× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ভারতের জমি ইজারা নিয়ে বাংলাদেশিদের চাষাবাদ

মেহেরাব হোসাইন, মেহেরপুর

প্রকাশ : ০৭ আগস্ট ২০২৩ ১২:০৭ পিএম

মেহেরপুর সীমান্তের ১২৭ নম্বর পিলারের কাছে ভারতের জমিতে চাষাবাদ। প্রবা  ফটো

মেহেরপুর সীমান্তের ১২৭ নম্বর পিলারের কাছে ভারতের জমিতে চাষাবাদ। প্রবা ফটো

কাঁটাতারের বেড়া দুই বাংলার মানুষের অবাধ বিচরণ বন্ধ করতে পারলেও ভাঙেনি তাদের ভ্রাতৃত্বের বন্ধন। সীমান্তের এপার-ওপারের মানুষের একে অপরের প্রতি ভালোবাসা ও সাহায্য-সহযোগিতার প্রচলন বহু আগে থেকেই। অবিভক্ত বাংলার অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে আজও ভারতীয়দের কাছে বাংলাদেশের মেহেরপুর সীমান্তের মানুষের মর্যাদা অনেক।

মেহেরপুরের অধিকাংশ পরিবারের আত্মীয়স্বজন ভারতে বসবাস করেন। ভারতের জীতপুর, তেহট্ট, মর্শিদাবাদ থেকে দেশ ভাগের পর উঠে এসে মেহেরপুরে বসতি স্থাপন করেন অনেকেই। সীমান্তের দুই দেশের মানুষের মুখের ভাষাও অনেকটা একই রকম। সেই নাড়ির টান থেকেই ভারতীয়রা তাদের শত শত বিঘা জমি বাংলাদেশি কৃষকদের চাষের সুযোগ করে দিয়েছেন। কাঁটাতারের বেড়ার বাংলাদেশ পারে ভারতীয় ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি লিজ নিয়ে প্রতিবছর লাখ লাখ টাকার ফসল ঘরে তুলছেন বাংলাদেশি কৃষকরা। কখনও টাকা আবার কখনও ফসলের একটি নির্দিষ্ট অংশ জমির মালিককে দিয়ে চলছে চাষাবাদ। সেই চাষাবাদে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন দুই দেশের সীমান্তরক্ষীরা।

এসব জমি চাষ করতে পেরে খুশি সীমান্তের কয়েকশ কৃষক। মেহেরপুর জেলার তিন দিকই ভারত বেষ্টিত। এই সীমান্তের ৪৭ কিলোমিটারে রয়েছে হাজারখানেক হেক্টর চাষাবাদের উপযোগী জমি। ভারতীয়রা যেমন তাদের অনাবাদি জমির মূল্য, দখল ও ব্যবহার সুবিধা পাচ্ছে, তেমনি বাংলাদেশিরা কম টাকায় ও ফসলের বিনিময়ে লিজ নিয়ে কোটি টাকার ফসল উৎপাদন করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।

জমিতে নতুন ফসল উঠলে বাংলাদেশি চাষিরা জমির মালিককে উপহার হিসেবেও পাঠান কেউ কেউ। এসব জমিতে উৎপাদিত সবজি ও ফসল মেহেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি করা হয়। বছর শেষে লাখ লাখ টাকা লাভের মুখ দেখেন বাংলাদেশি চাষিরা। 

সীমান্তের চাষিরা বলছেন, এসব জমি না পেলে নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন হতো না। নিরাপদে সীমান্তের এসব জমি চাষাবাদে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। কৃষি বিভাগ ও বিজিবির হিসাবে ভারতীয়দের কয়েক হাজার হেক্টর জমি চাষাবাদ করছেন বাংলাদেশিরা।

মেহেরপুর সদর উপজেলার একেবারেই ভারত লাগোয়া সীমান্তবর্তী ইছাখালী গ্রামের কৃষক কালু মিয়া বলেন, ‘সীমান্তবর্তী গ্রামের চাষিদের ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে ভারতের জমি লিজ নিয়ে চাষ করে। একদিকে কম টাকায় লিজের জমি, অন্যদিকে সবজি ও ফসল উৎপাদন করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছি। আমি নিজেও প্রায় ১৮ বিঘা ভারতীয় মালিকানাধীন জমি চাষ করি। এসব জমির সবজি ও ফসল দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি করা হয়।’

একই গ্রামের কৃষক আয়ূব হোসেন বলেন, ‘৩০ বিঘা জমি লিজ নিয়ে আবাদ করছি। তাদের সঙ্গে সম্পর্ক অনেক ভালো। এসব জমিতে সব রকমের ফসল উৎপাদন করা যায়। ফসল উৎপাদন করে আমাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে। বছরে বিঘাপ্রতি ১০ হাজার টাকা দিতে হয় জমির মালিককে। এ ছাড়াও বিভিন্ন সময় সবজিও দেওয়া হয় তাদের।’

সীমান্তবর্তী বুড়িপোতা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহ জামান বলেন, ভারতীয় জমি চাষ করে বাংলাদেশি কৃষকরা অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখছেন। অনেক চাষি ভাগ্যের পরিবর্তনও করেছেন। দুই পারের মানুষের মাঝে সুসম্পর্ক আছে। এই চাষাবাদে দুই দেশের সীমান্তরক্ষীরা ব্যাপক সহযোগিতা করে আসছে। এতে দুই দেশের সম্পর্ক আরও মজবুত হচ্ছে।

এ ব্যাপারে বিজিবির পক্ষ থেকে অফিসিয়ালি কোনো মন্তব্য না করা হলেও তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, সীমান্তে কৃষকদের সহযোগিতা তারা সব সময় করে থাকেন। এ ছাড়াও সীমান্তে ফসল চাষ হলে সেখানে বনজঙ্গল হওয়ার সম্ভাবনা কম। সীমান্তে শান্তি বিরাজেও বড় ভূমিকা রাখেন কৃষকরা।

মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শংকর কুমার মজুমদার বলেন, ‘সীমান্তে ভারতীয় জমি লিজ নিয়ে চাষ করে মেহেরপুরের কৃষকরা ব্যাপক সাফল্য পাচ্ছেন। এটি আমাদের জেলা ও দেশের জন্য পজিটিভ দিক। এতে অর্থনীতির দিক দিয়ে আমাদের দেশ লাভবান হচ্ছে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা