শরীয়তপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ আগস্ট ২০২৩ ১৬:৫৬ পিএম
আপডেট : ০৬ আগস্ট ২০২৩ ১৭:৪৫ পিএম
সংগৃহীত ছবি
জুয়া খেলার প্রতিবাদ করায় ভাই ও তার স্ত্রী-সন্তানসহ বাবাকে মারধরের অভিযোগে শরীয়তপুরের গোসাইরহাট থানায় মামলা করতে যান সবুজ খালাসী নামের এক যুবক। সেই মামলা নিতে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম সিকদার ৪০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। সেই টাকার কথা সাংবাদিকদের জানানোয় ক্ষুদ্ধ হয়ে ওসি হুমকি দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন সবুজ খালাসী।
তিনি বলেন, থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ প্রথমে মামলা নিতে গড়িমসি করে। ৫ দিন পর ৪০ হাজার টাকা নিয়ে মূল অভিযুক্ত আলালপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আলাউদ্দিনের নাম বাদ দেওয়ার শর্তে মামলা নেয়। একই সঙ্গে আলাউদ্দিনের দুই ছেলে শান্ত গাজী ও শুভ গাজীর নাম তালিকায় শেষে দেওয়া হয়।
তবে টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন ওসি আসলাম সিকদার।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আলালপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আলাউদ্দিনের সঙ্গে সবুজ খালাসীর ভাই সামাদ খালাসীর জুয়া খেলা ও ভিডিওধারণ করা নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা হয়। এর জেরে গত ১ জুলাই দুপুরে সামাদ খালাসী, তার স্ত্রী মুক্তা বেগম ও তাদের শিশু সন্তানকে মারধর করে আলাউদ্দিন গাজীর ছেলে ও ভাইয়েরা। মারধরের সময় তাদের কাছে থাকা নগদ টাকাও ছিনিয়ে নেয়। হামলার খবর শুনে সামাদ খালাসীর বাবা মহিউদ্দিন খালাসী এগিয়ে গেলে তার ওপরও হামলা চালানো হয়। ঘটনার পর থেকে সামাদ খালাসী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সামাদ খালাসীর বাড়ি গোসাইরহাট উপজেলার আলালপুর ইউনিয়নের চর জালালপুর গ্রামে।
সামাদ খালাসীর ভাই সবুজ খালাসী বলেন, মামলার তদন্ত করতে এসে ঘুষ নিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শহিদুলও।
তিনি আরও বলেন, মামলার জন্য যে টাকা দিয়েছি সাংবাদিকদের তা বলার পর হুমকি দিচ্ছে পুলিশ। পুলিশ আর স্থানীয় প্রভাবশালীদের ভয়ে তাই পালিয়ে বেড়াচ্ছি।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওসি মো. আসলাম সিকদার। তিনি বলেন, অফিসিয়াল কাজে ব্যস্ত থাকায় মামলা নিতে দেরি হয়েছে। আমরা কোনো টাকা নিইনি। সে যা বলছে তা মনগড়া মিথ্যা কথা।
তদন্ত করতে এসে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগও অস্বীকার করেছেন এসআই শহিদুল। তিনি বলেন, আমি টাকা নিইনি। যদি পশ্চিমে ফিরে টাকা নেওয়ার কথা বলেতে পারে তাহলে ওকে বলতে বলেন। কাউকে দিয়েছে কি না আমি জানি না। মামলার মেরিট অনুযায়ী চার্জশিট দেব।
সামাদ খালাসী বলেন, আলাউদ্দিনের জুয়া আর অবৈধ্য বালু উত্তোলনের প্রতিবাদ করায় আমাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। পুলিশ টাকার বিনিময়ে মামলা নিয়েছে। সাংবাদিকদের কাছে টাকার কথা বলার পর নানা হুমকি দিচ্ছে। আমরা এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি।
হামলার কথা অস্বীকার করেছেন ইউপি সদস্য আলাউদ্দিন গাজী। তিনি বলেন, আমি ওদের মারধর করিনি। ওরা আমাকে আগে বেধড়ক মেরেছে। ওরা এলাকায় জুয়া খেলে, সেটা নিষেধ করায় রাতের আঁধারে আমাকে মারধর করে রাস্তায় ফেলে যায়। আমি থানায় জিডি করেছি।
শরিয়তপুরের পুলিশ সুপার মাহবুবুল আলম বলেন, মামলা করতে টাকা লাগে না। এ বিষয় আমি কিছু জানি না। যদি কেউ তাকে হুমকি দেয়, তাহলে সে জিডি করতে পারে। আর পুলিশ হুমকি দিলে আমার কাছে অভিযোগ করতে পারে সে।