বাগমারায় সমাবেশে আওয়ামী নেতারা
রাজশাহী অফিস
প্রকাশ : ৩১ আগস্ট ২০২৩ ২২:৪২ পিএম
আপডেট : ৩১ আগস্ট ২০২৩ ২২:৪২ পিএম
রাজশাহী-৪ আসনের সংসদ সদস্য এনামুল হক। প্রবা ফটো
রাজশাহী-৪ আসনের সংসদ সদস্য এনামুল হকের সদস্য পদ ১০ বছর পিছিয়ে দেখিয়ে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাইয়ে দিয়েছিলেন বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুস সোবহান চৌধুরী। একাজে তিনি তৃণমূল আওয়ামী লীগের সহযোগিতা নিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) এক সমাবেশে সোবহান চৌধুরী নিজেই এ কথা বলেছেন।
জাতীয় শোক দিবস, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা দিবস ও জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়ন সাফল্য আলোচনা- নিয়ে বাগমারার গোয়ালকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বাগমারা উপজেলার তৃণমূল আওয়ামী লীগের ব্যানারে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সেখানে ব্ক্তব্য দেওয়ার সময় সোবহান চৌধুরী সংসদ সদস্য এনামুলের আওয়ামী লীগের সদস্য পদ পাওয়া নিয়ে কথা বলেন।
শুধু সোবহান চৌধুরী নন, সমাবেশজুড়ে বাগমারার আওয়ামী লীগ নেতারা এমপি এনামুল হকের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ও আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজ তার তলানিতে থাকা জনপ্রিয়তার বিষয়ে কথা বলেন।
সোবহান চৌধুরী বলেন, ‘দশ বছর পিছিয়ে তোমাকে (এনামুল হক) আওয়ামী লীগের সদস্য করা হয়েছিল। তৃণমূল থেকে যখন নাম চাইল, আমি তোমার নাম দেওয়ার জন্য বলেছিলাম, কেউ নাম লেখেনি। দশ বছর পিছয়ে তোমাকে আমি সদস্য পদ দেই। তারপর তৃণমূল থেকে তোমার নাম পাঠাই, সেজন্য তুমি মনোনয়ন পাও।’
এমপি এনামুল ছাত্রজীবনে বগুড়া পলিটেকনিকে পড়াকালীন শিবিরের সাথে জড়িত ছিলেন বলে অভিযেগা করেন বাগমারা আওয়ামী লীগের সাবেক এই সভাপতি। সোবহান চৌধুরী আরও বলেন, ‘৫২ বছর ধরে রাজনীতি করতেছি। একটা বারের জন্যও আমাকে নৌকা প্রতীক দেওয়া হয় নাই। আমার কি যোগ্যতা নাই! ওই এনামুল বা তার সাথের কুচক্রী মহল আমাকে উপজেলা নির্বাচন করতে দেয়নি, নৌকা প্রতীক দেয়নি। তাও আমি আওয়ামী লীগে আছি। আমার এক ছেলেকে খুনের আসামি, আরেক ছেলেকে সর্বহারা বানিয়ে র্যাবের মাধ্যমে ক্রসফায়ার দেওয়ার চেষ্টা করে। র্যাব তদন্ত করে আমাকে বলেছে, এনামুল হক এমপি আপনার ছেলের নাম লিখে দিয়েছেন।’
বাগমারার তাহেরপুর পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘এমপি এনামুলের অনিয়ম, দুর্নীতি আর নারী কেলেঙ্কারির কারণে তৃণমূল আওয়ামী লীগ আর তার সঙ্গে নেই। তৃণমূল আওয়ামী লীগ থেকে সে একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বাগমারার জনসাধারণ বুঝে গেছে এমপি এনামুল একজন ধান্দাবাজ। এনামুলের পায়ের নিচে মাটি নাই। তার বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে।’
প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি টেনে তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক তার কাছে গিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী তাকে বলেছিলেন- তুমি তিনবার নৌকা প্রতীক নিয়ে এমপি নির্বাচিত হয়েছ অথচ এখনও আওয়ামী লীগ হতে পারনি। তাই এবার মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়ে আমরা ভাবব।’
শোক সভায় বক্তব্য দেন রাজশাহী বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও মানবসম্পদ উপকমিটির সদস্য অধ্যাপক পি এম সফিকুল ইসলাম, বাগমারা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জাকিরুল ইসলাম সান্টু। এই তিনজনসহ সোবহান চৌধুরী ও আবুল কালাম আজাদ তাদের বক্তব্যে উল্লেখ করেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা নৌকা প্রতীক চাইবেন। তাদের যদি না-ও দেওয়া হয়, তাতে দুঃখ নেই। তারা বলেন, এমপি এনামুল ছাড়া যাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে, তার হয়েই সবাই নির্বাচনী প্রচারে নামবেন।
গোয়ালকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আলমগীর সরকার সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন।