানে। 

মহাসড়কের সঙ্গে দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদে প্রতিদিন শত শত মুসল্লি নামাজ আদায় করে। কিন্তু নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিদের অতিষ্ঠ করে তুলেছে ময়লার দুর্গন্ধ। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ এই স্থানে ময়লা ফেলার কারণে দুর্গন্ধে দূষিত হচ্ছে আশপাশের পরিবেশ। কয়েক বছর ধরে একই স্থানে ময়লা ফেলা হলেও পরিষ্কার করা বা বর্জ্য অপসারণের কোনো উদ্যোগ নেয়নি স্থানীয় প্রশাসন ও পৌরসভা। প্রায় সময় দুর্গন্ধ এত তীব্র হয় যে, মসজিদের ভবনে বসে থাকাও দায় হয়ে যায়। দরজা-জানালা বন্ধ করেও দুর্গন্ধ এড়ানো যায় না। তবে ময়লা ফেলার সঙ্গে প্রভাবশালীরা জড়িত থাকায় কেউই অভিযোগ পর্যন্ত করতে পারছেন না।

জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রতিদিনের বাংলাদেশকে এক পরিচ্ছন্নতাকর্মী বলেন, এখানে পৌরসভার নির্দেশে ময়লা ফেলে পুকুর ভরাট করা হয়। গত তিন বছর আগে এখানে মসজিদ নির্মাণ করা হয়। মসজিদ নির্মাণের পর কিছুদিন বন্ধ থাকলেও স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলের নির্দেশে পুনরায় আবর্জনা ফেলা শুরু হয়েছে। আমাদের কিছু বলার নেই।

নামাজ পড়তে আসা তুহিন আহম্মেদ নামে স্থানীয় এক মুসল্লি জানান, উদ্বোধনের পর থেকে এই মসজিদে নিয়মিত নামাজ আদায় করতাম। কিন্তু ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে নিয়মিত নামাজ আদায় করা কঠিন হয়ে যায়। তাই বাধ্য হয়ে পার্শ্ববর্তী অন্য একটি মসজিদে নামাজ পড়তে হয়। 

মসজিদের পাশের অস্থায়ী দোকানদার মিজানুর রহমান বলেন, আমি এই মসজিদের নিয়মিত মুসল্লি। দীর্ঘদিন ধরে এ পরিস্থিতি দেখছি। এখানে মশা মাছির উৎপাতে বসাও কঠিন। মুখে মাস্ক পরে বা কাপড় পেঁচিয়ে মসজিদে থাকতে হয়। এ বিষয়ে কাউকে অভিযোগ করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে কেউ অভিযোগ করবে না। সবাই ভয় পায়।

মুয়াজ্জিনের দায়িত্বে থাকা ইমাম হাসান বলেন, আবর্জনার কারণে মসজিদের ভেতর অতিরিক্ত সময় বসে থাকা কষ্টকর। এ ছাড়া মশার উৎপাত এত বেশি যে, কয়েল ও স্প্রে দিয়ে কমানো যায় না। খতিব মাওলানা বুলবুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি। তবে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও পরিচালনা পরিষদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। 

পৌর মেয়র আব্দুল গণি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, এটি আসলে আমাদের ডাম্পিং স্টেশন নয়। মূলত সাভারের বাজারের আশপাশে ব্যবসায়ীরা ময়লা আবর্জনা ফেলে রেখে যায়। আমরা প্রতিদিন আমাদের কর্মীদের দিয়ে পরিষ্কার করলেও সন্ধ্যা বেলা আবার ফেলে যায়। আমি নির্দেশনা দিয়েছি ময়লা সরিয়ে নিতে। তারা কাজ শুরু করে দিয়েছে।

সাভার মডেল মসজিদের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজলো নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাজহারুল ইসলাম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, আমরা এর আগেও ময়লা ফেলা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। কিন্তু গভীর রাতে আবার ফেলে যায়। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি স্থায়ীভাবে নিরাপত্তা বেষ্টনী দিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার।

জানা গেছে, গণপূর্ত অধিদপ্তরের আওতাধীন ওই মসজিদ ১৩ কোটি ৪১ লাখ ৮১ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়। আশুলিয়া আওয়ামী লীগ সভাপতির নিজস্ব মালিকানাধীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সনি এন্টারপ্রাইজ নির্মাণকাজের দায়িত্বে ছিল।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা