রাজশাহী অফিস
প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২৩ ১৫:০০ পিএম
আপডেট : ১৯ আগস্ট ২০২৩ ১৬:৩৪ পিএম
হাত-পা ও চোখ বেঁধে পানিতে চুবিয়ে নির্যাতন। প্রবা ফটো
রাজশাহীর চারঘাটের শলুয়া ইউনিয়নে টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে দুই যুবককে
হাত-পা ও চোখ বেঁধে পানিতে চুবিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী এক
ব্যক্তি, এক ছাত্রলীগ নেতা এবং তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে। শুক্রবার (১৮ আগস্ট) নির্যাতনের
একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
অভিযুক্তরা হলেন- মুক্তার ও শলুয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের
সভাপতি আব্দুল ওয়াদুদ শুভ। নির্যাতনের শিকার দুই যুবক হলেন- শলুয়া ইউনিয়নের মোহন
ও তার প্রতিবেশী মছু।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) রফিকুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন,
এ ঘটনায় পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে একটি জিডি করেছে। নির্যাতনের শিকার দুই যুবকের পরিবারের
সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তাদের অভিযোগ করতে বলা হয়েছে। তবে তারা জানিয়েছেন, এ
বিষয়ে তারা অভিযোগ করতে রাজি নয়।
চারঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুল আলম বলেন, ‘বিষয়টি লোকমুখে
শুনেছি। তবে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া
হবে।’
ভুক্তভোগীরা জানায়, গত ৯ জুলাই দুপুরে পৃথকভাবে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।
মোহনকে হাত-পা বেঁধে পানিতে চুবিয়ে নির্যাতন করা হয়। আর মছুকে চোখ-মুখ বেঁধে পেটানো
হয়।
মোহনের মা শলুয়া ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ সদস্য নাসিমা বেগম বলেন, ‘জুন মাসের শেষের
দিকে প্রতিবেশী পারুলের বাড়িতে থাকা ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা চুরি করে মছু। সেই টাকা
উদ্ধারের জন্য মছুকে জিম্মি করে এলাকার প্রভাবশালী মুক্তা ও সোহেল। মছু নিজেকে বাঁচাতে
আমার ছেলে মোহনের নাম বলে। গত ৯ জুলাই সকালে আমার ছেলে কাঠ মিলে কাজ করা অবস্থায় তাকে
তুলে নিয়ে যায় মুক্তা ও সোহেলসহ তার সহযোগীরা। তারা আমার ছেলেকে হাত-পা বেঁধে ডোবার
পানিতে চুবিয়ে সারা দিন নির্যাতন করে।’
নির্যাতনের শিকার মোহন বলেন, ‘ঘটনার দুমাস হতে
চলল আমার শরীর এখনও অকেজো হয়ে আছে। তারা আমার হাত-পা, মুখ ও চোখ বেঁধে মাটিতে পুঁতে
নির্যাতন করেছে।’
এ বিষয়ে কথা বলতে শলুয়া ইউনিয়নে মুক্তারকে খোঁজ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এলাকাবাসী নাম প্রকাশ করার শর্তে জানান, মুক্তা এলাকায় প্রভাবশালী ব্যক্তি। তার বিষয়ে
কেউ মুখ খুললে পরিণতি ভয়াবহ হবে।
ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল ওয়াদুদ শুভর দাবি, ‘রাজনৈতিকভাবে ফায়দা নিতেই তার নাম ব্যবহার করা হচ্ছে। ওই নির্যাতনের সময় বা এই ঘটনার সঙ্গে আমি কোনোভাবে সম্পৃক্ত নই।’