× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

মাদক কারবারি, সন্ত্রাসীদের রুখতে চনপাড়া বস্তিতে জিহাদ ঘোষণা পুলিশের

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৮ জুলাই ২০২৩ ১৮:১০ পিএম

আপডেট : ০৮ জুলাই ২০২৩ ২০:০৫ পিএম

নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল। ছবি : সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল। ছবি : সংগৃহীত

সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য আর মাদকের বিশাল আস্তানা চনপাড়া বস্তিতে অপরাধ রুখতে জিহাদ ঘোষণা করেছে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ। গত এক সপ্তাহের টানা অভিযানে তারা অন্তত ৩০০ মাদকের আস্তানা গুঁড়িয়ে দিয়েছে। গ্রেপ্তার করেছে অর্ধশতাধিক সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারিকে। আইনের আওতায় এসেছে পাঁচ শতাধিক অপরাধী। গা ঢাকা দিয়েছেন বাকিরা। পুলিশের এসব পদক্ষেপে অপরাধের স্বর্গরাজ্য চনপাড়া বস্তি ক্রমশ স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। 

পুলিশ ও স্থানীয়রা বলছে, চনপাড়া বস্তি সন্ত্রাসী আর মাদক কারবারিদের নিরাপদ আস্তানা হিসেবে পরিচিত। ছোট ছোট ৪০ হাজার খুপড়ি ঘরের মাঝে অন্তত ৮০০ মাদকের আস্তানা রয়েছে। এ ছাড়া অস্ত্র ব্যবসা, চুরি, ডাকাতি, পতিতাবৃত্তি থেকে শুরু করে এমন কোনো অপরাধ নেই যা এই বস্তিতে হয় না। রাজধানীসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে এই বস্তির ৩০০ খয়ের পার্টি, মলম পার্টি আর ছিনতাইকারী দাবড়ে বেড়ায়। রয়েছে কিশোর গ্যাংয়ের বিশাল নেটওয়ার্ক। রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্যও এসব অপরাধীদের ব্যবহার করা হয়ে থাকে। অপরাধের এই সাম্রাজ্যে আধিপত্য বিস্তারে গড়ে উঠেছে এক ডজন বাহিনী। সর্বশেষ বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন নুর পরশ হত্যাকাণ্ডে আলোচনায় আসে এই বস্তির নাম। 

বস্তির ডন বজলু মেম্বার সে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আটক হবার পর চলতি বছরের ১ এপ্রিল কারা হেফাজতে মারা যান। এরপর বজলুর আসনে বসতে বস্তির জয়নাল গ্রুপ, সমসের গ্রুপ, সাহাবুদ্দিন গ্রুপ, শাওনা গ্রুপ, রায়হান গ্রুপ, রবিন গ্রুপ, ইয়াসমীন গ্রুপ, দাঁতভাঙ্গা রাব্বি গ্রুপসহ বেশ কয়েকটি গ্রুপ শুরু করে সাম্রাজ্য টিকিয়ে রাখার রক্তক্ষয়ী লড়াই। এসব লড়াইয়ে বহু আহত এবং একাধিক নিহতের ঘটনা ঘটে। 

সর্বশেষ গত ১২ জুন সমসের গ্রুপের প্রধান সমসের ইউপি সদস্য নির্বাচিত হলে আবারও শুরু হয় সংঘাত। টানা সংঘর্ষে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে। এরপর বস্তিতে জোরালো অবস্থান নেয় পুলিশ। এক মাসের জন্য শুরু হয় বিশেষ অভিযান। গত ৭ দিনে বিশেষ অভিযানে অন্তত ৩০০ মাদকের আস্তানা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গ্রেপ্তার হয়েছে অর্ধশতাধিক সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারি। গা ঢাকা দিয়েছে গ্যাংস্টাররা। বিভিন্ন ঘটনায় ১৬ মামলায় আসামি করা হয়েছে অন্তত ৫০০ সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারিকে। 

এসব পদক্ষেপের ফলে অপরাধের স্বর্গরাজ্য চনপাড়া বস্তি এখন অনেকটাই শান্ত। এর সুফল পেতে শুরু করেছে স্থানীয় বাসিন্দারা। ফলে তাদের প্রশংসায় ভাসছে জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল ও রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এএফএম সায়েদ। তাদেরকে চনপাড়ার হিরো হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে।



চনপাড়ার ফার্নিচার ব্যবসায়ী মাহফুজুর রহমান জানান, ‘আগে গ্যাঞ্জাম শুরু হলেই চলত লুটপাট। মুহূর্তেই দোকানের মালামাল লুটে নিতো সন্ত্রাসীরা। বাড়িঘরেও আতঙ্কে দিন কাটত। পুলিশ যেভাবে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছে এতে আমরা আতঙ্কমুক্ত হতে শুরু করেছি।’ চনপাড়ার বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে লোকজনের সঙ্গে কথা বলে একই রকমের মতামত পাওয়া গেছে। 

রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এএফএম সায়েদ জানান, পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় এবং গ-সার্কেলের মো. আবির হোসেনের নেতৃত্বে আমরা এক মাসের জন্য চনপাড়ায় মাদক কারবারি আর সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছি। যেখানেই মাদক কেনাবেচা আর সন্ত্রাসীদের আনাগোনার সংবাদ পাচ্ছি সেখানেই আমরা অভিযান পরিচালনা করছি। এতে তারা আতঙ্কিত হয়ে এলাকা ছেড়ে দিয়েছে। আমরা মাদকের আস্তানাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো ভেঙে দিচ্ছি। গলিতে গলিতে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। যতক্ষণ পর্যন্ত শেষ মাদক ব্যবসায়ী আর সন্ত্রাসী আইনের আওতায় না আসবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা