বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ আগস্ট ২০২৩ ১১:৪৩ এএম
প্রকাশ্যে শ্রমিকদের দিয়ে জমির মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে প্রভাবশালীরা। প্রবা ফটো
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়নের চর-শিবপুর গ্রামের বাইদারচরের ফসলি জমি থেকে অবৈধভাবে মাটি কেটে নিচ্ছে প্রভাবশালী একটি মহল। দিনরাত চলছে মাটি কাটার এ মহোৎসব। এতে ডোবায় পরিণত হচ্ছে ফসলি জমি। ফলে দিন দিন এখানে ফসলের উৎপাদন কমছে, বেকার হচ্ছে কৃষক। একই সঙ্গে হুমকিতে পড়ছে পরিবেশ।
স্থানীয়রা জানায়, প্রতিদিন ভোরে ৭-৮টি ট্রলারে করে এসব চরের মাটি যাচ্ছে নরসিংদীর চরদিঘলদীতে। গত মঙ্গলবার ও বুধবার (২ আগস্ট) সরেজমিন গিয়ে এর সত্যতা মিলেছে। বাইদারচরে গিয়ে দেখা যায়, ফসলি জমির মাটি কেটে স্টিলের ট্রলারে ভরা হচ্ছে। কিছু ট্রলার মাটি ভরে নরসিংদীর চরদিঘলদীতে রওনা হয়েছে। কয়েকজন মাটিকাটা শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা রাতেও মাটি কেটে এভাবে ট্রলারে করে নিয়ে যায়।
এ নিয়ে কথা হয় চর-শিবপুর গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে। তারা বলছেন, প্রতিবাদ করলে হামলার শিকার হতে হয় তাদের। ট্রলারে দেশীয় অস্ত্র রাখে মাটিকাটা শ্রমিকরা। মাটি কাটতে নিষেধ করলে ধারালো অস্ত্র নিয়ে তারা গ্রামবাসীর ওপর হামলা করে। গ্রামের বাসিন্দারা আরও বলেন, পুলিশে অভিযোগ দেওয়ার পর মঙ্গলবার সকালে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার কয়েকজন পুলিশ সদস্য এখানে আসেন। পুলিশ দেখে তাৎক্ষণিক মাটি চোরেরা ট্রলার নিয়ে সটকে পড়ে।
চর-শিবপুর গ্রামের কৃষক জামাল মিয়া বলেন, ‘এই বাইদামারার চর আমাদের বাপ-দাদার ভূমি। আগে থেকেই নরসিংদীর চরদিঘলদীর মানুষ চরটি দখলের চেষ্টা করছে। এ নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছিল। মামলার রায় অনুযায়ী চরের প্রকৃত মালিক চর-শিবপুরের মানুষ। বাইদারচরের মৌজাও চর-শিবপুরের নামে। দিঘলদীর বা নরসিংদীর মৌজা বা দলিলে কোনো কিছু নাই। যদি থাকে আমাদেরকে দেখানো হোক। কিন্তু এভাবে অত্যাচার করে চর নষ্ট করা আমরা মেনে নিতে পারছি না। আমাদের চোখের সামনে ভয়ভীতি দেখিয়ে ফসলি জমি নষ্ট করে মাটি চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে নরসিংদীর চরদিঘলদীর চোর সিন্ডিকেট। চর শিবপুরের পৈতৃক সম্পত্তি রক্ষার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা চাই আমরা।’
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী আতিকুর রহমান বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা মাটিকাটা বন্ধ করতে চর-শিবপুর বাইদার চরে পুলিশ পাঠিয়েছি। মাটি চোর সিন্ডিকেটে যারাই জড়িত থাকুক না কেন আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’