নরসিংদী প্রতবেদক
প্রকাশ : ১২ আগস্ট ২০২৩ ১৪:২৮ পিএম
আপডেট : ১২ আগস্ট ২০২৩ ১৫:৫১ পিএম
ফাইল ফটো
সমুদ্র পথে লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার সময় নরসিংদীর ৮ জন নিখোঁজ হয়েছেন বলে দাবি করেছেন তাদের স্বজনরা। তারা সবাই বেলাব উপজেলার বাসিন্দা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি তারা শুনেছেন। নিশ্চিত হতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।
শুক্রবার (১১ আগস্ট) বেঁচে যাওয়া কয়েকজন ও দালালদের মাধ্যমে খবর পান নিখোঁজদের স্বজনরা।
নিখোঁজরা হলেন- উপজেলার দুলালকান্দি গ্রামের হারুন রশিদের ছেলে মনির হোসেন, একই এলাকার আ. মোতালিব মিয়ার ছেলে রবিউল, নারায়ণপুর ইউনিয়নের কাঙ্গালিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে মোখলেছুর রহমান, একই এলাকার মৃত হাছেন আলীর ছেলে আনোয়ার হোসেন ওরফে কামাল হেসেন, ভাটের গ্রামের হাসান উদ্দিনের ছেলে মাসুদ রানা, টান লক্ষ্মীপুর গ্রামের মহরম আলীর ছেলে স্বাধীন মিয়া, নিলক্ষীয়া গ্রামের আমান মিয়া ও দেওয়ানেরচর গ্রামের আলমাছ আলীর ছেলে ইমন।
তারা সবাই ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার চুক্তিতে দুলাল কান্দি গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে জাকির হোসেন এবং নুর কাসেমের স্ত্রী শাহিনুর (জাকিরের ফুফু) মাধ্যমে অবৈধভাবে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশে দেশ ছাড়েন বলে জানায় স্বজনরা।
নিখোঁজ কামাল হোসেনের ছোট ভাই জামাল মিয়া প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, পাঁচ থেকে ছয় মাস আগে তার ভাইকে ১২ লাখ টাকা চুক্তিতে ইতালি পৌঁছে দিতে প্রথমে লিবিয়া নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বেশ কিছুদিন গেমঘরে রেখে গত বুধবার রাত ৮টার দিকে নদীপথে ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করা হয়। এর ৪০ মিনিট পর ডুবে যায় বহনকারী বোট।
নিখোঁজ রবিউলের ভাই ইব্রাহিম বলেন, ‘আট মাস আগে ভৈরবের দালাল রবিউল্লার মাধ্যমে লিবিয়া গিয়েছিলেন আমার ভাই। কিন্তু সেখানে আমার ভাইকে বৈধ কোনো কাগজ করে দেওয়া হয়নি। দুলালকান্দি এলাকার দালাল জাকির হোসেন ইতালি নিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দিয়ে আমাদের কাছ থেকে আট লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। এখন খবর পেলাম আমার ভাই নিখোঁজ।‘
নারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মিলন মিয়া বলেন, পরিবারের লোকজনের মাধ্যমে নিখোঁজের খবর পেয়ে লিবিয়ায় থাকা দালাল জাকির হোসেনের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করি। তাকে ফোন দেওয়া হলে অন্য একজন ফোন রিসিভ করে জানান, বোট ডুবিতে জাকিরের অধীনে থাকা ২০ জনের মধ্যে আমানসহ ১২ জনকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। তবে আট জনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। উদ্ধার হওয়া আমানের সঙ্গেও পরিবারের লোকজন যোগাযোগ করতে পারছেন না।
অভিযুক্ত দালাল জাকির হোসেন ও তার ফুফু শাহিনুরের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। নিখোঁজের খবর ছড়িয়ে পড়লে তাদের পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে তালা দিয়ে পালিয়ে গেছে।
বেলাব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আয়েশা জান্নাত তাহেরা বলেন, ‘ইতালি যাওয়ার পথে বেশ কয়েকজন নিখোঁজের সংবাদ লোকমুখে শুনেছি। পরিবারের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেনি। নিখোঁজের বিষয়ে জানতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করছি।’
বেলাব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তানভীর আহমেদ বলেন, বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমে এবং লোক মুখে শুনেছি। এখনও কোনো অভিযোগ আসেনি, এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।