কৃষ্ণ মোহন ব্যানার্জী, সাতক্ষীরা
প্রকাশ : ২৮ জুলাই ২০২৩ ১৫:৪৮ পিএম
আশাশুনি উপজেলার বড়দল ইউনিয়নের লক্ষ্মীখোলা কমিউনিটি ক্লিনিকের ঝুঁকিপূর্ণ ভবন। প্রবা ফটো
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বড়দল ইউনিয়নের লখোলা কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এ ভবনে এখনও চলছে সেবা কার্যক্রম। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে কমিউনিটি ক্লিনিকে বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। ক্লিনিক থেকে পুরোপুরি সুফল পাচ্ছে না সাধারণ জনগণ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দুই কক্ষবিশিষ্ট ভবনটির চারপাশের দেয়ালে ফাটল ধরেছে। পলেস্তারা খসে বেরিয়ে পড়েছে ইট। ছাদ থেকেও খসে পড়ছে পলেস্তারা। ছাদের বেশ কয়েকটি জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। বৃষ্টি হলেই ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে। ভবনের নিচের পিলার ও বিমের পলেস্তারাও খসে পড়েছে। বেশ কয়েকটি জায়গায় মরিচা ধরা রড বের হয়ে গেছে। অধিকাংশ জানালা মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে ভেঙে গেছে। বৃষ্টি হলে জানালা দিয়ে ভেতরে পানি আসে। শৌচাগারটিও ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে গেছে।
শুরু থেকেই ভবনে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। নেই সুপেয় পানির ব্যবস্থাও। এমন অবস্থায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সেবাগ্রহীতাদের। তারা অধিকাংশ সেবা থেকেই বঞ্চিত হচ্ছে। পাশাপাশি চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে ক্লিনিকের সেবাদাতাদেরও। এমন অবস্থায় জরাজীর্ণ ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ক্লিনিকে কর্মরত কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) সেলিনা আক্তার বলেন, ‘২০০১ সালে নির্মাণের পর থেকেই এখানে কর্মরত আছি। ভবনটির অবস্থা খুবই বেহাল। সব সময় দুর্ঘটনার আতঙ্কে থাকি। বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় গরমে কষ্ট করতে হয়। জরুরি প্রয়োজনে শৌচাগার ব্যবহারের প্রয়োজন হলে পাশের বাড়ি যেতে হয়। সুপেয় পানির ব্যবস্থা না থাকায় ওষুধও সেবন করা যায় না। তা ছাড়া বৃষ্টি হলেই পাশের ঘেরের বেড়িবাঁধ ছাপিয়ে ক্লিনিক চত্বরের সামনের অংশ পানিতে ডুবে যায়।’
সেবা নিতে আসা পঞ্চানন সরদার নামে একজন বলেন, ‘ভবনের যে অবস্থা তা দেখে ভেতরে ঢুকতে ভয় করে। ভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। দরজা জানালা ভাঙা অনিরাপদ হয়ে গেছে, আশপাশে পানি জমে থাকায় ভবনে বিষাক্ত সাপ ওঠে। ভবনটির যে অবস্থা তাতে সংস্কার করলেও কাজ হবে না। তাই দ্রুত এখানে নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।’
ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জগদীশ চন্দ্র সানা বলেন, ‘ক্লিনিকটা এ অঞ্চলের প্রান্তিক মানুষের সেবাদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। জরাজীর্ণ ভবনের কারণে সেবাদান ব্যাহত হচ্ছে। উপজেলা পরিষদের মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি। পানি নিষ্কাশন ও মাটি ভরাটের কাজ দ্রুত শুরু করব।’
জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা মিজানুল হক বলেন, ‘ভবনটির বেহাল অবস্থার বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। অন্য সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’