× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

অনাবৃষ্টির সঙ্গে লোডশেডিং, ব্যাহত আমন আবাদ

কুড়িগ্রাম প্রতিবেদক

প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২৩ ১৪:২৯ পিএম

আপডেট : ৩১ জুলাই ২০২৩ ১৫:২১ পিএম

অনাবৃষ্টির সঙ্গে লোডশেডিং, ব্যাহত আমন আবাদ

কুড়িগ্রামে তৃতীয় দফা বন্যার পর অনাবৃষ্টি ও অস্বাভাবিক লোডশেডিংয়ের কারণে জমিতে সেচ দিতে না পারায় আমন আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক। মৌসুমের শুরুতেই খরায় আমনের অনেক বীজতলা লাল বর্ণ ধারণ করেছে। এতে আমন চাষ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন জেলার প্রান্তিক চাষিরা। বৃষ্টি না হলে আমন ফসলের আশানুরূপ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা। 

আমন আবাদের জন্য জমি প্রস্তুত ও জমিতে লাগানো চারা বাঁচাতে এখন কৃষকদের ভরসা ভূগর্ভস্থ পানি। বর্ষানির্ভর আমন চাষে এখন অনাবৃষ্টির কারণে সেচ দিতে খরচ বাড়ছে কৃষকের। কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জেলার ৯টি উপজেলায় কমবেশি সব এলাকাতেই এবার খরার কবলে পড়েছে আমন। এর মধ্যে সদরের ভোগডাঙ্গা, পাঁচগাছী, উলিপুর উপজেলার থেতরাই, বজরা, ধামশ্রেণী ও রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা, বিদ্যানন্দ, নাজিমখাঁ এবং ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা এবং নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের অবস্থা বেশি খারাপ। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় মৌসুমের শুরু থেকেই কৃষকরা গভীর-অগভীর সেচযন্ত্র চালু করে আমনের চারা লাগাচ্ছেন।

এদিকে লোডশেডিংয়ের কারণে সেচকাজও ব্যাহত হচ্ছে। সঠিক সময়ে জমিতে সেচ দিতে না পারায় আমনের ক্ষেত ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় চলতি মৌসুমে ১ লাখ ২০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ২৮ হাজার হেক্টর জমিতে চারা লাগানো হয়েছে। সেচের জন্য মাঠে রয়েছে ৩০ হাজার সেচযন্ত্র। খরা মোকাবিলায় বিদ্যুৎ ও ডিজেলচালিত সেচযন্ত্রের প্রায় সবগুলোই চালু রয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণে প্রস্তুত রয়েছে ৭ হাজার হেক্টর আমন বীজতলা।

কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখন এক বিঘা জমিতে বিদ্যুৎ ও ডিজেলচালিত সেচযন্ত্র দিয়ে সেচ দিতে বর্তমানে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত খরচ পড়ছে। আমনের চারা লাগানোর জন্য জমি প্রস্তুত ও খরার কবলে পড়া আমনের চারা বাঁচাতে ইতোমধ্যে কমপক্ষে দুবার সেচ দিতে হয়েছে। এই মৌসুমে এভাবে অনাবৃষ্টি থাকলে আরও ছয়বার সেচ দিতে হবে। সেই হিসাবে জেলার ১ লাখ ২৮ হাজার হেক্টর আমনের ফসল রক্ষায় এবার সেচের খরচ বাবদ ব্যয় হবে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা।

কৃষকরা বলছেন, জুনের শেষ সপ্তাহ ও জুলাইয়ের প্রথম চার-পাঁচ দিন প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টি হয়েছিল। মাঠের অনেক জমিতে পানিও জমে গিয়েছিল। কিন্তু তখন জমি প্রস্তুত না হওয়ায় ও বীজতলার চারার বয়স কম থাকায় কৃষকরা ধানের চারা লাগাতে পারেননি। সাধারণত জুলাইয়ের এক-দুই সপ্তাহ পর থেকে আগস্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত আমনের চারা লাগানোর উপযুক্ত সময়। এখন বৃষ্টির দরকার, কিন্তু বৃষ্টির দেখা নেই। ১৫-২০ দিন ধরে কুড়িগ্রামে ভারী বৃষ্টি হয়নি। এ সময়ে কখনও টিপটিপ, কখনও এক পশলা বৃষ্টি হলেও বর্ষানির্ভর আমন চাষের জন্য তা নগণ্য। 

কুড়িগ্রাম পৌর এলাকার উত্তর মরাকাটা গ্রামের কৃষক লাল বেহারী বলেন, ১৫ দিন ধরে আমাদের এলাকায় ভারী বৃষ্টি হয়নি। খরার কারণে চারা লাগানোর জন্য প্রস্তুত করা জমির মাটি ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। যেসব জমিতে চারা লাগানো হয়েছে পানির অভাবে ওই সব চারা মরে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়েছে। একদিকে খরা আরেকদিকে চলছে লোডশেডিং। এতে প্রতিবিঘা জমিতে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ বেড়ে যাচ্ছে। আবাদ করার চেয়ে না করাই ভালো মনে হচ্ছে।

সদর উপজেলার নওয়াবশ গ্রামের কৃষক ছয়ফুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টি তো নাই। তার ওপর ঘণ্টায় ঘণ্টায় লোডশেডিং। এভাবে চলতে থাকলে এবার আবাদ করা সম্ভব নয়। তা ছাড়া শ্যালোমেশিন দিয়ে সেচ দিলে প্রচুর খরচ। আর বৃষ্টির অপেক্ষায় থাকতে থাকতে আমনের সময় পার হলে ফলন ভালো হয় না।

উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের কৃষক খচমত আলী বলেন, গত বছরও আষাঢ়-শ্রাবণ মাস ঠিকমতো বৃষ্টি ছিল না। ডিপ টিউবওয়েল চালিয়ে সেচ দিয়ে ধান লাগাতে হয়েছিল। এবারও একই অবস্থা। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে খরচও বেড়েছে। তা ছাড়া সেচের সিরিয়াল পেতে হুড়োহুড়ি লেগেই থাকছে কৃষকের মাঝে।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, বৃষ্টিপাত কিছুটা কম হলেও আমনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে এখনই চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। আমনের মৌসুম কেবলই শুরু হয়েছে। আগস্ট মাসজুড়েই আমনের চারা লাগানো যাবে। আশা করছি আবহাওয়া অনুকূলে থাকবে এবং আমরা আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করব।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা