কুষ্টিয়া প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ জুলাই ২০২৩ ২০:০৪ পিএম
আপডেট : ২১ জুলাই ২০২৩ ২০:১৩ পিএম
জিয়াউল হক কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। প্রবা ফটো
এনআইডি সংশোধনীর জন্য দেওয়া ঘুষের টাকা ফেরত আনতে গিয়ে জিয়াউল হক জিয়া নামে নিখোঁজ সেই মাদ্রাসা প্রহরীর সন্ধান পাওয়া গেছে। তিনি ১৫ দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন বলে পরিবারের দাবি।
শুক্রবার (২১ জুলাই) বিকালে গ্রামের এক মেয়ে তাকে কুষ্টিয়া কোর্ট স্টেশন চত্বরে পড়ে থাকতে দেখে তার পরিবারকে খবর দেয়। পরে পরিবারের সদস্যরা জিয়াকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেছে। তিনি কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার শোমসপুর ইউনিয়নের শোমসপুর মোল্লাপাড়া এলাকার বাসিন্দা এবং হুসনুল উলুম আলিম মাদ্রাসার নৈশপ্রহরী।
খবর পেয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, জিয়াকে ৫ নং ওয়ার্ডের মেঝেতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তার মুখে ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
জিয়া জানান, স্ত্রীর এনআইডি (জাতীয় পরিচয়পত্র) সংশোধনের জন্য বাঁধন ও রানা নামে দুই যুবককে আড়াই লাখ টাকা দিয়েছিলাম। আট মাস হয়ে গেলেও তা সংশোধন করা হয়নি। ৬ জুলাই কুমারখালী উপজেলার শেরকান্দি এলাকায় বাঁধনের বাড়িতে সেই টাকা ফেরত আনতে যাই। এ সময় রানাও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল। বাঁধন আমাকে বলে একটা টাকাও ফেরত দেব না। বেশি কথা বললে তোর ছেলেকেও গুম করা হবে।
তর্কাতর্কির একপর্যায়ে বাঁধন, রানাসহ বেশ কয়েকজন মিলে আমাকে মারধর শুরু করে। মারধরের একপর্যায়ে আমি অচেতন হয়ে পড়লে তারা আমাকে একটি অন্ধকার ঘরে আটকে রাখে। মাঝেমধ্যে চোখ খুলে দেখি চারদিকে অন্ধকার। আমার আর কিছু মনে নেই। আজ তারা আমাকে কুষ্টিয়া শহরের কোর্ট স্টেশন এলাকায় ফেলে রেখে যায়।
জিয়ার ছেলে জিহাদ হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ’বাবা নিখোঁজের পরদিন কুমারখালী থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। পরে আদালতে মামলা করলে আদালত সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেন।’
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিবুর ইসলাম বলেন, ’উদ্ধার হওয়ার ঘটনাটি আমি জানার পরেই জেনারেল হাসপাতালে তদন্তকারী কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছি। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা পলাতক রয়েছে। তাদের ফোনও বন্ধ রয়েছে। তাদের অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা চলছে।’
জানা গেছে, রানা ও বাঁধন এনআইডি জালিয়াতির কাজ করে মানুষের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। চক্রের সদস্য বাঁধন হোসেন কুমারখালী পৌরসভার শেরকান্দি এলাকার মো. আনোয়ার হোসেনের ছেলে এবং রানা হোসেন খোকসা উপজেলার চরপাড়া এলাকার মো. ফরিদের ছেলে।