মধ্যাঞ্চলীয় অফিস
প্রকাশ : ০৪ আগস্ট ২০২৩ ১০:৩১ এএম
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার শাহিনুর আক্তার জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতায় সেরাদের সেরা হয়েছে। গত ২৭-৩০ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ শিশু একাডেমি আয়োজিত ‘জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতা-২০২২ ও ২০২৩’-এ ১০০ মিটার দৌড়, দীর্ঘ লাফ ও উচ্চ লাফসহ পাঁচটি ইভেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয় সে। বাংলাদেশ শিশু একাডেমি তাকে তিন বছরের জন্য দূত হিসেবে মনোনীত করেছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক শিশু সম্মেলনে যোগ দিতে বিদেশ যাওয়ারও সুযোগ পাবে সে।
শাহিনুর আক্তার পাকুন্দিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সে উপজেলার চরফরাদী গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমানের মেয়ে। মা হাফিজা আক্তার একজন গৃহিণী। শাহিনুরের এমন কৃতিত্বে পরিবার, শিক্ষক, সহপাঠীসহ এলাকাবাসী খুবই খুশি।
বিদ্যালয় ও শাহিনুরের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ছোটবেলা থেকেই পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধুলার প্রতি বিশেষ মনোযোগ ছিল শাহিনুরের। সে তার মায়ের কাছ থেকে খেলাধুলার বিষয়ে মনোযোগ লাভ করে। চরফরাদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ার সময়েই দৌড়, লাফসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় পুরস্কার অর্জন করে। পরে পাকুন্দিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েও তা অব্যাহত রাখে। তার ক্রীড়া নৈপুণ্য শরীরচর্চা শিক্ষকসহ প্রধান শিক্ষকের নজরে এলে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। ফলশ্রুতিতে সে ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
শাহিনুর গত বছরেও ১০০ মিটার দৌড় ও দীর্ঘ লাফে জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। পরপর দুই বছর সে দৌড়, দীর্ঘ লাফ ও উচ্চ লাফসহ পাঁচটি ইভেন্টে জাতীয়ভাবে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করায় বাংলাদেশ শিশু একাডেমি তাকে ‘দূত’ হিসেবে মনোনীত করে। এ ছাড়া শাহিনুর আক্তার তার এ বয়সে দুটি স্বর্ণপদকসহ ৬০টির বেশি সার্টিফিকেট, অসংখ্য মেডেল ও ১৬টির মতো চ্যাম্পিয়ন ট্রফি অর্জন করেছে।
শাহিনুরের মা হাফিজা আক্তার বলেন, ‘আমিও স্কুল জীবনে খেলাধুলায় ভালো ছিলাম। পরিবারের অসচ্ছলতার কারণে নবম শ্রেণির বেশি পড়ালেখা করতে পারিনি। তাই আমার স্বপ্ন মেয়েকে দিয়ে পূরণ করার ইচ্ছা পোষণ করেছি। তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে একজন ক্রীড়াবিদ হিসেবে সাপোর্ট দিয়ে আসছি। আন্তর্জাতিকভাবে সে যেন দেশের সুনাম বয়ে আনতে পারে, সেজন্য সকলের কাছে দোয়া চাই।’
পাকুন্দিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফছর উদ্দিন আহম্মদ মানিক বলেন, ‘শাহিনুর একজন প্রতিভাবান শিক্ষার্থী। বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর তার ক্রীড়া নৈপুণ্য আমাদের নজর কাড়ে। এরপর তাকে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য শরীরচর্চা শিক্ষকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়। পাশাপাশি পড়ালেখাসহ সকল পর্যায়ে তাকে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হচ্ছে। শাহিনুরের এ কৃতিত্বে আমরা শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষার্থীসহ সবাই গর্বিত।’