চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশ : ১৭ জুলাই ২০২৩ ২৩:২০ পিএম
আপডেট : ১৮ জুলাই ২০২৩ ১৩:০২ পিএম
মাহমুদা খানম মিতু। সংগৃহীত ছবি
আদালতে সাক্ষ্য দিতে এসে মিতু হত্যা মামলার আসামি কামরুল ইসলাম শিকদার মুছার সন্ধান চাইলেন তার স্ত্রী পান্না আক্তার। পান্না আক্তার বলেন, ‘মিতু একজন নারী। আমিও একজন নারী। কিচ্ছু নেই। আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ। দুটি বাচ্চা, কীভাবে চলছি আমি জানি। সব মা চায় দিন শেষে নিজের সন্তানদের আদর করতে। আমার সন্তানদের আমি আছি। মিতুর সন্তানদের কেউ নেই। একজন নারী হিসেবে আমি মিতু হত্যার বিচার চাই। পাশাপাশি আমার স্বামীকে আমি আইনের কাছে হাজির দেখতে চাই।’
বিচারকের উদ্দেশে পান্না আক্তার বলেন, ‘আপনি অনুমতি দেন। যে অবস্থায় যেখানে থাকুক, আমার স্বামীকে হাজির করুক। সে যদি অপরাধ করে থাকে, ফাঁসি, সাজা; যা বিচার হয় আমরা হাসিমুখে মেনে নেব। আর যদি মেরে ফেলে, তার লাশটা আমাদের বুঝিয়ে দেওয়া হোক।’
সোমবার (১৭ জুলাই) চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালতে সাক্ষ্য দেন পান্না আক্তার। পান্না যখন সাক্ষ্য দিচ্ছিলেন, তখন কাঠগড়ায় ছিলেন বাবুল আক্তার।
পান্না আক্তার বলেন, ‘২০১৬ সালের ৫ জুন। সকাল ৭টা থেকে সাড়ে ৭টা আমার স্বামী মুছা নাশতা-পরোটা-হালুয়া নিয়ে আসেন। আমরা নাশতার টেবিলে দুই ছেলেকে নিয়ে খাই। তখন বাসার টিভি অন ছিল। আমরা দেখতে পাই টিভিতে এ ঘটনাটা। আমার স্বামীকে আমি জিজ্ঞাসা করি, মিতুকে কে বা কারা হত্যা করেছে? হেডলাইনে আসছিল বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা। আমি তখন জিজ্ঞেস করি, উনি কি বাবুল আক্তারের স্ত্রী? আপনি দেখতে যাবেন না? উনি বলেন, আমি এখন যাব না। স্যার আসলে যাব।’
সাক্ষ্যগ্রহণকালে পান্না আক্তার আরও বলেন, ‘দুই দিন পর আমার বাবা অসুস্থ হওয়ায় আমি রাঙ্গুনিয়া বাপের বাড়িতে যাই। সেখানে থাকার দুয়েক দিন পর আমার স্বামী মুছা আমার বাবার বাড়িতে যান। তার সাত-আট দিন পর আমার স্বামী মুছার মোবাইলে একটা টিঅ্যান্ডটি থেকে কল আসে। কলটা আমি রিসিভ করি। আমাকে ওপাশ থেকে বলা হয়, মুছা কোথায়? বলা হয়, মুছাকে সাবধানে থাকতে বলবা।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০১৬ সালের জুনের ১৯ বা ২০ তারিখ আমার স্বামী মুছাকে ওর ফোনে কথা বলতে শুনি। মুছা ফোনে বলে, ‘স্যার আমি তো এটা করতে চাইনি। আমার ফ্যামিলির কোনো সমস্যা হলে আমি পুলিশের কাছে মুখ খুলতে বাধ্য হব।’ আমি জিজ্ঞেস করি এটা কে? আমাকে বলে, বাবুল আক্তার স্যার। আমি জিজ্ঞেস করি, আপনি কি মিতু হত্যার সঙ্গে জড়িত আছেন? উনি আমাকে উত্তর দেন, ‘পান্না, আমি এটা করতে চাইনি, আমাকে বাধ্য করা হয়েছে।’
দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে তার সাক্ষ্য শেষ হয়। পরে আদালত মধ্যাহ্ন বিরতিতে যান। বিরতির পর আসামি বাবুল আক্তারের আইনজীবী পান্না আক্তারকে জেরা করেন।