× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

চরভদ্রাসনে রাসেলস ভাইপার আতঙ্ক, নির্ঘুম রাত চরাঞ্চলবাসীর

সদরপুর-চরভদ্রাসন (ফরিদপুর) প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০২৩ ১৮:৫৯ পিএম

 রাসেলস ভাইপার। সংগৃহীত ছবি

রাসেলস ভাইপার। সংগৃহীত ছবি

ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার পদ্মা নদীর তীর ঘেষে চরজুড়ে এ বছর বর্ষা মৌসুমে বাড়ছে রাসেলস ভাইপার সাপের উপদ্রব। বর্ষার পানি কম হওয়ায় চরাঞ্চলের ঘরের আশপাশে, রাস্তা-ঘাটে ও ফসলের মাঠে রাসেলস ভাইপার বেশি বিচরণ করছে।

গত কয়েক দিনে উপজেলার বিভিন্ন চরে সাপের কামড়ের শিকার হয়েছেন অন্তত সাতজন। তাদরে মধ্যে মারা গেছেন দুজন। বাকিরা ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

সদর ইউনিয়নের কামারডাঙ্গী গ্রামের অমৃত মণ্ডলের স্ত্রী চার সন্তানের জননী বেদেনা রানী মণ্ডল (৪০) রাসেলস ভাইপার সাপের কামড়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পরে বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় মারা যান।

রানী মণ্ডলের স্বামী অমৃত মণ্ডল বলেন, গত ১৮ আগস্ট তিনি ধান ক্ষেতে কাজ করছিলেন। বিকাল ৪টার দিকে তার স্ত্রী ভাত নিয়ে ক্ষেতের আইল দিয়ে আসার সময় সাপে দংশন করে। পরে তারা স্থানীয় ওঝা দিয়ে বিষ নামিয়ে বাড়ি ফিরে যান। এর এক ঘণ্টা পর বেদানা অসুস্থ হয়ে পড়লে আবারও তারা ওঝার কাছে যান। 

তিনি বলেন, দ্বিতীয় দফায় বিষ নামানোর পরও বেদানার কোনো পরিবর্তন না হলে তারা চরভদ্রাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে নেওয়ার পর বেদনা কিছুটা সুস্থ বোধ করেন এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকেন। পরের দিন সকাল ১০টার দিকে তার আবার বিষক্রিয়ার উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকরা অ্যান্টিভেনাম দিয়ে তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ২৩ আগস্ট সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। একদিন চিকিৎসার পর তার মৃত্যু ঘটে। কিডনিজনিত সমস্যায় তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক বছর আগে বন্যার পানির সঙ্গে রাসেলস ভাইপার সাপ ভেসে এসে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চরাঞ্চল ছেয়ে গেছে। এ বছর উপজেলার কৃষক শ্রমিক ও মজুররা ফসলি মাঠে কাজ করতে গিয়ে বেশি সাপের দংশনের শিকার হচ্ছেন। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি সাপের কামড়ে মারা যান উপজেলার চরহরিরামপুর ইউনিয়নের আমিনখারডাঙ্গী গ্রামের ময়নাল শেখের ছেলে লাবলু শেখ (৩৫)। সাপড়ের কামড়ের শিকার হয়ে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন উপজেলার চর ঝাউকান্দা ইউনিয়নের দক্ষিণ চর কল্যাণপুর গ্রামের আফাজদ্দিন শেখের ছেলে মিজানুর রহমান (২২), একই গ্রামের শফি মুন্সির ছেলে শাহাবুদ্দিন মুন্সি (২৫), তার মেয়ে স্বর্ণা আক্তার (১৮), চরহরিরামপুর ইউনিয়নের একরাম মাতুব্বরডাঙ্গী গ্রামের শেখ বাদশার ছেলে শেখ ইউনুচ (৩০) ও শালেপুর গ্রামের জয়নাল ফকিরসহ (৩৮) অনেকে। মাঠে কাজ করতে গিয়ে ও কাশবনে গরুর ঘাস কাটতে গিয়ে সাপের দংশনের শিকার হয়েছেন তারা।

উপজেলার চর ঝাউকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বদরুজ্জামান মৃধা বলেন, এ বছর ইউনিয়নে সাপের উপদ্রব ও এডিশ মশা বৃদ্ধি পাওয়ায় আমি নিজ উদ্যোগে পরিষ্কার-পরিচ্ছনতা অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি এবং এ ব্যাপারে সবার সহায়তা কামনা করছি।

চরভদ্রাসন সদর ইউপি চেয়ারম্যান আজাদ খান বলেন, উপজেলায় সাপের উপদ্রব বৃদ্ধি পাওয়ায় তিনি গামবুট পড়ে কৃষকদের মাঠে কাজ করার অনুরোধ জানিয়েছেন। চরহরিরামপুর ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির বেপারী বলেন, এ বছর বর্ষার পানি কম হওয়ায় চরাঞ্চলে বেশি সাপের উপদ্রব দেখা দিয়েছে। এ অবস্থা প্রতিরোধে চরাঞ্চলে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা দরকার।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাফিজুর রহমান বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রচুর পরিমাণে সাপের কামড়ের প্রতিষেধক ইনজেকশন রয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকজন সাপে কাটা রোগীর মাঝে প্রতিষেধক ইনজেকশন প্রয়োগ করা হয়েছে। তিনি বলেন, কিন্তু গ্রামাঞ্চলে এখনো ঝাড়ফুকে বিশ্বাসী সাপে কাটা রোগীদের হাসপাতালে আনতে বিলম্ব করা হচ্ছে। এ কারণে বেশি ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা