ফেনী প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ আগস্ট ২০২৩ ১৯:০৭ পিএম
আপডেট : ০৬ আগস্ট ২০২৩ ১৯:৪২ পিএম
শ্রেণিকক্ষে ছাতা মাথায় শিক্ষার্থীরা। প্রবা ফটো
কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে ফেনীর পরশুরাম সরকারি পাইলট স্কুলের জরাজীর্ণ টিনশেডের চালের ফুটো দিয়ে শ্রেণিকক্ষে বৃষ্টির পানি পড়ছে। এ থেকে রক্ষা পেতে অনেক শিক্ষার্থী ছাতা মাথায় দিয়ে ক্লাস করেছে। যেসব শিক্ষার্থী আসার সময় ছাতা নিয়ে আসতে পারেনি, তাদের মধ্যে অনেকের স্কুলব্যাগ বৃষ্টিতে ভিজে গেছে। রবিবার (৬ আগস্ট) দুপুরে স্কুলে গিয়ে এ চিত্র দেখা যায়।
স্কুলে দেখা যায়, শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পুরোনো আধা-পাকা টিনশেডের কক্ষে ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষকরা। ওই ভবনে টিনের চাল ফুটো থাকায় বৃষ্টির পানি সরাসরি পড়ছে শ্রেণিকক্ষে। বৃষ্টিতে বই-খাতাসহ পোশাক ভিজে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা নিজেরাই বাড়ি থেকে ছাতা নিয়ে এসে ক্লাস করছে।
অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসেন বলে, ’একটু বৃষ্টি হলেই ক্লাসরুমের ভেতরে পানি পড়তে শুরু করে। এতে আমাদের বই-খাতা পানিতে ভিজে যায়। ক্লাস ঠিকমতো করতে পারি না। আর বৃষ্টি হলে অনেকে স্কুলে আসে না পানিতে ভিজে যাওয়ার ভয়ে।’
আরেক শিক্ষার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলম বলে, ’ক্লাসের অবস্থা খুবই খারাপ। পুরোনো ভাঙা ভবনে ক্লাস করছি। অনেক বৃষ্টি হলে স্কুলের টিনের চালের ফুটো দিয়ে ক্লাসের ভেতরে পানি পড়ে। এক সপ্তাহ ধরে শ্রেণিকক্ষের ভেতরেই আমাদের ছাতা ও পলিথিন মাথায় দিয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে। এই বর্ষাকালে এভাবে ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে।’
স্কুলের অফিস সহকারী মো. মামুনুর রশিদ জানান, বিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় শ্রেণিকক্ষ নেই। নতুন একটি ভবন থাকলেও ভবনের দ্বিতীয় তলায় প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের অফিস কক্ষ। নিচতলায় শুধু তিনটি শ্রেণিকক্ষ রয়েছে। বাধ্য হয়েই পুরোনো টিনশেড কক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চালিয়ে নিতে হচ্ছে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমান চৌধুরী বলেন, ’পুরোনো টিনশেড সংস্কারের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি। কোনো সাড়া পাইনি। বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্যকে একাধিকবার অবহিত করা হয়েছে। স্কুলের ভবনগুলো এতই জরাজীর্ণ, শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে। তা ছাড়া বর্ষা মৌসুমে শিক্ষার্থীরা ছাতা মাথায় শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে।‘
জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. সফিউল আলম তালুকদার বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। টিনশেড মেরামত করতে খুব বেশি টাকার প্রয়োজন হয় না। বর্ষা শুরুর আগেই পুরোনো টিন বদলে মেরামত করে দিলে শিক্ষার্থীদের ছাতা মাথায় দিয়ে শ্রেণিকক্ষে বসতে হতো না।’
পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দা শমসাদ বেগম জানান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে স্কুল পরিদর্শন করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।