× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

শরীয়তপুরের সেই পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে এসপিকে আদালতের নির্দেশ

শরীয়তপুর প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১১ জুন ২০২৩ ১৮:৪৬ পিএম

আপডেট : ১১ জুন ২০২৩ ১৯:০৬ পিএম

নড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির ও পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ওসি শেখ মোস্তাফিজুর রহমান। প্রবা ফটো

নড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির ও পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ওসি শেখ মোস্তাফিজুর রহমান। প্রবা ফটো

শরীয়তপুরের নড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির ও সদ্য বদলি হওয়া পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে জেলা পুলিশ সুপারকে (এসপি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

জাজিরার পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার একটি মারামারি ও ছিনতাই মামলার চার আসামিকে মারধর করে আহত করার ঘটনায় শরীয়তপুরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আল ইমরান ৭ জুন ওই আদেশে স্বাক্ষর করেন।

রবিবার (১১ জুন) আদালত পরিদর্শকের কার্যালয় থেকে ওই আদেশের কপি পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পাঠানো হয়। আগামী ৯ জুলাইয়ের মধ্যে ‘নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইন ২০১৩-এর ৫ ধারার’ বিধানমতে ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

শরীয়তপুরের আদালত পরিদর্শক মেজবাহ উদ্দিন আহম্মেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘একটি মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করে নির্যাতন করার অভিযোগে দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিষয়ে আমলি আদালত থেকে একটি আদেশ দেওয়া হয়েছে। ওই আদেশের নথি গত বৃহস্পতিবার শেষ বেলায় আমাদের কাছে পৌঁছায়। শুক্র-শনিবার বন্ধ থাকায় তা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পাঠাতে পারিনি। রবিবার সকালে পাঠিয়েছি। ওই আদেশে বলা হয়েছে দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নিয়ে আদালতে প্রতিবেদন দিতে।’

এ বিষয়ে শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার সাইফুল হকের মতামত জানতে তাকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি তা ধরেননি।

নির্যাতনের শিকার আসামিরা হলেন- শরীয়তপুরের জাজিরার নাওডোবা এলাকার সাদ্দাম চোকদার, বকুল চোকদার, আনোয়ার হোসেন ও সাইদুল শেখ।

এদিকে ওই ঘটনায় সাদ্দাম ও বকুলের আত্মীয় নাওডোবা এলাকার ব্যবসায়ী আবু জাফর ওরফে ঠান্ডু চোকদারকে থানায় আটকে পিটিয়ে ৭২ লাখ টাকার চেক লিখে নেওয়ার অভিযোগে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

থানা সূত্র ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জাজিরার আহাদী বয়াতিকান্দি গ্রামের শাহীন আলম শেখ ও তার সহযোগী ছোট কৃষ্ণনগর গ্রামের সেকান্দার মাদবরের কাছ থেকে ২১ মে ১৭ হাজার ডলার, টাকা ও মুঠোফোন ছিনতাই হয়। তাতে ২১ লাখ ১৫ হাজার ২৫০ টাকা খোয়া গেছেএমন অভিযোগ এনে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানায় মামলা করেন শাহীন আলম। এতে বকুল চোকদার, সাদ্দাম চোকদার, সাইদুল শেখ ও আনোয়ার হোসেনসহ ৯ জনকে আসামি করা হয়।

ভুক্তভোগী ওই চার আসামির ভাষ্য অনুযায়ী, ২৯ মে তারা উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের জামিন পান। এরপর রাতে তারা ঢাকার কেরানীগঞ্জের একটি বাসায় অবস্থান করছিলেন। সেখানে তাদের ওপর চড়াও হন জাজিরা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রুবেল ব্যাপারী ও ছিনতাই মামলার বাদীর আত্মীয় শহীদুল ইসলাম। পরে রুবেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির ও ওসি শেখ মোস্তাফিজুর রহমানকে মুঠোফোনে কেরানীগঞ্জের ওই বাসায় ডেকে নেন। সেখানেই একটি কক্ষে আটকে তাদের নির্যাতন করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ নেতা রুবেল ব্যাপারী মুঠোফোনে প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, যার ডলার ও টাকা ছিনতাই হয়েছে, তিনি তার ভাগ্নে হন। তাকে সহযোগিতা করার জন্য সামাজিকভাবে তিনি মামলার আসামিদের ওপর চাপ প্রয়োগ করেছিলেন। ঢাকায় তাদের অনুসরণ করে পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছেন। তখন ধস্তাধস্তিতে তারা ব্যথা পেতে পারেন।

২৯ মে রাতে ওই চার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হলেও ১ জুন তাদের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করেন পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুরুজ উদ্দিন আহম্মেদ। তিনি আসামিদের আদালতে উপস্থাপন করার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, আসামিদের গ্রেপ্তারের সময় ধস্তাধস্তিতে তারা জখম হয়েছে। তাদের জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

৪ জুন ওই চার আসামির জামিন ও রিমান্ড শুনানির দিন ছিল। ওই দিন আসামিপক্ষের আইনজীবী চারজনকে গ্রেপ্তারের পর শারীরিক নির্যাতনের বিষয় আদালতের নজরে আনেন। আদালত তাদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে মেডিকেল প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে নির্দেশ দেন।

সদর হাসপাতাল থেকে ৬ জুন আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। মেডিকেল প্রতিবেদনের বিষয়ে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সুমন কুমার পোদ্দার বলেন, ‘৪ জুন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আল-ইমরান চার আসামিকে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছেন, তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।’

ভুক্তভোগী সাদ্দাম চোকদার বলেন, ‘আমাদের চোখ বেঁধে আটকে রেখে দুদিন ধরে পিটিয়েছে। হাতুড়ি দিয়ে হাড় ও হাত-পায়ের গিরায় পেটানো হয়েছে। প্লাস দিয়ে হাত ও পায়ের নখ তুলে দেওয়া হয়েছে। আমার বাম চোখে লাথি মেরেছে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির।’

নড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনিরের কাছে আসামিদের নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করেন। এর বেশি কিছু বলতে তিনি রাজি হননি।

তবে ওসি শেখ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ’একটি সন্ত্রাসবিরোধী ও ছিনতাই মামলার চার আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তাদের কোনো নির্যাতন করা হয়নি। ওই অভিযোগ সঠিক নয়। অপরাধীরা হয়তো মামলা থেকে বাঁচার জন্য পুলিশের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করছেন।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা