বগুড়া অফিস
প্রকাশ : ২০ জুলাই ২০২৩ ১৫:৫১ পিএম
আপডেট : ২০ জুলাই ২০২৩ ১৮:২৫ পিএম
অভিযুক্ত পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রবা ফটো
স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে বড় বোনের মেয়েকে নিয়ে ঢাকা থেকে রংপুরে আত্মীয়ের বাড়ি যাচ্ছিলেন এক পোশাককর্মী। পথে বগুড়ার বারপুরে তাদের বাস নষ্ট হয়। তিনি কাহালু উপজেলার পাইকড় ইউনিয়নের কুশলিহার পূর্বপাড়া গ্রামে তার সহকর্মীর পরিচিত একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখান থেকে বের হওয়ার পর ১৫ বছর বয়সি বড় ভাগ্নিসহ সংঘবদ্ধ ‘ধর্ষণের শিকার’ হন ওই নারী। এ ছাড়া তাদের কাছ থেকে অর্থ, স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোন নিয়ে যায় অভিযুক্তরা।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) রাত সোয়া ৮টার দিকে কাহালু উপজেলার পাইকড় ইউনিয়নের বাগইল পশ্চিমপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে বলে বুধবার (১৯ জুলাই) কাহালু থানায় করা মামলায় উল্লেখ করেছেন ওই নারী। বৃহস্পতিবার ভোর ৬টার দিকে কাহালুর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন, কাহালু উপজেলার কুশলীহার পূর্বপাড়ার বাসিন্দা আবুল কাশেম মানিক ও হাবিবুর রহমান হাবিব, বাগইল দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা রাকিব হাসান, একই গ্রামের উত্তরপাড়ার শাকিল হোসেন ও আতিক রহমান প্রান্ত।
বৃহস্পতিবার ১২টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী।
পুলিশ সুপার জানান, এক নারী ঢাকার নারায়ণগঞ্জের একটি গার্মেন্টসে ক্লিনার হিসেবে কাজ করেন। বুধবার দুপুরে স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে তিনি বড় বোনের মেয়েকে নিয়ে রংপুরে আত্মীয়ের বাসার উদ্দেশে রওনা দেন। পথে তার রাব্বানী নামের এক সহকর্মীর সঙ্গে দেখা হয়। তখন তারা একসঙ্গে যাত্রা শুরু করেন। এরপর রাত ২টার (১৩ জুলাই) দিকে বগুড়ার বারপুরে তাদের বাস নষ্ট হয়। এ সময় রাব্বানী তাদের নিয়ে কাহালু উপজেলার পাইকড় ইউনিয়নে রাজ্জাক নামে এক বন্ধুর বাড়িতে যান। তখন মামলার মূল আসামি মানিক এলাকায় প্রচার করেন রাজ্জাকের বাড়িতে অসামাজিক কার্যকলাপ হচ্ছে।
এসব শুনে রাজ্জাক নামে ওই ব্যক্তি তাদের চলে যেতে বলেন। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তারা তিনজন একটি ভ্যানে করে রংপুরের বাস ধরার উদ্দেশে রওনা দেন। পাইকড় ইউনিয়নের বাগইল গ্রামের বড়পুকুর ব্রিজের কাছে পৌঁছলে মানিক তাদের পথরোধ করেন এবং চার থেকে পাঁচজন বন্ধুকে ফোন দিয়ে আসতে বলেন। এরপর মানিক তার সঙ্গে থাকা কয়েকজনকে নিয়ে ভ্যনচালককে ভয় দেখিয়ে তাদের তিনজনের কাছে থাকা ৭২ হাজার টাকা, এক জোড়া কানের দুল ও একটি বাটন মোবাইল কেড়ে নেন। এরপর আসামিরা ভ্যানচালক ও রাব্বানীকে মারধর করে ওই নারী এবং তার বড় বোনের মেয়েকে অপহরণ করেন। পরে ওই এলাকায় পশ্চিমপাড়ার একটি পুকুর পাড়ে নিয়ে তাদের সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেন।
পুলিশ সুপার আরও জানান, এ ঘটনার পর ওই নারী তার বড় বোনের মেয়েকে নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন। ঢাকায় এসে তারা চিকিৎসা নেন। এরপর সুস্থ হয়ে কাহালুর পাইকড় গ্রামে যান। রাজ্জাককে সঙ্গে নিয়ে কাহালু থানায় অভিযুক্তদের নামে মামলা করেন। মামলার পরপরই পুলিশ কাহালুর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ধর্ষণ ও ডাকাতির বিষয় স্বীকার করেছে বলে জানান পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার, আব্দুর রশিদ, মোতাহার হোসেন এবং কাহালু থানার ওসি মাহমুদ হাসান উপস্থিত ছিলেন।