বাগেরহাট প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ আগস্ট ২০২৩ ২২:৫৩ পিএম
আপডেট : ০১ আগস্ট ২০২৩ ২৩:৩৭ পিএম
এই লেকে ডুবে বশেমুরবিপ্রবির দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। প্রবা ফটো
বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া নাতনি তাসপিয়া জাহান রিতুকে হারিয়ে পাগলপ্রায় নানা-নানি। নাতনির শোকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন নানা এবারত আলী মোল্লা। মেয়ের জামাইকে কী বলে সান্ত্বনা দেবেন সেই চিন্তায় নির্বাক নানি হাওয়া বেগম। পাড়া-প্রতিবেশী সান্ত্বনা দিলেও মন মানছে না তাদের। মঙ্গলবার (১ আগস্ট) বিকালে এমন হৃদয় বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার বেতাগী ইউনিয়নের মাসকাটা গ্রামে রিতুর নানা বাড়িতে।
এদিন দুপুরে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকের পানিতে ডুবে মৃত্যু হওয়া দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন তাসপিয়া জাহান রিতু। ছোটবেলা থেকে মাসকাটা গ্রামে নানা-নানির কাছেই বড় হয়েছেন তিনি। বাবার ব্যবসা-চাকরি এবং ছোট বোনকে দেখভালের কারণে বাবা-মা থাকেন চাঁদপুরে। ২০১৭ সালে ফকিরহাটের বেতাগা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও ২০১৯ সালে খুলনার বয়রা মহিলা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষে গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন রিতু।
স্থানীয়রা জানায়, ছোট থেকেই নানার কাছে বড় হয়েছেন রিতু। ছুটিতে বাড়িতে এলেও নানা-নাতনি ঘুরে বেড়াতেন। মেতে উঠত খুনসুটিতে। এখন এসব শুধুই স্মৃতি। নাতনির মৃত্যুর খবরে নানা-নানি দুজনই পাগলপ্রায়। কাঁদতে কাঁদতে কয়েকবার জ্ঞানও হারিয়েছেন তারা। এদিকে মেয়ের মৃত্যুর খবর শোনার সাথে সাথে চাঁদপুর থেকে রওনা দিয়েছেন রিতুর বাবা আব্দুর রব ও মা রুমা বেগম।
নানা এবারত আলী মোল্লা বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে অনেক কষ্টে রিতুকে বড় করেছি। কোনদিন বাবা-মায়ের অভাব বুঝতে দেইনি। আমাদের রেখে চলে গেল, কে আমাকে নানা বলবে। কে বলবে পড়শুনা শেষে চাকরি পেলে, তার সাথে থাকার কথা।’
নানি হাওয়া বেগম বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে রিতুকে আগলে রেখেছি। এখন চলে গেল, কী জবাব দেব তার মা-বাবাকে।’ এসব বলছিলেন আর বিলাপ করছিলেন তারা।
রিতু নানা বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন বলে জানান ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আসাদুজ্জামান তুহিন।