হোমনা (কুমিল্লা) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২১:২৫ পিএম
প্রতিকী ছবি
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী জন্মের পর ৪৫ দিন পর্যন্ত জন্মনিবন্ধনে কোনো টাকা লাগে না। ৫ বছর পর্যন্ত ২৫ টাকা ও ৫ বছরের ওপর সব বয়সিদের থেকে ৫০ টাকা ফি নেওয়ার নিয়ম। কিন্তু এর কিছুই মানছে না হোমনার চান্দেরচর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি)। জন্মনিবন্ধনের জন্য তাদের ফি দিতে হচ্ছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। বয়স কমাতে বা বাড়াতে নেওয়া হচ্ছে ১ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা। এনআইডি তাদের এখতিয়ারে না থাকলেও সেগুলো করে দিচ্ছে তারা। এর জন্য নেওয়া হচ্ছে ৭ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা।
প্রবাসী-অধ্যুষিত কুমিল্লার বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষকে পাসপোর্ট করতে এনআইডির সঙ্গে জন্মনিবন্ধনও করতে হচ্ছে। এটি বাধ্যতামূলক হওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদের সচিবের শরণাপন্ন হতে হয় তাদের। পরে নির্বাচন অফিসে কাগজপত্র জমা দিয়ে এনআইডি করাতে হয়। যাদের বয়স ১৮ বছরের কম, তাদের পাসপোর্ট করতে অথবা বিয়ের রেজিস্ট্রি করতে জন্মনিবন্ধনে বয়স বাড়াতে ইউপি সচিব বা দালালের সঙ্গে মোটা অঙ্কের চুক্তি করেন অনেকে।
ভুক্তভোগী চান্দেরচর ইউপির ৯ নং ওয়ার্ডের শোভারামপুর গ্রামের আল আমিনের ছেলে মো. ইসমাইল বলেন, ‘জন্মনিবন্ধনসহ এনআইডি করে দেবার জন্য ইউপি সচিব মো. মনির হোসেনকে ৭ হাজার টাকা দিয়েছি। কিন্তু তিন মাস অতিবাহিত হলেও এনআইডি তো দূরের কথা ছবি ওঠাতে সিরিয়ালই পাচ্ছি না। গত বৃহস্পতিবার সচিবের কথামতো অফিসে যোগাযোগ করে জানতে পারি ফাইল জমা হয়েছে কিন্তু অনুমোদন হয়নি। অথচ আমার পরে কাগজপত্র জমা দিয়ে এনআইডি করে নিয়ে গেছে অনেকে।’
অভিযোগের বিষয়ে ইউপি সচিব মনির হোসেন বলেন, ‘সরকারিভাবে এনআইডি বানাতে কোনো টাকা লাগে না। কিন্তু এখন অফিসে টাকা দিতে হয়। টাকা ছাড়া এনআইডি বানানো যায় না। টাকা না দিলে তারা পাঁচ-ছয় মাস কাগজপত্র ফাইলে ফেলে রাখে। এতে জনগণ হয়রানি হয়।’ নির্বাচন অফিসে কাকে টাকা দিতে হয় সে বিষয়ে জানতে চাইলে মনির হোসেন ‘কারও নাম বলা যাবে না’ বলে ফোন কেটে দেন।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হক বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে এনআইডি করার তো প্রশ্নই ওঠে না। জন্মনিবন্ধনে বাড়তি টাকা নেওয়ারও কোনো সুযোগ নেই। এমনটি হয়ে থাকলে ইউএনওর সঙ্গে আলোচনা করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্ষেমালিকা চাকমা বলেন, জন্মসনদ বাবদ অতিরিক্ত অর্থ আদায় করলে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।