প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০১ আগস্ট ২০২৩ ২২:২৬ পিএম
আপডেট : ০২ আগস্ট ২০২৩ ০১:০৬ এএম
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কর্তৃপক্ষের কাছে সম্মানী ভাতা হস্তান্তর করছেন যুদ্ধাহত নারী বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারিজা খাতুন। প্রবা ফটো
হবিগঞ্জ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের উন্নয়নে নিজের ভাতা থেকে ১০ হাজার টাকার অনুদান দিয়েছেন বানিয়াচং উপজেলার হলদারপুর গ্রামের মৃত আব্দুল হেকিমের মেয়ে যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারিজা খাতুন।
একই সঙ্গে প্রতিমাসে এই মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে ২ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া তার মৃত্যু পরবর্তী সময়েও প্রতিমাসে ২ হাজার টাকা করে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে অনুদান দেওয়ার জন্য ছোট ভাইকে নির্দেশ দিয়েছেন ফারিজা খাতুন।
মঙ্গলবার (১ আগস্ট) বিকালে হবিগঞ্জ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের উদ্যোগে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ ঘোষণা দেন।
হবিগঞ্জ মহিলা কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ আব্দুজ জাহেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফারিয়া খাতুন। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন হবিগঞ্জ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সভাপতি সাবেক অধ্যক্ষ মো. একরামুল ওয়াদুদ, সাধারণ সম্পাদক রাজেশ চন্দ্র দাস গুপ্ত, অ্যাডভোকেট দীপেন্দ্র চন্দ্র দাস, অনুপ কুমার দেব মনা, অজয় চন্দ্র দেব, শেখ ফজলে এলাহী, মুহাম্মদ সায়েদুর রহমান তালুকদার, দৈনিক যুগান্তর ও একুশের টিভির হবিগঞ্জ প্রতিনিধি সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোখন, দৈনিক আমার হবিগঞ্জ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক নুরুজ্জামান মানিক, দৈনিক ভোরের ডাক পত্রিকার হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি এম এ রাজা প্রমুখ।
মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল পাক হানাদার বাহিনী মুক্তিযুদ্ধের উপ-সর্বাধিনায়ক মেজর জেনারেল এম এ রবের বাড়ি মনে করে হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার হলদারপুর গ্রামে বিমান থেকে শেল নিক্ষেপ করে। এতে ১০ জন নিহত হন। আহত হন অনেকে। সেদিন শেলের আঘাতে ফারিজা খাতুনও একটি পা হারান। মুক্তিযুদ্ধে পা হারানো ফারিজা খাতুন জীবনে বিয়েও করেননি।
মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হলেও ওই ঘটনায় পঙ্গু ফারিজা খাতুনসহ ছয় নারী পাননি কোনো সাহায্য ও স্বীকৃতি। হবিগঞ্জের মুক্তিবাহিনীর অগ্রসৈনিক বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডেন্ট মানিক চৌধুরীর কন্যা চেতনায়-৭১ হবিগঞ্জ এর সদস্য সচিব (সাবেক সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি) কেয়া চৌধুরী আহত নারীদের খুঁজে বের করে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন।
তার (কেয়া চৌধুরী) চেষ্টায় স্বাধীনতার ৪২ বছর পর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ২০১৩ সালের ১২ই ডিসেম্বর হবিগঞ্জের ওই ছয় নারীকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে গ্যাজেট প্রকাশ করে। এরপর থেকে তারা পাচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা।