কুড়িগ্রাম প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ আগস্ট ২০২৩ ১২:৫২ পিএম
আপডেট : ২৬ আগস্ট ২০২৩ ১৩:৫৩ পিএম
কুড়িগ্রামে বাড়ছে তিস্তার পানি। শনিবার তোলা। প্রবা ফটো
উজানের পাহাড়ি ঢল ও কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে পঞ্চম দফায় বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে কুড়িগ্রামের উপর দিয়ে প্রবাহিত নদ-নদীর পানি। বিশেষ করে তিস্তা নদীর পানি হু হু করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পানি বৃদ্ধি পেয়ে কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৪১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে ধরলা, ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমরসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। আগামী দু'দিনের মধ্যে সব নদ-নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করবে বলে আশঙ্কা করছে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এতে করে নদ-নদীর অববাহিকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়ায় বন্যার আশঙ্কায় দিন পাড় করছেন নদী তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষজন।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার সকাল ৯টায় তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে কাউনিয়া পয়েন্ট বিপদসীমার ৪১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ৭২ সেন্টিমিটার, ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে ৯৭ সেন্টিমিটার ও দুধকুমারের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপদসীমার ৪২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী অববাহিকার নিম্নাঞ্চল ও নিচু চরাঞ্চলগুলোতে বন্যার পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। এরইমধ্যে ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার উলিপুর উপজেলার বেগমগন্জ ইউনিয়নের মশালের চর, মুসার চর ও বালাডোবা চরে ঘর-বাড়িতে পানি প্রবেশ। করেছে। তবে এখনও অন্যান্য অধিকাংশ চরাঞ্চলগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির তৈরি হয়নি।
এদিকে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের চর খিতাবখাঁ, গতিয়াসাম, বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চতুরা, রামহরি ও কালিরহাট এলাকায় দেখা দিয়েছে তিস্তা নদী ভাঙ্গন। এছাড়া ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার উলিপুর উপজেলার বেগমগন্জ ইউনিয়নের কয়েকটি পয়েন্টে এবং ধরলার অববাহিকার মোগলবাসা ইউনিয়নের চর সিতাইঝাড় এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।
তিস্তা পাড়ের বাসিন্দা আব্দুল হক বলেন, তিস্তা নদী পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বহু বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে। চলতি বছরের সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে এবার। যেভাবে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে আশঙ্কা করছি আজ সন্ধ্যার আগেই নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে হবে।
তিস্তা পাড়ের সরিষাবাড়ি এলাকার রতন মিয়া বলেন, তিস্তা নদীর পানি গতকাল থেকে হু হু করে বাড়ছে। এবার নিয়ে ৫ বার এই এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সর্বশেষ পানি কমায় আমন আবাদ করেছিলাম, এখন পুরো ফসলের মাঠ একবুক পানির নিচে। পানি স্থায়ী হলে ফসল নষ্ট হয়ে যাবে। কি খেয়ে বাঁচবো?
এ বিষয়ে কথা হলে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তার পানি বিপদসীমা উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও অন্যান্য নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৮ আগষ্ট পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে এবং ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমারের বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।’