× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

অটো রাইস মিলের দাপটে কাবু হাস্কিং মিল

ঠাকুরগাঁও সংবাদদাতা

প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৪:৩৮ পিএম

আপডেট : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২১:৫৭ পিএম

বন্ধ হয়ে পড়ে আছে হাস্কিং মিল। ছবি : প্রবা

বন্ধ হয়ে পড়ে আছে হাস্কিং মিল। ছবি : প্রবা

ঠাকুরগাঁওয়ে অটো রাইস মিলের দাপটে কাবু হয়ে পড়েছে হাস্কিং মিলগুলো। অটো রাইস মিলের চাল চিকন হয়। ফলে ভাত ভালো হয়। বাড়িতে ধান সেদ্ধ করা বা শুকানোর ঝামেলাও নেই। গৃহস্থরা এখন ধান বেচে অটো রাইস মিলের চাল কেনেন। এমন পরিস্থিতিতে কিছু হাস্কিং মিল টিকে আছে বছরে দুইবার সরকারের কাছে চাল বিক্রি করে।

রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) অনুসন্ধানে গিয়ে এমন খবর মিলেছে। হাস্কিং মিলগুলো সারা বছর বন্ধ থেকেও সরকারের কাছে চাল সরবরাহের সুযোগ পাচ্ছে—সম্প্রতি এমন অভিযোগ উঠলে এই অনুসন্ধান চালানো হয়।

জেলার নারগুন ইউনিয়নের হাস্কিং মিলের মালিক দেলোয়ার হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘তিনি বেশ কয়েক বছর মিল চালানোর পর এলাকায় অটো রাইস মিল চালু হয়। অটো রাইস মিলের চাল চিকন আর চকচক। এ জন্য বাজারে এর চাহিদা বেশি। আমাদের হাস্কিং মিলের চাল তেমন হয় না। চলে না বলে বন্ধ করে দিয়েছি।’

তার মতো অন্য আরও অনেক মিলমালিকের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া গেছে একই খবর।

তবে সালন্দর ইউনিয়নের আব্দুল জব্বার লিটনের মতো অনেকে এখনও টিকে আছেন। কত দিন টিকতে পারবেন তা নিয়ে তিনি নিজেই সংশয়ে রয়েছেন।

লিটন বলেন, ‘ঠাকুরগাঁওয়ে বেশির ভাগ হাস্কিং মিল বন্ধ। এর কারণ এই চালে তেমন ব্যবসা নেই। শহরে অটো মিল হওয়ায় হাস্কিং মিলের চাল মানুষজন নিতে চায় না। আমি এখনও ব্যবসাটা ধরে আছি। কিন্তু কত দিন থাকতে পারব কে জানে। প্রতিবছর দুইবার সরকারি গুদামে চাল সরবরাহ করার সুযোগ পাচ্ছি। এতে কিছুটা হলেও লাভ হয়। এভাবে চলছে।’

রুহিয়া রাজাগাঁও ইউনিয়নের চিত্রকুমার রায় ২০১১ সালে একটি হাস্কিং মিল চালু করেন। চার-পাঁচ বছর ভালো চলেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পরে অটো রাইস মিল হয়ে আমাদের চালের বাজার পড়ে গেছে। হাতেগোনা কয়েকটা হাস্কিং মিল চালু আছে এখনও।’

হাস্কিং মিল বন্ধ হওয়ার পরও অনেকে সরকারকে চাল সরবরাহের সুযোগ পাচ্ছেন বলে কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন।

ঠাকুরগাঁও হাস্কিং মিল মালিক সমিতির সভাপতি রাজু আহম্মদ বলেন, ‘আমরা চাই যাদের মিল চালু আছে, শুধু যেন তারাই সরকারকে চাল দেওয়ার সুযোগ পায়। তাহলে আমরা যারা এখনও টিকে আছি তারা টিকে থাকতে পারব।’

তবে যে জিনিসের ভোক্তা নেই সেই জিনিস টিকিয়ে রাখা যাবে এমন মনে করছেন না বিশেষজ্ঞরা।

অটো রাইস মিল সম্পর্কে জেলার মাছরাঙ্গা অটো রাইস মিলের মালিক আকতাব হোসেন বলেন, ‘শীত-বর্ষা যেকোনো মৌসুমে আমাদের মিলে চাল উৎপাদন করা হয়। আমরা বিভিন্ন পক্রিয়ায় চাল চিকন করে থাকি। মানুষ খাইলে যাতে শরীরের কোনো ক্ষতি না হয় সেভাবে পক্রিয়াজাত করা হয়। চিকন আর চকচক হয় বলে অটো রাইস মিলের চালের চাহিদা অনেক।’

প্রতিবছর তারা কয়েকশ টন চাল উৎপাদন করেন এবং সরকারকেও চাল সরবরাহ করেন বলে জানান।

তাছাড়া ভোক্তাদের বক্তব্যেও উঠে এসেছে তারাই অটো রাইস মিলের প্রাণ।

খালেক মিয়া নামে একজন কৃষক বলেন, আগে তারা বাড়িতে ধান সেদ্ধ করতেন। হাস্কিং মিলে ছাঁটাই করে চাল বানাতেন। এখন আর তারা বাড়িতে ধান সেদ্ধ করেন না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ধান সেদ্ধ করার পর শুকানোর সময় প্রায়ই ভিজে যায়। কখনও কখনও নষ্ট হয়। ওই জন্য রাইস মিলের চাল কেনেন তিনি। একই বক্তব্য অন্য গৃহস্থদেরও।

ঠাকুরগাঁও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মনিরুল ইসলাম বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে ৩২ হাজার ৭১৩ মেট্রিকটন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে ২২টি অটো রাইসমিল ও ৮৯৪টি হাস্কিং মিল মালিককে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সারা বছর মিলগুলো বন্ধ থাকে এটা সত্য। তবে মিল মালিকদের দাবি ২ মৌসুমে মিলগুলো চালু থাকে । তবে সারা বছর কীভাবে মিলগুলো চালু রাখা যায় সে বিষয়ে মিলারদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। 


প্রবা/ইউরি/টিকে

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা