বান্দরবান প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ আগস্ট ২০২৩ ১২:৩৯ পিএম
আপডেট : ০৪ আগস্ট ২০২৩ ১৫:১৬ পিএম
বান্দরবানে ভারী বর্ষণে পাহাড়ধসের আশঙ্কায় পৌরসভায় মাইকিং করে সচেতন করা হচ্ছে। প্রবা ফটো
বান্দরবানে টানা দুই দিনের ভারী বর্ষণের কারণে পাহাড়ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে মাইকিং করছে বান্দরবান পৌরসভা।
বান্দরবান আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. এমদাদুল হক প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় বান্দরবানে ৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া আগামী ৪৮ ঘণ্টার পূর্ভাবাসে বলা হয়েছে, বঙ্গোপসাগরে নিম্ন-লঘু চাপের কারণে চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। এ কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও পাহাড়ধসের আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বান্দরবানের সদর উপজেলার কালাঘাটা, কাসেমপাড়া, ইসলামপুর, বনরূপাপাড়া, হাফেজঘোনা, বাসস্টেশন এলাকা, স্টেডিয়াম এলাকা, নোয়াপাড়া, কসাইপাড়া; রুমা উপজেলার হোস্টেলপাড়া, রনিনপাড়া; লামা উপজেলার হরিণমারা, তেলুমিয়াপাড়া, ইসলামপুর, গজালিয়া, মুসলিমপাড়া, চেয়ারম্যানপাড়া, হরিণঝিড়ি, টিঅ্যান্ডটি এলাকা, সরই, রূপসীপাড়া; নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার উত্তরপাড়া, বাইশফাঁড়ি, আমতলী, রেজু, তুমব্রু, হেডম্যানপাড়া, মনজয়পাড়া, দৌছড়ি, বাইশারীসহ সাত উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ের পাদদেশে ৩০ হাজারের বেশি পরিবারের অপরিকল্পিত বসবাস। টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ধসের আশঙ্কায় পরিবারগুলো ঝুঁকিতে রয়েছে।
বান্দরবানের মৃত্তিকা ও পানি সংরক্ষণ কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, ৩ আগস্ট সকাল ৯টা পর্যন্ত ৩৫ মিলিমিটার এবং ৪ আগস্ট সকাল ৯টা পর্যন্ত ৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আরও দুয়েকদিন থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হতে পারে। অতিরিক্ত পরিমাণে পাহাড় কাটার ফলে পাহাড়ে মাটির ওপরের রক্ষাস্তর সরে গিয়ে ভেতরের নরম অংশ বেরিয়ে আসে। এর ফলে ভূমিক্ষয়ের মাধ্যমে পাহাড়ে ফাটল তৈরি হয়। এ অবস্থায় বর্ষার ভারী বর্ষণে পাহাড়ের ফাটলে পানি ঢুকে ধসে পড়ে।
বান্দরবান পৌরসভার বালাঘাটা এজাহার মিয়া ঘোনা এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী আবদুর রশিদ বলেন, ‘টাকার অভাবে কম দামে পাহাড় থেকে জায়গা কিনেছি। ঝুঁকি আছে জেনেও পাহাড়ের নিচে একটু জায়গা সমান করে পরিবার নিয়ে কোনোরকমে থাকি।’
ইসলামপুরে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী ফাহমিদ বলেন, ‘এ ঘর ছাড়া আমাদের অন্য কোনো অবলম্বন নেই। তাই আমরা বাধ্য হয়েই এখানে বাস করছি।’
এ বিষয়ে বান্দরবান জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) শেখ আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘দুর্যোগ মোকাবিলায় সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা আছে। পাহাড়ধসের ঝুঁকিতে থাকা সব বসবাসকারীকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে ইতোমধ্যে প্রতিটি উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ইউএনওকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সচেতনতা বাড়াতে মাইকিং করা হচ্ছে।’