বগুড়া শজিমেক হাসপাতাল
বগুড়া অফিস
প্রকাশ : ২৯ আগস্ট ২০২৩ ০৯:৫৮ এএম
আপডেট : ২৯ আগস্ট ২০২৩ ১৮:৫৩ পিএম
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল। ফাইল ছবি
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ক্যানসার রোগীদের চিকিৎসায় লিনিয়ার অ্যাক্সেলেরেটর মেশিনটি নষ্ট থাকায় ২০ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে রেডিওথেরাপির মতো জরুরি সেবা। ওই হাসপাতালের ক্যানসার বিভিাগের চিকিৎসক ও কর্মচারীরা জানান, গত ১০ আগস্ট হঠাৎই বিকল হয়ে যাওয়ার পর থেকে রেডিওথেরাপি বন্ধ রয়েছে। ওই যন্ত্রটি এর আগেও একাধিকবার নষ্ট হয়েছিল।
শজিমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিকল লিনিয়ার অ্যাক্সেলেরেটর মেশিনটি মেরামতের জন্য ন্যাশনাল মেডিকেল ইকুইপমেন্ট মেইনটেন্যান্স ওয়ার্কশপ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার এবং যন্ত্রটি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিমেন্স কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। এরই মধ্যে সিমেন্সের কর্মকর্তারা হাসপাতালে যন্ত্রটি পরিদর্শন করেছেন। দুয়েক দিনের মধ্যে তারা আবার আসবেন এবং হয়তো দ্রুত সেটি মেরামত করা সম্ভব হবে।
বগুড়া শহরের ছিলিমপুরে ২০০৬ সালের ৩১ আগস্ট ৫০০ শয্যার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল উদ্বোধন করা হয়। ২০১৯ সালে হাসপাতালে ১২০০ রোগী ভর্তির প্রশাসনিক অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে জেলার আশপাশের উপজেলাগুলোতে কম টাকায় উন্নত চিকিৎসাসেবা না থাকায় গড়ে প্রতিদিন দেড় হাজারেরও বেশি রোগী ভর্তি থাকেন। এ কারণে হাসপাতালে অন্যান্য বিভাগের মতো ক্যানসার বিভাগেও রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বগুড়ার পাশাপাশি উত্তরাঞ্চলের অন্যান্য জেলা থেকেও ক্যানসারে আক্রান্ত রোগী এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন।
গত রবিবার সকালে শজিমেক ক্যানসার বিভাগের সামনে কথা হয় শিববাটি এলাকার আলী শাকুরের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘মা ক্যানসার আক্রান্ত। রেডিওথেরাপি দিতে হবে। কিন্তু মেশিন নষ্ট হওয়ায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাইরে থেরাপি দিতে গেলে অনেক খরচ। যে কারণে কষ্ট হলেও অপেক্ষা করতে হচ্ছে। মেশিনটি মেরামত হয়েছে কি না, সে ব্যাপারে খোঁজ নিতে এসেছিলাম।’
বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের ক্যানসার বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. মোবাশ্বের-উর-রহমান জানান, লিনিয়ার অ্যাক্সেলেরেটর মেশিনটি দুই সপ্তাহ আগে হঠাৎ করেই অকেজো হয়ে পড়ে। বিষয়টি হাসপাতাল প্রশাসনকে জানানো হয়।
তিনি আরও বলেন, ওই মেশিন সচল থাকা পর্যন্ত প্রতিদিন ৬০ থেকে ৮০ জনকে রেডিওথেরাপি দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এখানে এক মাসের জন্য রেডিওথেরাপির খরচ সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা। তবে একই সেবা বেসরকারি হাসপাতালে নিতে গেলে অন্তত ১০ গুণ বেশি খরচ গুনতে হয়। যে কারণে এখানে এতটাই রোগীর চাপ ছিল যে, আগামী নভেম্বর পর্যন্ত কোনো সিরিয়াল ফাঁকা ছিল না। কিন্তু যন্ত্র বিকল হয়ে যাওয়ায় এখন রেডিওথেরাপি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’
বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ জানান, যন্ত্রটি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা কয়েক দিন আগে হাসপাতালের এসেছিলেন, আবারও আসবেন। কারিগরি যে ত্রুটির বিষয়ে তারা প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করছেন, যদি সেটি হয় তাহলে দ্রুত মেরামত করা সম্ভব হবে।