লাম্পি স্কিন
ঠাকুরগাঁও প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২৩ ১৬:৩৪ পিএম
গরুর লাম্পি স্কিন রোগ। ছবি : সংগৃহীত
ঠাকুরগাঁওয়ে সদরসহ ৫ উপজেলায় গবাদি পশুর শরীরে দেখা দিয়েছে লাম্পি স্কিন রোগ। এই রোগে আক্রান্ত হয়ে কয়েকশ গরু ইতোমধ্যে মারা গেছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন গরুর খামারিরা। রোগাক্রান্ত গরু চিকিৎসায় অনেকে ছুটে যাচ্ছে পশু অফিসে, কেউ ছুটছেন কবিরাজের কাছে। তবুও কমছে না গবাদি পশু মৃত্যুর সংখ্যা। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা ভেক্সিন দিয়ে রোগ প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলেও খামারিদের দাবি, এতে কাজ হচ্ছে না।
সদর আখানগড় ইউনিয়নের গরু খামারি রনি আহমেদ বলেন, আমার খামারে ৭টি গরু আছে তার মধ্যে ৩টি গরু লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়ে ২টি গরু মারা যায়। এ ছাড়া একটি গরুর অবস্থা অনেক খারাপ। এই রোগটা এমন যে গরুর শরীরে ক্ষত হয়ে রস পড়ে। শুরুতে গরু জ্বরে আক্রান্ত হয়। কিছু খেতে চায় না। মুখ দিয়ে লালা পড়ে।
সদর সালন্দর ইউনিয়নের গরুর খামারি আফতাব উদ্দিন বলেন, আমার এলাকার কোনো বাড়ির গরু বাদ নেই যে ভাইরাসে কোনো গরু আক্রান্ত হয়নি। এই রোগের লক্ষণ প্রথমে গরুর জ্বর হয়, এর পর গা গুটি গুটি হয়ে ফুলে যায়। ঘা পেকে ফেটে গিয়ে পুঁজ বের হয়। আমার মোট ১০টি গরু। তার মধ্যে ৪টা গরু আক্রান্ত এই রোগে। এই গরুগুলোকে আলাদা রাখছি।
নারগুন ইউনিয়নের মতিউর রহমান বলেন, আমার বাড়িতে ৪টি গরু রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকদিন আগে একটি গরু মারা যায়। ছোট বাচ্ছুরটাও আক্রান্ত হয়েছে। ডাক্তার বা পশু কর্মকর্তার পরামর্শে কাজ না হওয়ায় কবিরাজ দিয়ে গরুর চিকিৎসা করানো হচ্ছে।
চিলারং ইউনিয়নের বাসিন্দা আবু বক্কর বলেন, কয়েক মাস আগে আমার গাভিসহ বাচ্চা রোগে আক্রান্ত হয়। অনেক টাকা খরচ করছি। ডাক্তারদের জিজ্ঞেস করলে বলেন, এ রোগের সুনির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। যা আছে সেটা প্রয়োগ করা হয়েছে। তবে কবিরাজি চিকিৎসা নিয়েও গরু দুটি বাঁচানো যায়নি। এখন আর কোনো গরু নাই। সব শেষ।
আকচা ফাড়াবাড়ির মালেক হোসেন বলেন, এই লাম্পি রোগের আগে গরু কম মরত। তবে এইবার অনেক বেশি মারা যাচ্ছে। আমার দুটি গরুর একটির শরীরে দেখি গুটি গুটি কিছু একটা বের হয়েছে এবং লোম পড়ে যাচ্ছে। তখন আমি কবিরাজের কাছে গরু ২টাকে নিয়ে যাই। এখন সুস্থ আছে। কোনো সমস্যা নেই।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবুল কালাম আজাদ জানান, কোরবানি ঈদের পরে থেকে এই জেলায় লাম্পি স্কিন রোগে গরু আক্রান্ত হচ্ছে। তবে অনেক আক্রান্ত গরু আবার সুস্থ হয়েছে। যে খামারি গবাদি পশুর চিকিৎসা নিতে দেরি করছে তাদের গরু বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে না। এর কারণ তারা পশু ডাক্তারের কাছে না গিয়ে কবিরাজি চিকিৎসা নেওয়ায় গরুর মৃত্যু বেড়েছে। তবে আমরা ভ্যাকসিন দিয়ে এই রোগ প্রতিরোধ করার চেষ্টা করছি।