কুষ্টিয়া প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৪ জুলাই ২০২৩ ১২:১৯ পিএম
স্ত্রীর এনআইডি (জাতীয় পরিচয়পত্র) সংশোধনের জন্য এক যুবককে আড়াই লাখ টাকা দিয়েছিলেন কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার শোমসপুর ইউনিয়নের শোমসপুর মোল্লাপাড়া এলাকার বাসিন্দা এবং হুসনুল উলুম আলিম মাদ্রাসার নৈশপ্রহরী জিয়াউল হক জিয়া (৪৭)। আট মাস হয়ে গেলেও তা সংশোধন করা হয়নি।
গত ৬ জুলাই কুমারখালীতে ঘুষের সেই টাকা আনতে যান জিয়া। এরপর থেকে তার কোনো সন্ধান পাচ্ছে না পরিবার। তাদের দাবি, ঘুষের টাকা ফেরত চাওয়ায় জিয়াকে গুম করা হয়েছে।
নিখোঁজ ব্যক্তির ছেলে জিহাদ হোসেনের অভিযোগ, এ ঘটনায় থানায় জিডি করা হলেও পুলিশ তার বাবাকে উদ্ধারে তৎপরতা দেখাচ্ছে না।
জিহাদ হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, তার মায়ের এনআইডি কার্ডে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য ভুল আছে। স্থানীয় লিজা কম্পিউটারের স্বত্বাধিকারী খোকসা উপজেলার চরপাড়া এলাকার মো. ফরিদের ছেলে রানা হোসেন (২৬) তার বন্ধু কুমারখালী পৌরসভার শেরকান্দি এলাকার মো. আনোয়ার হোসেনের ছেলে বাঁধন হোসেনকে (২৭) দিয়ে ঠিকঠাক করার প্রতিশ্রুতি দেন। এজন্য রানা শোমসপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বদর উদ্দির খানের হাত দিয়ে আড়াই লাখ টাকা নেন। কিন্তু আট মাসেও কার্ডের ভুল ঠিক না হওয়ায় ৬ জুলাই তার বাবা বাঁধনের বাড়িতে টাকা ফেরত আনতে গিয়েছিলেন। এরপর আর তিনি ফেরেননি। এ ব্যাপারে থানায় জিডি করলেও পুলিশ তার সন্ধানে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
জিহাদের দাবি, রানা ও বাঁধন এনআইডি জালিয়াতির কাজ করে মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তারাই তার বাবাকে গুম বা হত্যা করেছে। জালিয়াতি চক্রে ইউপি চেয়ারম্যান বদর উদ্দিনও জড়িত বলে অভিযোগ জিহাদের।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে শেরকান্দি গ্রামে বাঁধনের খোঁজে তার বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, বাঁধন কয়েকদিন হলো বাড়িতে নেই। তার ফোনটিও বন্ধ। এ সময় তার মা জহুরা খাতুন জানান, বাঁধন তার অসুস্থ চাচিকে নিয়ে কয়েকদিন আগে ঢাকা গেছে। ফোনের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তিনি জানান, সেদিন ওই লোক (জিয়া) তাদের বাড়িতে এসে বকাবকি করে কিছুক্ষণ পরে চলে গিয়েছিলেন। তার ছেলে কাউকে গুম করেনি।
এ বিষয়ে রানা বলেন, আমি এলাকার বাইরে আছি। এসব নিয়ে কথা বলতে চাই না, বলে ফোনটি কেটে দেন। পরে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ধরেননি।
শোমসপুর ইউপি চেয়ারম্যান বদর উদ্দিন খান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমি শুধু টাকা লেনদেনের সাক্ষী ছিলাম। কিন্তু কীসের টাকা তা জানতাম না।’ এনআইডি জালিয়াতি চক্রের সঙ্গে তিনি জড়িত নন বলে দাবি করেছেন।
অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা কুমারখালী থানার উপপরিদর্শক মো. নুরন নবী প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কিন্তু নিখোঁজ ব্যক্তি মোবাইল ব্যবহার করেন না। সেজন্য তাকে খুঁজে পেতে বিলম্ব হচ্ছে। ফোন থাকলে দ্রুত পাওয়া যেত। আর অভিযুক্ত বাঁধন পলাতক। তার ব্যবহৃত ফোনটিও বন্ধ।