× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বন কেটে পার্কের রাস্তা নির্মাণ!

আবু রায়হান তানিন, চট্টগ্রাম

প্রকাশ : ১০ জুন ২০২৩ ১১:৩৮ এএম

অনুমতি ছাড়াই তিন একর বন থেকে পাঁচ হাজারের বেশি গাছ কাটার অভিযোগ বন বিভাগের। প্রবা ফটো

অনুমতি ছাড়াই তিন একর বন থেকে পাঁচ হাজারের বেশি গাছ কাটার অভিযোগ বন বিভাগের। প্রবা ফটো

বনের গাছ কেটে পার্কের জন্য রাস্তা নির্মাণ! তেমনই অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে। চট্টগ্রাম মহানগরী লাগোয়া সীতাকুণ্ডের কাট্টলী উপকূলে ডিসি পার্ক নামে একটি পার্ক নির্মাণ করছে জেলা প্রশাসন।

সেই পার্কের জন্য ৫০ ফুট চওড়া একটি রাস্তাও হবে। আর এই রাস্তা নির্মাণের জন্যই কাটতে হয়েছে উপকূলীয় বনের গাছ। অবশ্য বন বিভাগের বাধায় রাস্তা নির্মাণ এখন বন্ধ রয়েছে। তবে এরই মধ্যে কাটা হয়েছে তিন একর ম্যানগ্রোভ বন। এতে কাটা পড়েছে ১২টি বড় কেওড়া এবং ৫-৬ ফুটের আরও ৫-৬ হাজার গেওয়া, বাইন, ছৈলা গাছ। ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রাম মহানগরের সঙ্গে লাগোয়া সীতাকুণ্ডের কাট্টলী উপকূলে। এ নিয়ে অনেকটা মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও উপকূলীয় বন বিভাগ।

উপকূলীয় বন বিভাগের দাবি ১৯৯১-৯২ সালে সীতাকুণ্ডের কাট্টলী এলাকায় ৭৫ একর ভূমিতে ম্যানগ্রোভ বন সৃজন করে তারা। বন কাটার বিষয়ে তাদের কিছু জানানো হয়নি বলে অভিযোগ উপকূলীয় বন বিভাগের। অন্যদিকে জেলা প্রশাসন বলছে খাস খতিয়ানভুক্ত এই ভূমি তাদের। এতদিন সেখানে অবৈধ দখলদার আর মাদকের আড্ডা ছিল। পাশাপাশি সেখান থেকে মাটি ও গাছ কেটে বিক্রি করত একটি চক্র। এতে বন বিভাগের যোগসাজশ ছিল। জেলা প্রশাসনের দাবি, অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে ভূমি উদ্ধার করে সেখানে পাখির অভয়ারণ্য তৈরি করতে কাজ করছে তারা। নতুন করে সেখান থেকে কেউ যাতে গাছ কেটে বিক্রি করতে না পারে, সেজন্য সেখানে রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে কিছু গাছ মাটিচাপা পড়েছে।

সীতাকুণ্ড উপজেলার ছলিমপুর মৌজার উত্তর কাট্টলীর কালু শাহপাড়াসংলগ্ন সাগরপাড়ের চরে এই ম্যানগ্রোভ বন। স্থানীয়রা জানান, এরই মধ্যে জেলা প্রশাসন চরের এক পাশ টিনের বেড়া দিয়ে ঘেরাও করে গাছ কাটার পাশাপাশি তিনটি এক্সকাভেটর দিয়ে মাটি কাটছে। পাশের সড়কে ‘ডিসি পার্কের উন্নয়ন কাজ চলছে’ সাইনবোর্ড বসিয়ে মানুষের আসা-যাওয়াও বন্ধ রাখা হয়েছে।

চট্টগ্রাম উপকূলীয় বন বিভাগের বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আবদুর রহমান বলেন, সাগরপাড়ের চরে বন বিভাগ ম্যানগ্রোভ বন করেছিল। উপকূলীয় এলাকায় বনের মালিকানা বন বিভাগের। কিন্তু আমাদের না জানিয়ে জেলা প্রশাসন উপকূলীয় বন কেটে ফেলছে। গত ৫ জুন সরেজমিনে পরিদর্শন করে পুরো বিষয়টি মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। গোটা চর টিনের বেড়া দিয়ে ঘেরাও করে গাছ ও মাটি কাটা হয়েছে। সমতল করা হয়েছে জমি। এরই মধ্যে তিন একর জায়গায় বন কাটা হয়েছে। ১২টি বড় কেওড়া গাছ এবং কয়েক হাজার বাইন ও গেওয়া গাছ কাটা হয়েছে। কেওড়া গাছের ৪০টি টুকরো উদ্ধার করেছি আমরা। আমরা বাধা দেওয়ার পর কাজ বন্ধ রেখেছে জেলা প্রশাসন। আর যাতে বন কাটা না হয়, এই বিষয়ে জেলা প্রশাসককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, এটা তো জেলা প্রশাসনের খাস খতিয়ানভুক্ত সম্পত্তি, বন বিভাগের কোনো জায়গা নয়। এতদিন ধরে এখানের ৩৭টি পুকুর দখলদাররা দখল করে রাখে। মাটি, গাছ কেটে বিক্রি করল তাদের (বন বিভাগের) যোগসাজশে। তখন তারা কোথায় ছিল? এখন আমরা মাদকের আস্তানা গুঁড়িয়ে এখানে পর্যটকদের জন্য পাখির অভয়ারণ্য করে তুলছি। এখানে ১০ হাজার গাছ লাগানোর পরিকল্পনা হয়েছে। তারা যা বলছে, তা মিথ্যা।

তিনি বলেন, ‘আমরা বরং জায়গাটা দখলমুক্ত করে সেখানে যাতে নতুন করে কেউ গাছ কেটে বিক্রি করতে না পারে সেজন্য রাস্তা করছি। এতে কিছু গাছ মাটিচাপা পড়েছে। যেগুলো আবার উঠেও যাবে।’

তবে জেলা প্রশাসকের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আবদুর রহমান বলেন, ‘১৯৮৫ সালের গেজেট অনুযায়ী উপকূলীয় অঞ্চলে জেগে ওঠা চরভূমি ১৯২৭ সালের ৪ ধারায় সংরক্ষিত হবে। এখন উনি এটাকে কীভাবে খাস খতিয়ানভুক্ত বলছেন, তা উনিই ভালো জানবেন। তবে বন কাটতে হলে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হবে। কিন্তু সেটা না নিয়ে উনারা বন কেটেছেন।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা