× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বিদেশ যাচ্ছে নরসিংদীর লটকন

রায়পুরা (নরসিংদী) প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৩ জুলাই ২০২৩ ১৩:৩২ পিএম

গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে লটকন। ছবি : সংগৃহীত

গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে লটকন। ছবি : সংগৃহীত

নরসিংদী জেলায় দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে লটকন চাষ। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে সুস্বাদু এই ফল। ফলে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন জেলার লটকনচাষিরা, বাড়ছে বাড়ানের পরিধিও।

চাষিরা বলছেন, অল্প খরচে লটকনের চাষ করে অধিক লাভবান হওয়া যায়। তাই প্রতিনিয়ত আগ্রহ বাড়ছে লটকন চাষে। 

স্থানীয় চাষিরা জানান, নরসিংদীতে উঁচু আর লাল মাটির টিলা লটকন চাষের জন‍্য বেশ উপযোগী। লটকন চাষে রোগবালাইয়ের তেমন একটা ঝামেলা নেই এবং খরচ কম। লটকনের চারা রোপণের চার-পাঁচ বছরের মধ‍্যেই ফলন আসে। ফল দেয় টানা ২০ থেকে ৩০ বছর। তা ছাড়া লটকন বিক্রি নিয়েও কোনো চিন্তা নেই। কারণ পাইকাররা বাগান থেকেই লটকন কিনে নিয়ে যান।

নরসিংদী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার শিবপুর, বেলাব, রায়পুরা ও মনোহরদী উপজেলায় লটকন চাষ হয়। এর মধ‍্যে শিবপুর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি লটকন চাষ হয়। এ বছর জেলায় ১ হাজার ৬৯৫ হেক্টর জমিতে লটকন চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ১৫-১৬ টন লটকন উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ বছর ২৬-২৭ হাজার মেট্রিক টন লটকন উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। পাইকারি দরে প্রতি কেজি লটকন ৭০ টাকায় বিক্রি ধরে উৎপাদিত লটকনের মূল্য পাওয়া যাবে প্রায় ১৮৭ কোটি টাকা।

এ ছাড়া জেলাজুড়ে বাড়ির আঙিনা ও পতিত জমিতেও রয়েছে লটকন গাছ, যা কৃষি বিভাগের হিসাবের বাইরে।

প্রতিদিন ভোরে লটকনের পাইকারি বাজার বসে রায়পুরার মরজাল ও শিবপুরে। বাজারে লটকন নিয়ে আসা বেলাব উপজেলার চাষি মানিক মোল্লা জানান, দুই একর জমিতে এই ফলের বাগান করেছেন। এ বছর একটি বাগান ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং অপর একটি বাগান ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। 

শিবপুর উপজেলার গিলাবের গ্রামের লটকনচাষি জোবায়ের আল মামুন জানান, চার বিঘা জমিতে লটকন চাষে তার খরচ হয়েছে ১৫-২০ হাজার টাকা। তিনি লটকনের বাগানটি বিক্রি করতে পারবেন দুই-তিন লাখ টাকায়। এ এলাকার লটকন খুবই সুস্বাদু। এ অঞ্চলের অনেকেই লটকন চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন। বর্তমানে এ অঞ্চলের প্রধান অর্থকরী ফসল লটকন।

আরেক লটকনচাষি মাওলানা লুৎফর রহমান বলেন, আমরা দুই ভাই মিলে এখানে ৩২০ শতাংশ জমিতে লটকন চাষ করেছি। এই বাগান থেকে আমরা প্রতি বছরই ৮-১০ লাখ টাকার লটকন বিক্রি করতে পারি।

লটকনচাষি আমিনুল ইসলাম বলেন, আমাদের এলাকার লটকন খুব সুস্বাদু ও মিষ্টি হওয়ায় এর চাহিদা অনেক। আমাদের এলাকায় অনেকেই লটকন চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। সরকার লটকনচাষিদের প্রতি গুরুত্ব দিলে এ এলাকায় লটকন উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে।

লটকনের পাইকারি ব‍্যবসায়ী জয়নাল মিয়া বলেন, এ এলাকার লটকন খুবই ভালো এবং বর্তমানে এর চাহিদা অনেক। আমি লটকনের ব‍্যবসা করে খুব লাভবান হয়েছি। আমরা এ এলাকার লটকন কাতার, দুবাইসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করি। এ অঞ্চলের লটকন ইউরোপেও রপ্তানি হয়।

নরসিংদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ড. মুহাম্মদ মাহবুব রশীদ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, এ বছর নরসিংদীতে প্রায় ১ হাজার ৬৯৫ হেক্টর জমিতে লটকন চাষ হয়েছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ লটকনচাষিদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। তা ছাড়া আধুনিক পদ্ধতিতে লটকনের ফলন বাড়াতে উন্নত জাতের চারা উৎপাদনের চেষ্টা চলছে। 

সংশ্লিষ্টরা জানান, নরসিংদীতে যদি একটি ফল প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়, তাহলে লটকনসহ অন‍্যান‍্য ফলের আরও বেশি বাজারমূল্য পাওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে। বাজার ব‍্যবস্থাপনা ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ অঞ্চলের লটকন রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা