× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

দশানি নদীর ভাঙনে দিশেহারা মানুষ

শেরপুর প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২০ আগস্ট ২০২৩ ১৪:১৩ পিএম

শেরপুর সদর উপজেলার কামারের চর ইউনিয়নে দশানি নদীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে একের পর এক এলাকা। প্রবা ফটো

শেরপুর সদর উপজেলার কামারের চর ইউনিয়নে দশানি নদীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে একের পর এক এলাকা। প্রবা ফটো

শেরপুর সদর উপজেলার কামারের চর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য ছাইফুদ্দিন মণ্ডল। দুই বছর আগে দশানি নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে যায় তার ৭ নম্বর চর এলাকার বসতভিটা। পরে নদী থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে নতুন করে বসতবাড়ি নির্মাণ করেন। ভাঙতে ভাঙতে ইতোমধ্যে তার বাড়ির আঙিনা, গোয়ালঘরসহ টিউবওয়েল নদীতে চলে গেছে। টিকে আছে শুধু বসতঘর, যেকোনো সময় তা-ও নদীতে চলে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তিনি। একই অবস্থা মোহাম্মদ কাইম উদ্দিনসহ অনেকের বসতবাড়ির। তাদের বাড়ির সামনের প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা গত দুই সপ্তাহে নদীগর্ভে চলে গেছে। 

দশানি নদীর ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে চরাঞ্চলের মানুষ। গেল কয়েক বছরে শতাধিক বাড়িঘর, গাছপালা ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এ বছর নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে। হুমকির মুখে রয়েছে বসতবাড়ি, আবাদি জমি, বাজার, মসজিদ, মাদ্রাসা, শহীদ মিনার, প্রাথমিক বিদ্যালয়। এতে চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয়রা। ভাঙনরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তাদের। 

স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, এবার ভাঙনের তোড়জোড় বেশি। গেল এক সপ্তাহেই অন্তত ৫০ একর ফসলি জমি, ১০টি বাড়িসহ প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। প্রতিবছরই বর্ষার সময় ভাঙন দেখা দেয়, কিন্তু দেখা মেলে না পানি উন্নয়ন বোর্ডের কারও। ফসলি জমি ও বাড়িঘর হারিয়ে চোখমুখে অন্ধকার দেখছে। তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। 

পূর্ব পাড়ার বাছিল উদ্দিন, শামছুদ্দিন, হাসমত আলী, ছংকু মিয়া, নওশের বেপারির ফসলি জমি নদীর গর্ভে চলে গেছে। প্রতিদিনের বাংলাদেশকে তারা বলেন, ‘একরের পর একর জমি প্রতিবছর নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। জমি হারিয়ে আমরা নিঃস্ব। আগুনে পুড়লে মাটি থাকে, কিন্তু নদীতে ভাঙলে কিছুই থাকে না। ভাঙনরোধে কোনো ব্যবস্থা নিতেও দেখা যাচ্ছে না।’

বটতলা বাজারের ব্যবসায়ী বাদশাহ মিয়া বলেন, ৩৫ বছরের ঐতিহ্যবাহী এ বাজারে বিভিন্ন চরের মানুষ বেচাবিক্রি করতে আসে। দশানি নদী এখন বাজার থেকে মাত্র ১০০ ফুট দূরে, ভাঙন অব্যাহত আছে। ভাঙনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে যেকোনো সময় নদীগর্ভে চলে যাবে বাজার। 

স্থানীয় ফুল মামুদ, হামিদুর রহমান, আক্কাস আলী, শফিউল আলমসহ কয়েকজন বলেন, ‘৭ নম্বর চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে মাত্র ৫০ ফুট দূরে নদীটি চলে এসেছে। দ্রুত ভাঙন ঠেকানো না গেলে স্কুলটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। এখানে বেশিরভাগ লোক দরিদ্র কৃষক। আবাদি জমি হারিয়ে তারা নিঃস্ব হয়ে গেছে। যদি স্কুলটিও নদীতে চলে যায় তাহলে ছেলেমেয়েদের দূরের কোনো প্রতিষ্ঠানে পড়াতে পারবে না। ফলে বেশিরভাগ শিশু শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে।’ 

পূর্ব পাড়া জামে মসজিদের খতিব ও স্থানীয় মদিনাতুল উলুম নূরানিয়া হাফেজিয়া কওমি মাদ্রাসার মোহতামিম মাওলানা ছানাউল্লাহ বলেন, সকলের প্রচেষ্টায় গ্রামে প্রায় ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে দুইতলা মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। কওমি মাদ্রাসাতে শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। নদীভাঙনের হুমকিতে রয়েছে এই দুটি প্রতিষ্ঠান। 

সদর উপজেলা পরিষদের চেয়াম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, ভাঙনের বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে (পাউবো) জানানো হয়েছে। তারা দ্রুত সময়ে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। জানতে চাইলে পাউবো শেরপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী ইমদাদুল হক বলেন, ‘ভাঙন এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি তত্ত্বাধায়ক প্রকৌশলীকে অবগত করা হয়েছে। ২০০ মিটার অংশে কাজ করার নির্দেশনা পেয়েছি। দ্রুত এ কাজ শুরু করা হবে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা