কুমিল্লা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ আগস্ট ২০২৩ ২০:৪৪ পিএম
আপডেট : ১১ আগস্ট ২০২৩ ২১:০৯ পিএম
হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত দম্পতি। প্রবা ফটো
কুমিল্লার চান্দিনায় পুকুরে বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধারের রহস্য উদঘাটনের
দাবি করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত দম্পতিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার
(১০ আগস্ট) দেবিদ্বারের ওয়াহিদপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার দম্পতি হলো, সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক থানার গাবুর গাঁও গ্রামের
শুক্কুর আলী ও ফাতেমা বেগম। হত্যাকাণ্ডের শিকার রাজমিস্ত্রি আরিফ হোসেন সুনামগঞ্জের
ছাতক থানার সাতগাঁও গ্রামের আলাই মিয়ার ছেলে।
শুক্রবার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে
এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) নাজমুল হাসান। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার
(দাউদকান্দি সার্কেল) এনায়েত কবীর সোয়েব, চান্দিনা থানার ওসি সাহাবুদ্দিন খান প্রমুখ
এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে নাজমুল হাসান জানান, ৯ আগস্ট চান্দিনার করতলা গ্রামের
পুকুরে ভেসে ওঠে আরিফ হোসেনের বস্তাবন্দি অর্ধগলিত মরদেহ। এ ঘটনায় তার ভাই তারিছ আলী
হত্যা মামলা করেন। পরে ১০ আগস্ট দেবিদ্বার উপজেলার ওয়াহিদপুর এলাকা থেকে শুক্কুর আলী
ও ফাতেমা বেগম দম্পতিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আজ (শুক্রবার) তাদের আদালতের মাধ্যমে
কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার দম্পতিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে তিনি জানান, ১০ বছর
আগে ফাতেমা বেগম ও শুক্কুর আলীর বিয়ে হয়। তাদের চার সন্তান রয়েছে। রাজমিস্ত্রির কাজ করার
সুবাদে শুক্কুর আলীর সঙ্গে আরিফের ২-৩ বছর আগে বন্ধুত্ব হয়। বাড়িতে আসা-যাওয়ার কারণে
আরিফের সঙ্গে শুক্কুরের স্ত্রী ফাতেমার প্রেমের সম্পর্ক হয়। ফাতেমা এক মাস আগে আরিফের
সঙ্গে কুমিল্লার চান্দিনায় চলে আসেন। কিছু দিন পর ফাতেমা বুঝতে পারেন আরিফ তাকে বিয়ে করবেন না। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তার স্বামী শুক্কুরের সঙ্গে পুনরায় যাওয়ার জন্য মোবাইল ফোনে যোগাযোগ
করেন। ৭ আগস্ট শুক্কুর ফাতেমাকে নেওয়ার জন্য আরিফের ভাড়া বাসায় আসেন। ওই সময় আরিফ
বাসায় ছিল না। এ সুযোগে ফাতেমা ও শুক্কুর আরিফকে ‘উচিত শিক্ষা’ দেওয়ার জন্য
হত্যার পরিকল্পনা করেন।
পরিকল্পনা মোতাবেক শুক্কুর চৌকির নিচে লুকিয়ে থাকেন। রাত ১০টার দিকে আরিফ বাসায় আসার পর ২টার দিকে ঘুমিয়ে পড়েন। এ সময় শুক্কুর ও ফাতেমা মিলে লোহার শাবল দিয়ে আরিফের মাথায় আঘাত করেন। পরে গলায় গামছা পেঁচিয়ে ও মুখে বালিশচাপা দিয়ে তাকে হত্যা করেন। পরবর্তীতে মরদেহ প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে বিছানার চাদর পেঁচিয়ে পাশের পুকুরে ফেলে পালিয়ে যান।
স্থানীয়দের দেওয়া সূত্র ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের গ্রেপ্তার
করা হয় বলেও জানান পুলিশ কর্মকর্তা নাজমুল হাসান।