বাগেরহাট প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ আগস্ট ২০২৩ ২২:২৪ পিএম
বাগেরহাট প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে শেখ মো. জালাল উদ্দিন । প্রবা ফটো
সোনালী ব্যাংকের বাগেরহাট শাখায় জমা রাখা টাকা ফেরত চান শেখ মো. জালাল উদ্দিন ও টিপু শেখ নামে দুই গ্রাহক। সোমবার (২১ আগস্ট) বাগেরহাট প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তারা দাবি করেন, ২০১২ সালে এককালীন এবং মাসিক কিস্তিতে কিছু টাকা সোনালী ব্যাংকে জমা রাখেন। পরে তারা ব্যাংক থেকে ঋণ নেন। সেই ঋণ পরিশোধও করেন। কিন্তু জমা রাখা টাকা তুলতে গেলে ব্যাংক জানায় ঋণ পরিশোধ করা হয়নি।
এদিকে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের ঋণ রয়েছে; যা এখনও পরিশোধ হয়নি। ঋণের আবেদনে তাদের স্বাক্ষর রয়েছে। ঋণ পরিশোধ করলেই জমানো টাকা ফেরত পাবেন।
শেখ মো. জালাল উদ্দিন বাগেরহাট সদর উপজেলার কাড়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন কর্মচারী হিসেবে ২০১১ সালে আমি অবসরে যাই। ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে সোনালী ব্যাংক, বাগেরহাট শাখায় মাসে ৫ হাজার টাকা লভ্যাংশ পাওয়ার শর্তে ৫ লাখ টাকা ৫ বছরের জন্য জমা রাখি। জরুরি প্রয়োজনে ২০১৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ৪ লাখ টাকা ঋণ নিই। ২০১৪ সালের ৪ আগস্ট ৩ লাখ এবং ২০১৫ সালের ১ অক্টোবর ১ লাখ ৮৮ হাজার ৬০১ টাকা সুদসহ পরিশোধ করি। ৫ বছর পূর্ণ হলে টাকা তুলতে গেলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, ব্যাংকে চুরির ঘটনা ঘটেছে, দুদকে মামলা চলছে, নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত টাকা দেওয়া যাবে না। পরে টাকার জন্য দুদকসহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে থাকি। সর্বশেষ ২০২২ সালের ১৭ অক্টোবর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০১৩ সালে এবং ২০১৫ সালে ৪ লাখ টাকা করে পৃথক দুটি ঋণ নিয়েছি। দুটি ঋণের বিপরীতে ব্যাংক আমার কাছে ১২ লাখ ৪৯ হাজার ১৯৩ টাকা দাবি করে। এটা খুবই হাস্যকর, কারণ ব্যাংকে আমার জমা মাত্র ৫ লাখ টাকা, সেখানে ব্যাংক কেন আমাকে ৮ লাখ টাকা ঋণ দেবে। আমি সুদসহ পুরো টাকা ফেরত চাই।
আরেক গ্রাহক টিপু শেখ বাগেরহাট শহরের রেলরোড এলাকার বাসিন্দা। তিনি বলেন, ২০১২ সালে মাসে ৫ হাজার টাকা জমা দেওয়ার শর্তে সোনালী ব্যাংক বাগেরহাট শাখায় ১০ বছর মেয়াদি একটি ডিপোজিট (এমডিএস) করি। জরুরি প্রয়োজনে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে ডিপোজিটের বিপরীতে এক লাখ টাকা ঋণ নিই। পাঁচ ধাপে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৮৪৭ টাকা দিয়ে সুদসহ ঋণ পরিশোধ করি। ২০২২ সালের ১৭ অক্টোবর মেয়াদপূর্ণ হওয়ায় টাকা পাওয়ার আবেদন করলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, আমি ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে পরিশোধ করিনি। এই ঋণ সুদসহ ১ লাখ ৬৭ হাজার ৭২৭ টাকা হয়েছে। তা দিলেই তাকে জমানো টাকা ফেরত দেওয়া হবে।
সোনালী ব্যাংক, বাগেরহাট আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক সুকুমার রায় বলেন, দুজনের ঋণ রয়েছে। সেই ঋণের আবেদনে তাদের স্বাক্ষর রয়েছে। ঋণের টাকা পরিশোধ করলে তাদের জমানো টাকা ফেরত দেওয়া হবে। এ ছাড়া কিছু জালিয়াতির ঘটনা ব্যাংকে ঘটেছিল, তা নিয়ে দুদকে মামলা চলমান। দুদক ও আদালত থেকে সিদ্ধান্ত এলে সমাধান হয়ে যাবে।