× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

অন্য রকম এক বিয়েতে মাতলেন গ্রামবাসী

শেরপুর প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৩ আগস্ট ২০২৩ ১৯:৪৭ পিএম

আপডেট : ১৩ আগস্ট ২০২৩ ২০:১০ পিএম

অন্য রকম এক বিয়েতে মাতলেন গ্রামবাসী

অন্য রকম এক বিয়ে উদযাপন করেছেন শেরপুরের মানুষ। তিন ফুট উচ্চতার বর খোরশেদ আলমের বিয়ের আনন্দে মেতেছিলেন তারা। জাঁকজমকপূর্ণ এ বিয়েতে অতিথিও ছিলেন প্রায় সাড়ে ছয়শ। এমন আয়োজনে খুশি স্থানীয়রা। আর নবদম্পতির জন্য দোয়া চাইলেন স্বজনরা। 

সদর উপজেলার ভাতশালা ইউনিয়নের মধ্য বয়ড়া গ্রামের মাখন মিয়ার দুই ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে সবার বড় খোরশেদ আলম। বিয়ে করেছেন পৌর শহরের দিঘারপাড় এলাকার বাচ্চু মিয়ার মেয়ে খাদিজা আক্তার বর্ষাকে। শনিবার (১২ আগস্ট) নিজ বাড়িতে হয় বৌভাত অনুষ্ঠান।

খোরশেদের মামা আবুল হাসেম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘২৮ বছর বয়সি খোরশেদের দৈহিক উচ্চতা ৩ ফুটের মতো। ছোটবেলায় স্থানীয় একটি স্কুলে ভর্তি করালে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করে। পরে অভাবের সংসারে আর পড়ালেখা করার সুযোগ হয়নি। সংসারের হাল ধরতে ১৪ বছর আগে মোটরসাইকেলের গ্যারেজে কাজ নেয়। কিন্তু সেখানেও ছিল বিপত্তি। খর্বাকৃতির হওয়ায় তাকে প্রথমে কেউ নিতে চায়নি। কারণ হিসেবে মিস্ত্রিরা বলেছে, তাকে দিয়ে তো আর মোটরসাইকেল চালিয়ে ট্রায়াল দেওয়ানো যাবে না। পরে ঘুরতে ঘুরতে আমিনুল ইসলাম নামে একজন গ্যারেজ মালিকের কাছে আশ্রয় পায়। সেখানেই মোটরসাইকেলের মেরামতের কাজ শেখে। নানা বাঁধা বিপত্তি পেরিয়ে সে এখন সফল মিস্ত্রি।’

আরেক মামা দুলাল মিয়া বলেন, ‘বোনের চার সন্তানের মধ্যে একজন মারা গেছে। খোরশেদের শারীরিক একটু সমস্যা আছে। বাকি সবই সুস্থ ও স্বাভাবিক। খোরশেদ পরিবারের বোঝা না হয়ে কর্মক্ষম হয়েছে। তার আয়ে সংসার চলছে। তার বিয়েতে আমরা সবাই খুব খুশি।’

ফুফাতো ভাই সুমন আহমেদ বলেন, ‘বিয়েতে খুব আনন্দ করেছি। আমরা কখনও ভাবিনি, ভাইয়ের বিয়ে এত জাঁকজমকভাবে হবে। কমপক্ষে হাজার খানেক মানুষ দেখতে এসেছে। বিয়েতে মেহমানই ছিল সাড়ে ছয়শ। শহরের বিভিন্ন মহল্লার উৎসুকদের ভিড় ছিল। সবাই আনন্দিত, ভাবিও চমৎকার মানুষ। তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের হবে।’ 

খোরশেদের মা খোদেজা বেগম বলেন, ‘চার সন্তানের মধ্যে খোরশেদ সবার বড়। অভাবের কারণে তাকে বেশি পড়াতে পারিনি। সে এখন নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে। আমার বউমা খুব ভালো মেয়ে। সবার কাছে তাদের জন্য দোয়া চাই।’

খাদিজা আক্তার বর্ষার বাবা বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘আমার তিন মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে বর্ষা মেঝো। আমি এ বিয়েতে খুব খুশি। সবার কাছে দোয়া চাই তারা যেন সুখি হতে পারে।’

ঘটক বধু মিয়া বলেন, ‘খোরশেদকে বিয়ে করানো সহজ ছিল না। দেড় বছর ধরে পাত্রী খুঁজছি। প্রায় দুই শতাধিক মেয়ে দেখার পর বিয়ে ঠিক হয়েছে। এত অপেক্ষার পর বিয়েটা করাতে পেরে খুব ভালো লাগছে।’ 

সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সাবিহা জামান বলেন, ‘খোরশেদ-খাদিজার বিয়ে উৎসবে মেতেছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কয়েকশ মানুষ। ব্যতিক্রমী এ বিয়ে অনেকের নজর কেড়েছে। গ্রাম-বাংলার রীতি অনুযায়ী উভয় পরিবারের সম্মতিতে তাদের বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষদের সমাজে বোঝা হিসেবে দেখা হয়। কিন্তু আসলে তারা বোঝা নয়। তাদের ঠিকভাবে গড়ে তুলতে পারলে সম্পদ হয়ে ওঠে। আর এমন আয়োজনে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষদের প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টি বদলাবে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা