হবিগঞ্জ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৮ আগস্ট ২০২৩ ১২:১৫ পিএম
পানি জমে নোংরা হয়ে আছে আজমিরীগঞ্জের কাকাইলছেও গ্রামের আশ্রয়ণের ঘর। প্রবা ফটো
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কাকাইলছেও গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মাণ করা হয়েছে নিচু জমিতে। এতে বর্ষায় নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তলিয়ে যায়। তা ছাড়া সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধ হয়ে হাঁটুপানি জমে যায়। শৌচাগার, রান্নাঘরসহ ঘরের মেঝেতে পানি উঠে যায়। রয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকটও। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আশ্রয়ণের বাসিন্দাদের। এরই মধ্যে কয়েকটি ঘর ছেড়ে চলে গেছেন উপকারভোগীরা।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০২০ সালে কাকাইলছেও গ্রামে আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রথম ধাপের ৫১টি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। কালনী নদীর তীরে অপেক্ষাকৃত নিচু জায়গায় নির্মাণ করা হয় আশ্রয়ণ প্রকল্পের এ ঘরগুলো।
বাসিন্দারা জানান, বর্ষায় কালনী নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে তলিয়ে যায় আশ্রয়ণ প্রকল্প। ব্যবস্থা করা হয়নি পানি নিষ্কাশনের। তাই বৃষ্টি হলেই ঘরগুলোর সামনে হাঁটুপানি জমে যায়। এমনকি বেশি বৃষ্টি হলে ঘরের ভেতরে পানি ঢুকে যায়। নষ্ট হয় ঘরের আসবাবপত্র। শৌচাগার ও রান্নাঘরে পানি জমে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এ ছাড়া নির্মাণকাজে ত্রুটি থাকায় কয়েকটি ঘরে দেখা দিয়েছে ফাটল। চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। দুর্ভোগে অন্তত ২০টি পরিবার ঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে। সেসব ঘরে এখন ঝুলছে তালা। দুর্ভোগের বিষয়টি প্রশাসনকে বারবার জানালেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
হেনা আক্তার নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘ঘরে ওঠার পর থেকে নানা সমস্যায় ভুগছি। বৃষ্টি এলেই পানি জমে থাকে ঘরের চারপাশে। রান্না-বান্না করতে পারি না। সংসারের অন্য কাজ-কামও করতে সমস্যা হয়।’
তোহাব মিয়া নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘বাথরুম ও টয়লেটগুলো বৃষ্টির পানিতে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এতে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। তা ছাড়া চলাচলের জন্য রাস্তাও নির্মাণ করা হয়নি। ফলে ঘরে যেতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দিন দিন এখানে বসবাস করা মুশকিল হয়ে যাচ্ছে।’
আমিনুল হক বলেন, ‘কয়েকটি ঘরে দেখা দিয়েছে ফাটল, বসবাসে ভয় করছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই কাদামাটি হয়ে যায় ঘরের আশপাশে। এমন অবস্থায় চরম দুর্ভোগ নিয়ে বসবাস করতে হচ্ছে।’
আরেক বাসিন্দা অনিলা শীল বলেন, ‘অনেক স্বপ্ন নিয়ে সরকারের দেওয়া উপহারের ঘরে উঠেছিলাম। কিন্তু আমাদের ভাগ্য খোলেনি। বৃষ্টি এলেই পানি জমে থাকে ঘরের চারপাশে। আবার বিশুদ্ধ পানির সংকটও রয়েছে। আশ্রয়ণের পাঁচটি টিউবওয়েলের মধ্যে তিনটিই নষ্ট।’
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জুয়েল ভৌমিক প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের সমস্যা নিরসনে কাজ করছে উপজেলা প্রশাসন। শিগগিরই পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থাসহ সব সমস্যা সমাধান করে বসবাসের উপযোগী করে গড়ে তোলা হবে।’