প্রতিদিনের বাংলাদেশ ডেস্ক
প্রকাশ : ১৬ জুলাই ২০২২ ২১:৩২ পিএম
সরকারি অর্থায়নে ক্ষতিগ্রস্ত গোবিন্দ সাহার বাড়ি মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। শনিবার দুপুরে লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া সাহাপাড়া এলাকায়
নড়াইলে সাম্প্রদায়িক হামলার জন্য দায়ীদের শক্ত হাতে দমনের আহ্বান জানিয়েছেন দেশের ২১ বিশিষ্টজন।
শনিবার এক বিবৃতিতে তারা বলেন, মাত্র মাসাধিককালের ব্যবধানে নড়াইলে সংগঠিত দুটি সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা প্রমাণ করে বাংলাদেশের সমাজের অভ্যন্তরে সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান ঘটছে। চোখ বুঁজে থাকলে প্রলয় বন্ধ হয় না। নড়াইলে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্য কলেজ অধ্যক্ষকে জুতোর মালা পরিয়ে থানায় নিয়ে যাওয়ার ন্যক্কারজনক ঘটনা মোকাবিলায় পুলিশ ও প্রশাসনের ব্যর্থতা আমাদের বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন করেছিল। এর পরপর নড়াইলে দুদিন আগে ধর্ম-অবমাননার অজুহাতে আরও নারকীয় ঘটনা সংঘটিত হলো। একই ধরনের অজুহাত, ইসলামের মহানবী (স.) সম্পর্কে অপমানসূচক ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও বসত বাড়িতে অগ্নি-সংযোগ ও লুণ্ঠন একথা প্রমাণ করে যে, বাংলাদেশ তার অসাম্প্রদায়িক চরিত্র ক্রমশ হারিয়ে ফেলছে। ঘটনাগুলোকে তুচ্ছজ্ঞান করা বা বিচ্ছিন ঘটনা মনে করার কোনো কারণ নেই।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ২০১২ সাল থেকে রামু-নাসিরনগর-অভয়নগর-শাল্লা-ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া-কুমিল্লা-চৌমুহনী-মুন্সীগঞ্জ-নড়াইল-উত্তরাসহ সারাদেশে ধারাবাহিকভাবে যেসব সাম্প্রদায়িক সহিংস ঘটনা ঘটেছে তা বাংলাদেশকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়শূন্য কেবল মুসলিম অধ্যুষিত ধর্মান্ধ দেশে পরিণত করার মহাপরিকল্পনার অংশ বই আর কিছু নয়। অসাম্প্রদায়িকতার সমর্থক রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরে সাম্প্রদায়িক অনুপ্রবেশকারীদের আধিক্য এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, এই রাজনৈতিক দল সাম্প্রদায়ির হামলার প্রতিবাদ বা প্রতিরোধ করতে উপর্যুপরি ব্যর্থ হচ্ছে। প্রশাসন ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃত্ব নিজস্ব দায়বোধ থেকে এই ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ করাতো দূরের কথা, এর সমালোচনা করার সক্ষমতা হারিয়েছে। আমরা সরকারকে তার দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলতে চাই, কঠোর হস্তে এই সাম্প্রদায়িক সংকট মোকাবিলায় অবিলম্বে সচেষ্ট হোন। অন্যথায় এই অপশক্তির আধিপত্যে সমাজ হাতছাড়া হতে বাধ্য এবং তাতে করে রাষ্ট্রের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে।
বিবৃতিদাতারা হলেন- সৈয়দ হাসান ইমাম, অনুপম সেন, রামেন্দু মজুমদার, সেলিনা হোসেন, সারোওয়ার আলী, ফেরদৌসী মজুমদার, আবেদ খান, আবদুস সেলিম, লায়লা হাসান, মফিদুল হক, মামুনুর রশীদ, শফি আহমেদ, শাহরীয়ার কবীর, মুনতাসির মামুন, হারুণ হাবীব, ম. হামিদ, গোলাম কুদ্দুছ, শিমূল ইউসুফ, সারা যাকের, লুৎফর রহমান ও নাসির উদ্দীন ইউসুফ।