নেত্রকোণা ও মোহনগঞ্জ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ জুলাই ২০২৩ ১৯:২৬ পিএম
আপডেট : ০৫ জুলাই ২০২৩ ১৯:৪২ পিএম
২ নং বড়তলী বানিয়াহারী ইউনিয়ন পরিষদ। ফাইল ছবি
জহুরা বেগম। ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫ মাস আগে। তবে এখনও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তার নামে প্রতি মাসে উত্তোলন করা হচ্ছে ভালনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্টের (ভিজিডি) চাল। এমন ঘটনা ঘটেছে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার বড়তলী-বাহিয়াহারী ইউনিয়নে। জহুরা বেগম ওই ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কলুংকা গ্রামের মৃত ইদ্রিছ মিয়ার স্ত্রী। ঘটনাটি জেনে অবাক হন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও।
এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাব্বির আহমেদ আকুঞ্জি।
জহুরা বেগমের ছেলে জহিরুল মিয়া মুঠোফোনে বলেন, ‘আমার মায়ের নামে একটি ভিজিডি কার্ড ছিল। তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে গত ফেব্রুয়ারি মাসে মারা যান। আমরা দুই বোন ও এক ভাই। মায়ের মৃত্যুর পর আমরা সবাই ঢাকায় চলে আসি। এখনও কে বা কারা তার নামে প্রতি মাসে চাল তুলছে- সেটা জানি না।’
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বড়তলী-বাহিয়াহারী ইউনিয়নে ভিজিডি কার্ডধারী রয়েছেন ২৫৫ জন। এ কার্ডে মাধ্যমে অতি দরিদ্রদের প্রতি মাসে বিনামূল্যে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। জহুরা বেগমের কার্ডটি চলতি বছরের জানুয়ারিতে বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেই থেকে প্রতিমাসে তিনি চাল তুলছেন। দপ্তরে থাকা মাস্টার রোলে দেখা গেছে- গত জুন মাসেও জহুরা বেগমের নামের পাশে টিপসই দিয়ে কে বা কারা চাল তুলেছে।
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহাগ তালুকদার বলেন, ‘জানুয়ারিতে জহুরার বেগমের নামে ভিজিডির কার্ড করা হয়। পরের মাসেই তিনি মারা যান। বিষয়টি ওই সময় স্থানীয় মেম্বার আমাকে জানায়নি। এখন তার নামে কে চাল তুলে নিচ্ছে- সেটা মেম্বার বলতে পারবেন।’ এ বিষয়ে মুঠোফোনে বার বার চেষ্টা করেও স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল হালিম মহসিনের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রুমানা রহমান বলেন, ‘ভিজিডির কার্ড মূলত হত দরিদ্রদের দেওয়ার নিয়ম। কোনো কার্ডধারীর মৃত্যু হলে সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধি বিষয়টি আমাকে প্রমাণসহ অবহিত করবেন। পরে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে কার্ডটি অন্য একজনের নামে প্রতিস্থাপন করা হবে। জহুরা বেগম মারা যাওয়ার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান ও মেম্বার কেউই আমাদের জানায়নি। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ইউএনও ছাব্বির আহমেদ আকুঞ্জি বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির চাল অন্য কেউ তুলে নেওয়া অন্যায়। কেনো এমন হলো, এর জন্য কারা দায়ী-এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’