সুনামগঞ্জে ওএমএস নিবন্ধন
সুনামগঞ্জ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১২ জুন ২০২৩ ২২:৫৮ পিএম
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের উকিলপাড়া ওএমএস পয়েন্টে নাম নিবন্ধন করতে আসা মানুষের ভিড়। ছবি : প্রবা
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ওএমএস ডিলার পয়েন্টের পাঁচটি কেন্দ্রে নাম নিবন্ধনের কাজ চলছে। সোমবার (১২ জুন) ও প্রতিটি কেন্দ্রে ২৫০ জনের নির্দিষ্ট সংখ্যার চেয়ে বেশি মানুষ নাম নিবন্ধনের জন্য এসেছেন। বহু অপেক্ষার পর খালি হাতে ফিরে গেছেন অনেকে। বাকিরা নিবন্ধনের পর প্রত্যেকে চার কেজি করে আটা কিনতে পারবেন।
গত বুধবার শুরু হওয়া নিবন্ধন কার্যক্রম চলবে মঙ্গলবার পর্যন্ত। এর আগে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ওএমএস কার্যক্রমে ব্যবস্থাপনার ঘাটতি নজরে পড়ায় কার্ডের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সুনামগঞ্জ পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কৃষক মো. মনফর আলী গতকাল সকাল থেকে উকিলপাড়ায় ওএমএস ডিলার পয়েন্টে লাইনে দাঁড়িয়ে নাম নিবন্ধনের জন্য অপেক্ষা করছেন। তিনি গত চার দিন ধরে ফজরের নামাজ আদায় করে লাইনে এসে দাঁড়ান। তিনি জানান, বাজারে আটার দাম বেশি। ওএমএস তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে পারিনি। আমার চার ছেলে-মেয়ে। নাম নিবন্ধন করতে পারলে খুব ভালো হবে।
সরেজমিন দেখা গেছে, শুধু হতদরিদ্ররা নয়, নিম্ন মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত এবং অনেক ক্ষেত্রে কিছুটা সচ্ছল পরিবারের মানুষজনও সংকোচ ভুলে লাইনে দাঁড়াচ্ছেন। ওএমএস পয়েন্টে চার কেজি আটা ১০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। বাজারে এক কেজি আটার দাম ৬৫ টাকা।
শহরের মাইজবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা সরফুল নেছা। দুই ছেলে, দুই মেয়ে ও স্বামী-স্ত্রীসহ ছয়জনের পরিবার। স্বামী কৃষিজীবী। বড় ছেলে আব্দুল্লাহ সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে এইচএসসি পরীক্ষার্থী। বড় মেয়ে উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে। ছোট দুই ছেলে-মেয়ে প্রাইমারিতে পড়ে। তিনি জানান, তিন দিন ধরে লাইনে দাঁড়িয়েও নাম লেখাতে পারেননি। বাজার খরচ বেশি। খাতা কলম, বই, স্কুলের বেতন এবং জিনিসপত্র কিনে চলতে পারেন না। ওএমএস-এর চাল-আটা পেলে খুব উপকার হবে বলে জানান তিনি।
উকিলপাড়া এলাকার ডিলার বিধান চন্দ্র দাশ জানান, প্রতিদিন প্রতিটি কেন্দ্রে ২৫০ জনকে ওএমএসের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। দরিদ্র পরিবারের পাশাপাশি ওএমএস তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে মধ্যবিত্ত এবং অনেক উচ্চবিত্তরাও এসেছেন।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো. মইনুল ইসলাম ভুঁইয়া জানান, সারা দেশের ন্যায় সুনামগঞ্জে ৫টি কেন্দ্রের প্রতিটি কেন্দ্র থেকে ২৫০ জনকে ওএমএসের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, কেন্দ্র বৃদ্ধি করা হলে আগ্রহী প্রত্যেককে যুক্ত করা হবে।