× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

প্যারাবনের হাজারো বাইন গাছ কেটে জেটি বানানোর প্রকল্প

নুপা আলম, কক্সবাজার

প্রকাশ : ৩০ আগস্ট ২০২৩ ১০:৩৯ এএম

আপডেট : ৩০ আগস্ট ২০২৩ ১১:১৯ এএম

কক্সবাজার-মহেশখালী নৌরুটের এই স্থানে নতুন করে জেটি নির্মাণের নতুন প্রকল্প নিয়েছে এলজিইডি। এজন্য কাটতে হবে প্যারাবনের কয়েক হাজার বাইন গাছ। প্রবা ফটো

কক্সবাজার-মহেশখালী নৌরুটের এই স্থানে নতুন করে জেটি নির্মাণের নতুন প্রকল্প নিয়েছে এলজিইডি। এজন্য কাটতে হবে প্যারাবনের কয়েক হাজার বাইন গাছ। প্রবা ফটো

কক্সবাজার জেলাশহরের সঙ্গে মহেশখালী দ্বীপের যাতায়াতের অন্যতম পথ নৌরুট। এই রুটে মহেশখালী জেটিঘাটে যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ নেই। বর্তমানে জরাজীর্ণ জেটির কারণে এমন ভোগান্তি দীর্ঘদিনের। ফলে বিভিন্ন সময় সেতু বা ফেরি চলাচলের দাবি উঠেছিল।

সেতু নির্মাণের বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাই ছাড়া আর তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। গত বছরের ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর মহেশখালীবাসী প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফেরির দাবি জানান। স্থানীয় সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক জাতীয় সংসদে পদ্মা সেতুর জন্য বেকার হয়ে পড়া বিআইডব্লিউটিএর ফেরি কক্সবাজার-মহেশখালী নৌরুটে চালানোর জন্য দাবি জানান। নৌমন্ত্রী আশ্বাসও দিয়েছিলেন, কিন্তু এখনও বাস্তবায়ন হয়নি।

এর মধ্যে নতুন করে একটি জেটি নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। এই জেটি নির্মাণের জন্য কাটতে হবে প্যারাবনের কয়েক হাজার বাইন গাছ। তাই আপত্তি জানিয়েছে বন বিভাগ। 

এলজিইডি সূত্র জানিয়েছে, রোহিঙ্গা প্রকল্পের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে মহেশখালীর নতুন জেটির নির্মাণকাজ। গত ৭ ফেব্রুয়ারি এই জেটি নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। ১ মার্চ দরপত্র খোলা হয়। প্রকল্প অনুযায়ী জেটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন হবে ২০২৪ সালের ২৭ জুনের দিকে।

প্রায় ৩৭ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে বর্তমানে জরাজীর্ণ জেটির ডান পাশ দিয়ে এই নতুন জেটি নির্মাণ করা হবে। জেটির মাথা বা টার্মিনাল পার্ক (যেখানে আই লাভ মহেশখালী লেখা রয়েছে) থেকে প্রায় ৩০০ মিটার আরসিসি সড়কের পর টার্মিনাল পার্ক হবে। এরপর জেটির মূল অংশ শুরু হবে। সড়কের উভয় পাশে ব্লক ও গাইড পোস্ট ব্যবহার করা হবে। দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ৩৫০ মিটার। এটি কক্সবাজার-মহেশখালী-বদরখালী নৌরুটের ত্রিমোহনা পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। জেটির শেষ মাথায় আধুনিক মানের একটি প্ল্যাটফর্মও নির্মাণ করা হবে, যেখানে থাকবে যাত্রীছাউনি, টয়লেটসহ নানা সুযোগ-সুবিধা।

কিন্তু এ জেটি নির্মাণের জন্য কাটতে হবে প্যারাবনের কয়েক হাজার বাইন গাছ। ফলে জেটি নির্মাণের ক্ষেত্রে লিখিত আপত্তি জানিয়েছে উপকূলীয় বন বিভাগ। উপকূলীয় বন বিভাগের চট্টগ্রামের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুর রহমান গত ৩১ জুলাই স্থানীয় এলজিইডি কক্সবাজার জেলা বরাবরে এই আপত্তিপত্রটি পাঠান।

ওই পত্রে বলা হয়েছে, স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক বিদ্যমান ঘাটের দক্ষিণ পাশে একটি নতুন জেটি নির্মাণ করা হচ্ছে। সেখানে বর্তমানে বিদ্যমান জেটিঘাটের দুই পাশে বন বিভাগের গড়া প্যারাবন রয়েছে, যা ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস থেকে উপকূলবাসীকে সুরক্ষাসহ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ওই স্থানে নতুন আরেকটি জেটি নির্মাণের জন্য গাছ কাটার প্রয়োজন হলে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমতি গ্রহণ করা আবশ্যক। এই অনুমতি ছাড়া যেন নতুন জেটিঘাট নির্মাণের কার্যক্রম গ্রহণ করা না হয়।

পত্রের পাঠানো বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজার উপকূলীয় বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক শেখ আবুল কালাম আজাদ বলেন, বর্তমান জেটির স্থানে নতুন জেটি নির্মাণ করা হলে তাতে প্যারাবনের কয়েক হাজার বাইন গাছ কাটতে হবে, যা ২০০৩-০৪ অর্থবছরে বন বিভাগ রোপণ করেছে। এসব বাইন গাছকে উপকূল রক্ষার মাধ্যম হিসেবে ধরা হয়। 

এলজিইডি কক্সবাজার কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন খান জানান, প্রায় ৩৭ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে বর্তমান জরাজীর্ণ জেটির ডান পাশ দিয়ে এই নতুন জেটি নির্মাণ করার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে বন বিভাগের আপত্তিপত্র হাতে পেয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে। এই প্রকল্পটি জনগুরুত্বপূর্ণ বলে তাদের জানানো হয়েছে। উভয় পক্ষের আলোচনায় বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা চলছে। 

এদিকে নতুন জেটি নির্মাণের আপত্তি রয়েছে স্থানীয়দেরও। তারা বলেছেন, নতুন জেটি নয়, সেতু বা ফেরি সার্ভিস চান তারা। মহেশখালীর সাংবাদিক ফরিদুল আলম দেওয়ান বলেন, মহেশখালী উপকূলের জনগণের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল মহেশখালী-কক্সবাজার নৌপথে ফেরি সার্ভিস তথা গণপরিবহন চালু করে স্বল্প খরচে নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করা। এ দাবি পাশ কাটিয়ে ফেরি সার্ভিস চালুর পরিবর্তে নতুন জেটি নির্মাণ সর্বসাধারণের কাঙ্ক্ষিত উপকারে আসবে না। উপকূলের মানুষ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় নিরাপদে মালামাল ও যানবাহন পারাপারের সুবিধাটাই দাবি করেছিলেন সরকারের কাছে। এতে উপকূলবাসীর সমস্যা রয়েই যাবে।

এ বিষয়ে মহেশখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র সরওয়ার আজম বলেন, সেতু ও ফেরি হলে কিছু ব্যক্তির ক্ষমতার জাহির কমে যাবে, তাই এটির বাস্তবায়ন হচ্ছে না। রুটি-রুজি, চাঁদাবাজির ভিত্তি মজবুত করতে নতুন জেটি নির্মাণ করা হচ্ছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা