ফের ‘ভুল চিকিৎসায়’ প্রসূতির মৃত্যু

পটুয়াখালীর বাউফলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবারও এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, ভুল চিকিৎসায় ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২৬ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে উপজেলার কালিশুরী বন্দরে মাজেদা মেমোরিয়াল ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটে। মৃত্যুর পর ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ, চিকিৎসক ও নার্সরা পলাতক রয়েছে।

নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশনকালে লিমা আক্তার নামে ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়। লিমা উপজেলার ধুলিয়া ইউনিয়নের চাঁদকাঠি গ্রামের মো. আইউব আলীর মেয়ে ও বাকেরগঞ্জ উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের লক্ষীবর্ধণ গ্রামের মো. কালাম খানের স্ত্রী।

এর আগে ২০২০ সালে ভুল চিকিৎসায় একই ক্লিনিকে হ্যাপী বেগম নামে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছিল। পরে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে সমঝতা করে মাজেদা ক্লিনিক।

লিমার স্বজনরা জানায়, শ‌নিবার সকালে লিমাকে কালিশুরী বাজা‌রের মা‌জেদা ক্লি‌নি‌কে নি‌য়ে আসা হয়। বিকাল ৪টার দিকে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ জানায় লিমার সিজারিয়ান অপারেশন করতে হবে। বিকাল ৫টার দিকে লিমাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। সিজারে কন্যা সন্তান জন্ম দেন লিমা। অপারেশন থিয়েটারে দীর্ঘ সময় পার হলেও লিমার জ্ঞান না ফেরায় স্বজনদের সন্দেহ হয়। তবে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ জানায় রোগী সুস্থ আছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশালে পাঠাতে হবে। পরে ক্লিনিকের লোকজন তড়িঘড়ি করে লিমাকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেয়। লিমার স্বজনেরা বরিশাল না গিয়ে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক লিমাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।

বাউফল হাসপাতালের চিকিৎসক মো. সোয়েব মাহমুদ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘রোগী অনেক আগেই মারা গে‌ছে। ওখান থে‌কে মৃত অবস্থায় তাকে নিয়ে আসা হয়েছে।’

নিহতের মা আমেনা বেগম বলেন, ‘ক্লিনিকের মধ্যেই আমার মেয়ে মারা যায়। তারা মরা মেয়েকে সেলাইন দিয়ে বরিশাল নিয়ে যেতে বলে। আমরা বরিশাল না নিয়ে বাউফল নিয়ে আসছি। ডাক্তার দেখে বলছে আগেই মারা গেছে।’

এ বিষয়ে মাজেদা ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের কারও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। ঘটনার পর গা ঢাকা দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এটিএম আরিচুল হক প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, 'এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'