× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বন্দর অরক্ষিত রেখে সীমানা প্রাচীর

তরিকুল ইসলাম মিঠু, যশোর

প্রকাশ : ০৪ আগস্ট ২০২৩ ১৩:৩০ পিএম

অস্থায়ী নিরাপত্তা বেষ্টনী না থাকায় উন্মুক্ত অবস্থায় পড়ে আছে বেনাপোল বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ মালামাল। বৃহস্পতিবার বন্দরের পেছনের অংশের ছবি। প্রবা ফটো

অস্থায়ী নিরাপত্তা বেষ্টনী না থাকায় উন্মুক্ত অবস্থায় পড়ে আছে বেনাপোল বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ মালামাল। বৃহস্পতিবার বন্দরের পেছনের অংশের ছবি। প্রবা ফটো

দেশের প্রধান ও বৃহত্তম স্থলবন্দর যশোরের বেনাপোল। ভারত থেকে প্রতিনিয়ত আমদানিকৃত মালামাল নিয়ে রাখা হয় এই বন্দরের শেডগুলোতে। বন্দরের শেড ও শেডের বাইরের মাঠে সব মিলিয়ে হাজার কোটি টাকার অধিক মূল্যের মালামাল সংরক্ষিত থাকে। সম্প্রতি বন্দরের নতুন প্রাচীর নির্মাণের জন্য ভেঙে ফেলা হয়েছে পুরোনো প্রাচীর। কিন্তু নিরাপত্তার জন্য কোনো অস্থায়ী বেড়া বা বেষ্টনী দেওয়া হয়নি। উন্মুক্ত পড়ে থাকা মালামাল চুরি হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।

জানা গেছে, বন্দরের পূর্বের প্রাচীর ছিল তিন মিটার উঁচু। বন্দরের গোডাউনের শেড থেকে অহরহ মালামাল চুরি হতো। এসব মাল চুরি করত বন্দরের আশপাশের কয়েকটি চিহ্নিত চোর চক্র। এসব চক্রের রয়েছে শতাধিক সদস্য। পত্রপত্রিকায় এসব বিষয়ে দফায় দফায় লেখালেখির পর বন্দর কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে। সিদ্ধান্ত হয় সেই পুরোনো প্রাচীর ভেঙে নতুন করে ৪ দশমিক ৬৭ মিটার উচ্চতার প্রাচীর নির্মাণের। 

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ৩৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪ হাজার ৮০০ মিটার দৈর্ঘ্যের প্রাচীর নির্মাণের একটি প্রকল্প নেওয়া হয়। প্রকল্পের কাজ পায় ঢাকার হামিম ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তারা ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে কাজ শুরু করে। ২০২৪ সালের জুনে কাজটি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

স্থানীয় ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কোনো ধরনের অস্থায়ী নিরাপত্তাবেষ্টনী ছাড়াই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি পুরোনো প্রাচীর ভেঙে নতুন প্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু করে। ফলে উন্মুক্ত হয়ে পড়ে বন্দর। দিনে ও রাতের আঁধারে ভারত থেকে আনা মূল্যবান পণ্য বন্দর থেকে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে চোর চক্রের সদস্যরা। এ ছাড়া বন্দরের নিরাপত্তাও বিঘ্নিত হচ্ছে। যত্রতত্র খোলা জায়গা দিয়ে বহিরাগতরা ঢুকে পড়ছে। সরেজমিনেও এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। 

বকুল অ্যান্ড ব্রাদার্স ও বকুল ট্রেডের স্বত্বাধিকারী আমিরুল ইসলাম বাবু বলেন, ‘বেনাপোল বন্দরের আমদানিকৃত মালামাল সব সময় কম হয়। অনেকবার অভিযোগ করেছি কর্তৃপক্ষের কাছে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। বরং অভিযোগের ফলে আরও সমস্যা তৈরি হয়। বিষয়টি নিয়ে বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনেরও দ্বারস্থ হয়েছি। আমদানিকৃত মালামাল কম হওয়া ও চুরির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। কিন্তু কখনও সমস্যার সমাধান হয় না।’  

একাধিক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, ভারত থেকে আমদানিকৃত মালামাল বন্দরের ভেতরের গোডাউনে রাখা হয়। অনেক সময় গোডাউনে জায়গা সংকটের কারণে খোলা মাঠেই রেখে দেওয়া হয়। আগে তো কিছু অসাধু ব্যক্তি বন্দরের স্টোরকিপার ও আনসার সদস্যদের সহযোগিতায় এসব মাল প্রাচীর ডিঙিয়ে পাচার করত। এখন তো একেবারে উন্মুক্ত। বন্দরে প্রবেশের জন্য কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা নেই।

অস্থায়ী নিরাপত্তাবেষ্টনী না দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক শহিদুল ইসলাম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ৩৯ কোটি টাকার প্রাচীর নির্মাণ চলছে। পূর্বের কম উচ্চতার প্রাচীর ভেঙে নতুন করে ৪ দশমিক ৬৭ মিটার উচ্চতার প্রাচীর নির্মাণ হচ্ছে। এসব কাজ করতে হলে বন্দর কিছু দিনের জন্য খোলা রাখতেই হবে। কাজ দেখাশোনার জন্য একটা কনসালটেন্সি ফার্ম রয়েছে। তা ছাড়া বন্দরের মালামালের নিরাপত্তার জন্য আনসার ও বন্দর কর্তৃপক্ষ রয়েছে। তাই এটা নিয়ে আমাদের খুব একটা ভাবার প্রয়োজন নেই।’ 

বেনাপোল কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার তানভীর রহমান বলেন, ‘বন্দরের মালামাল প্রায় সময় কম হয়। তবে এসব মাল আসলে ভারত থেকে কম আসে নাকি বন্দরের শেড থেকে চুরি হয়ে যায়, সেটা জানা নেই।’

বন্দর পরিচালক মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এ বিষয়ে কিছুই জানি না। এটি বন্দরের উপপরিচালক (প্রশাসন) আব্দুল জলিল ভালো বলতে পারবেন। তা ছাড়া কাজটি ঢাকা থেকে সরাসরি করানো হচ্ছে। তাই কাজের পরিচালকের সঙ্গে কথা বললে বিষয়টি জানা যাবে।’

উপপরিচালক (প্রশাসন) আব্দুল জলিলের মোবাইল ফোনে দফায় দফায় কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। এ ছাড়া প্রকল্প পরিচালক সরোয়ার হোসেনের ফোনে বারবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা