× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

১০ মামলায় আটকা নদী খনন

যশোর প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০১ জুন ২০২৩ ১২:৪৩ পিএম

হাকর নদ দখল করে গড়ে উঠেছে দুইতলা, তিনতলা ভবন। বেনাপোল শহরের রেসিডেনশিয়াল এলাকায়। প্রবা ফটো

হাকর নদ দখল করে গড়ে উঠেছে দুইতলা, তিনতলা ভবন। বেনাপোল শহরের রেসিডেনশিয়াল এলাকায়। প্রবা ফটো

হাকর নদটি ভারতের পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে যশোরের শার্শা উপজেলার বেনাপোলের সাদিপুর গ্রাম হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। উপজেলার বড়আঁচড়া, ছোটআঁচড়া, ভবারবেড়, বেনাপোল ও নারায়ণপুর মৌজার মধ্য দিয়ে রঘুনাথপুরের কোদলা নদী হয়ে বেতনা নদীর সঙ্গে মিলে গেছে বর্তমানে মৃতপ্রায় নদটি। নদটির প্রাণ ফেরাতে গত জানুয়ারিতে খননকাজ শুরু হলেও কয়েকজন ব্যক্তি নিজেদের ধানি জমি দাবি করে আদালতে ১০টি মামলা ঠুকে দিলে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সিএস রেকর্ডে এটি নদ হিসেবেই অন্তর্ভুক্ত। দখলবাজরা এসএ রেকর্ডে ভুল বুঝিয়ে ব্যক্তিমালিকানার ধানি জমি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে নেন। সর্বশেষ আরএস রেকর্ডে তা পুকুর হিসেবে রেকর্ড করানো হয়। সীমান্ত শহর সম্প্রসারণ ও বেনাপোল এবং তার আশপাশের এলাকাগুলোতে আকস্মিক জমির দাম বাড়ার কারণে প্রভাবশালীরা এ নদ খেয়ে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বড়আঁচড়া মৌজার এক দাগে ৫ একর ৬০ শতক, ছোটআঁচড়া মৌজার এক দাগে ৮ একর ১৩ শতক, বেনাপোল মৌজার এক দাগে ১০ একর ৭২ শতক, ৩৭২ দাগে ৬ একর ৮৪ শতক, ৪১১ দাগে ৬ একর ৮৩ শতক, ভবারবেড় মৌজার এক দাগে ৪ একর ২৩ শতক, নারায়ণপুর মৌজার ২ একর ৫৫ শতক, সাদিপুর মৌজার ২৬২১ দাগে ৭ একর ২১ শতক, এলাকায় নদের কোনো চিহ্ন নেই। কোথাও কোথাও নদ দখল করে মাছের ঘের তৈরি করে রেখেছে ২০-৩০ বছর ধরে।

নদটি সংস্কারের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ২০২২ সালে ৫ কিলোমিটার খননের জন্য ৫ কোটি ৪৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। চলতি বছরের জানুয়ারিতে কাজ শুরু হয়। কিন্তু ১০ মামলার ফাঁদে পড়ে নদটির খননকাজ দুই মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। স্থানীয় ১০০ জন ব্যক্তি মিলে আদালতে মামলা করলে আদালত প্রকল্পের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। 

স্থানীয় সূত্রে জানায়, নদী খননের বিরোধিতা করে প্রথমে মামলা করেন, বেনাপোল নারায়ণপুর বিশ্বাস বাড়ির সাইফুর রহমানের ছেলে শাহিনুর, শাহাজান, সাইদুর, শফিকুর, হাফিজুর, আজিজুরসহ ১০ জন। এরপর আরও ১৩ জন একত্রিত হয়ে একটি এবং বড়আঁচড়ার তসলিমুর রহমান, মোকসেদুর রহমান, তাজদীদুর রহমানসহ ১৫ জন এক হয়ে আরও একটি মামলা দায়ের করেন। এভাবে দখলবাজরা কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে ১০টি মামলা দায়ের করে।

এলাকার একাধিক বয়স্ক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাকর নদের একসময় যৌবন ছিল। নদ দিয়ে পালতোলা নৌকা যশোর ঝিকরগাছা হয়ে বনগাঁ ও কলকাতা, হাওড়া পর্যন্ত যাতায়াত ছিল। কিন্তু কালের বিবর্তনে দখলবাজদের কবলে পড়ে সেটা এখন মৃত। যদিও দীর্ঘ বছর পর নদটি খনন কাজ শুরু করেছিল, তবে মামলাবাজদের কারণে সেটাও আটকে গেছে।

জানতে চাইলে বেনাপোল ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা কামাল হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, হাকর নদী কোনো দিনও ব্যক্তিমালিকানাধীন ছিল না। চাতুর ও স্বার্থান্বেষী মহল এসএ এবং আরএস রেকর্ড জরিপে কর্মচারীদের ভুল বুঝিয়ে, ভুল তথ্য দিয়ে এই নদ ব্যক্তিমালিকানায় রেকর্ড করিয়েছে। যে কারণে ওই অঞ্চলে নদের ঐতিহ্য, জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে।

বিষয়টি নিয়ে শার্শা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা আক্তার প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, নদীর স্রোতধারা অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশ নদী রক্ষা কমিশনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সিএস রেকর্ড অনুযায়ী ৫০ ফুট প্রশস্ত ও ৫ ফুট গভীরতা করে নদটি খননের কার্যক্রম নেওয়া হয়। কিন্তু দখলবাজরা খনন বাধাগ্রস্ত করতে আদালতে মামলা করে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। তারা অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান এ কর্মকর্তা।

যশোর পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী সাইদুর রহমান বলেন, দখলবাজদের মামলার কারণে আদালত খননকাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। মামলা নিষ্পত্তি হলে পুনরায় কাজ শুরু করা হবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা