‘স্বামীটারে একটা বার কাছ থেকে দেখতে পেলাম না’

‘একটা বার আমার কাছে আসলো নারে। একটা বারও আমি আমার স্বামীটারে কাছ থেকে দেখি নাই। আপনার পায়ে ধরি, আমার স্বামীকে একবার দেখান। শুধু দূর থেকে কথা কইছে।’ এভাবেই আহাজারি করছিলেন সৌদি আরবের আল-হুফুফ শহরে কারখানায় আগুনে পুড়ে নিহত মো. রুবেল হোসাইনের স্ত্রী মোছা. মরিয়ম।

নিহত রুবেল হোসাইনের বাড়ি রাজশাহীতে। তিনি বাগমারা উপজেলার ঝিকরা ইউনিয়নে বারইপাড়া গ্রামের জফির উদ্দিনের ছেলে।

নয় মাস ছয় দিন আগে ভিডিও কলের মাধ্যমে রুবেলের সঙ্গে মরিয়মের বিয়ে হয়। তারা একে অপরকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন। বিয়ের নয় মাস পেরিয়ে গেলেও সৌদি আরবে থাকায় রুবেলের সঙ্গে মরিয়মের দেখা হয়নি। স্বামীর মৃত্যুর খবরে কোনোভাবেই মরিয়মের কান্না থামাতে পারছেন না তার স্বজনরা। নিহত স্বামীর কথা বলে ডুকরে ডুকরে কেঁদে উঠছেন মরিয়ম। 

কান্নাজড়িত কন্ঠে মরিয়ম বলেন, ‘আগুন লাগার আগের দিন রাত ১২টার সময় ওর (স্বামী) সঙ্গে কথা বলেছি। আমাকে এখন কে দেখবে, আমার খবর কে রাখবে। আমি কার কাছে আমার সুখ, দুঃখ, কষ্ট, অভিমান তুলে ধরব।’

রুবেলের স্মৃতিচারণ করে মরিয়ম বলেন, ‘আমাকে খুব ভালোবাসত। কাজের ফাঁকে যখনই সময় পেতো আমাকে কল দিত। ভিডিও কল দিয়ে আমাকে দেখতে চাই তো। আমি রাগারাগি করতাম, বারবার ওকে দেশে আসতে বলতাম। ও আমাকে খালি সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখাত। বলত একটু ধৈর্য ধর। দূরে থেকে শুধুই সান্ত্বনা দিত।’