নরসিংদী প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ জুন ২০২৩ ১৮:০৯ পিএম
আপডেট : ১১ জুন ২০২৩ ২১:৫৮ পিএম
নরসিংদীর মনোহরদীতে নিজ বাড়ির খাটের নিচ থেকে নারীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (১০ জুন) মধ্যরাতে উপজেলার বাইপাশ সড়কের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাপ অর্জুনচর গ্রামের বাড়ি থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই নারীর পুরো পরিবার আটরশি পীরের মুরিদ। নাজমার ওছিয়ত অনুযায়ী, তিনি মারা যাওয়ার তিন থেকে চার দিন পর আবার জীবিত হবেন, তাই তার মরদেহ কবর না দিয়ে জিকির করতেন পরিবারের সদস্যরা।
মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ উদ্দীন রবিবার দুপুরে জানান, শামীমা সুলতানা নাজমা অর্জুনচর গ্রামের মোক্তার উদ্দিন তালুকদারের স্ত্রী।
নিহতের স্বামী ও চার মেয়ের বরাতে ওসি জানান, শামীমা সুলতানা নাজমা তার স্বামী, চার মেয়ে ও দুই নাতি-নাতনি নিয়ে বাস করতেন। তিনিসহ পরিবারের সবাই আটরশি পীরের মুরিদ ছিলেন। তিনি তার পরিবারের নিকট অছিয়ত করেছিলেন যেন তিনি মারা গেলে তার লাশ কবর না দেওয়া হয়। করণ তিনি ৩-৪ দিন পর পুনরায় জীবিত হবেন।
পরিবারের সবাই প্রতিদিন রাত ৩টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত জিকির করতেন। প্রতিদিনের মতো ৫ জুন (সোমবার) জিকির করা অবস্থায় মারা যান নাজমা। তার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী মারা যাওয়ার পর পরিবারের সদস্যরা তার মরদেহ খাটের নিচে রেখে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছিলেন। প্রতিবেশী কিংবা আত্মীয়-স্বজনরা কেউ ঘটনাটি জানতে পারেননি। মরদেহ গলে দুর্গন্ধ ছড়ালে প্রতিবেশীরা পুলিশে খবর দেয় বলে জানান ওসি।
ওসি ফরিদ উদ্দীন বলেন, ’শনিবার মধ্যরাতে গিয়ে তাদের ঘরের দরজায় অনেক ডাকাডাকি করলেও কেউ সাড়া দেয়নি। পরে দরজা ভেঙে ঘরে গিয়ে দেখা যায় খাটের নিচে নাজমার অর্ধগলিত মরদেহ।’
পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মোক্তার উদ্দিন তালুকদার ও তার চার মেয়েকে থানায় নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মনোহরদী পৌরসভার মেয়র আমিনুর রশিদ বলেন, ‘পুলিশ মরদেটি উদ্ধারের পর ঘটনার বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। তবে তারা কোনো এক পীরের ভক্ত ছিল বলে শুনেছি। মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে কীভাবে মারা গেছে তার বিস্তারিত জানা যাবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।’
ওসি ফরিদ উদ্দীন বলেন, তারা ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে। পরিবারের অন্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তদন্ত করে বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা করা যাবে।